আত্মার অবিনশ্বরতার কথা সব ধর্মেই বলা আছে। মৃত্যুর পর আমদের আত্মা কোথায় যায়? এ প্রশ্ন আমার না যুগে যুগে সব মানুষের, মানুষ মাত্রই আত্মার অধিকারী। যুক্তি তর্কের মাপকাঠীতে আত্মাকে বর্ননা করা যায় না। আত্মা একবার সৃষ্টি হলে তা আর বিনষ্ট হয়না। তাই আত্মা নিয়ে বৈজ্ঞানিক সমাজের কৌতুহল পিছিয়ে নাই।
বলা হয়ে থাকে জুন ১০, ১৮৫৩ সালে অ্যালান কারডেক নামে এক ফরাসী ব্যাক্তি সর্ব প্রথম আত্মাকে বৈজ্ঞানিক উপায়ে ডেকে আনার উপায় প্লানচেট আবিস্কার করেন।
কিভাবে প্লানচেট করবেন? একটা হার্ট শেপ কাঠের তিন মাথায় তিনটা হুইল থাকবে যেন বোর্ডটা গড়িয়ে চলতে পারে। বোর্ডের মাথায় একটা গর্ত থাকে যেখানে একটা পেন্সিল থাকবে একে ওইজ়া বোর্ডও বলা হয়। আর মিডিয়াম তার হাত বোর্ডের ওপর রেখে ধ্যান মগ্ন হলে আত্মা মি্ডিয়ামের ওপর ভর করে আর ওইজা বোর্ড গড়িয়ে চলতে থাকে বোর্ডের নীচে কাগজ়ে ফুটে ওঠে লেখা
আত্মা নিয়ে বৈজ্ঞানিক সমাজের কৌতুহল ও পিছিয়ে থাকেনি তাই বিভিন্ন সময় ইউরোপ আমেরিকায় বিভিন্ন দেশে গঠিত হয়েছিল আত্মিক অনুসন্ধান কমিটি। ১৮৮২ সালে লন্ডনে যে আত্মিক সমিতি গঠিত হয়েছিল তার সভাপতি ছিলেন কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত প্রফেসর হেনরি সি জুইক, তার সহকারীদের মধ্যে ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আর্থার জ়ে ব্যালফুর।
ভারতীয় আর্যরা আত্মা সন্মন্ধ্যে ব্যাপক আলোচনা করেছে কিন্তু তা পাশ্চাত্যের মত বিজ্ঞানমনস্ক দৃষ্টি ভঙ্গি নিয়ে না, আধ্যাতিক চিন্তার মধ্যেই ভারতীয়রা তাদের চিন্তা সীমাবদ্ধ রেখেছিল। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন সবাই প্লানচেট করতেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যাদের প্লানচেটের মাধ্যমে আনতেন তাদের মধ্যে ছিল তার কনিষ্ঠ পূত্র শমিন্দ্রনাথ, জোষ্ঠ কন্যা মাধুরীলতা, সত্যেন্দ্রনাথ প্রমূখ।
রবীন্দ্রনাথের প্রিয় মিডিয়াম ছিলেন উমা দেবী। উমাদেবীর উপর ভর করেই পরলোকের আত্মারা এ ধরায় আসতেন। কলমের খোচায় লিখে যেতেন পরোলৌকিক আত্মাদের বিভিন্ন কথা। ভীষন ভালবাসতেন রবীন্দ্রনাথ শমীন্দ্রনাথ কে। তাই বার বার ডাকতেন শমীন্দ্রর আত্মাকে।
ইংল্যান্ড এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনেক আগেই পরলোক চর্চা শুরু করে। আধ্যাতিক ভাবে অনেক আগে থেকে ভারতবর্ষে পরোলৌকিক চর্চা হয় কিন্তু বিজ্ঞান সন্মত ভাবে শুরু হয় ১৮৮০ সালে। নাম ছিল ‘ইউনাইটেড অ্যাসোসিয়েসন অভ স্পিরিচুয়ালিষ্ট’। জ়ে জ়ে মিউজেন্স এর সভাপতি ছিলেন আর সম্পাদক ছিলেন ইন্ডিয়া মিররের সম্পাদক নরেন্দ্র সেন।
যতদূর জ়ানা যায় বাংলাদেশে ২০০৪ সালে চট্টগ্রামে ‘আত্মিক অনুসন্ধান সমিতি’ গঠিত হয়, এর প্রসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডঃ এ্যান্ড্রু অলক দেওয়ারী।