আমার এক বন্ধু আছে যে মনে প্রানে বিশ্বাস করে এ জগতে নাকি বাস্তব অবাস্তব বলে কিছু নাই। স্থান কাল পাত্র ভেদে বাস্তব হতে পারে অবাস্তব। অবাস্তব হতে পারে বাস্তব। কি ওর কথা বিশ্বাস হয় না? আচ্ছা চলুন তা হলে ডাচ শিল্পী মরিটাস কনে’লিয়াস এশার চিত্রকমে'র জগৎ এ।
এশার এর জন্ম (১৭ জুন ১৮৯৮ – ২৭ মাচ’ ১৯৭২) নেদারল্যান্ড এর লিউনওয়াডে’ন এ। ছোটোবেলা থেকেই ছবির দিকে টান। ভতি' হন হালে'ম স্কুল আভ আকি’টেকচার অ্যান্ড ডেকোরেটিভ আট'স এ। পড়া শেষ করে ১৯২৩ থেকে ১৯৩৫ পয’ন্ত ইতালিতে থাকেন। ভীষন ভাবে অনুপ্রানিত হন ইতালীয় গ্রাম্য জীবন দ্বারা। ইতালী থেকে চলে যান সুইযারল্যান্ড, সেখানে কবছর কাটিয়ে চলে আসেন স্বদেশে। ওখানেই থাকেন আমৃত্যু।এই সময় বাস্তব জীবন থেকে ছবির ঊপাদান সংগ্রহের জোক চলে যায় এশার এর, শুরু হয় বল্গাহীন কল্পনা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে পরাবাস্তব ছবি আকা। গনিত আর জ্যামিতি কাজে লাগিয়ে হয়ে ওঠেন পরাবাস্তব এর শিল্পী।
ছবির ফিগার আর গ্রাউন্ড সন্মধ্যে একটু জেনে নিন। যখন কোন কিছু আকা বা লেখা হয় তখন সেটা হয় ফিগার আর চারপাশের ফাকা জায়গা হয় গ্রাঊন্ড। সাধারনত আমরা গ্রাউন্ড নিয়ে ভাবি না ফিগারটাই দেখি।
কিন্ত এশার অসামান্য বৈশিষ্ট হল ফিগার আর গ্রাউন্ড এক করে ফেলা। এখানেই এশার শুধু এক নিপুন শিল্পী নন দক্ষ এক গানিতবিদ, দাশ’নিক এবং সবো’পরি অবাস্তব কে বাস্তব এ রুপ দেয়ার কাজে দক্ষ অদ্বিতীয় এক শিল্পী
চলুন দেখি এশার এর কিছু ছবি
ডে অ্যান্ড নাইট ১৯৩৮
উডকাটের এই ছবির দিকে তাকালে মনে হবে কেউ যেন উপর থেকে নীচের দিকে তাকিয়ে দেখছে, নীছে দেখা যাচ্ছে চাষের জমি, কিন্ত সেই জমি গুলো সাদা কালো অবিশ্বাস্য মিশেলে পরিনত হয়েছে সাদা কালো পাথি।
ফিশ অ্যান্ড ওয়েভ ১৯৬৩
জলের ঢেউ গুলো কি অবিশ্বাস্য নিপুনতায় কখনো সাদা আর কখনও কালো মাছ এ রুপান্তরিত হয়েছে
গ্যালারি ১৯৪৬
কাল্পনিক এক জগৎ এ ভারী আজব এক কাজ এই গ্যালারি। নিজেই দেখুন না।
রিলেটিভিটি ১৯৫৩
এই ছবি তিনটি ভিন্নপ্রেক্ষিতে আকা হয়। প্রেক্ষিত তিনটি ভাগ করার সহজ উপায় হল ছবির ষোলটি মানুষ কে তিন ভাগে ভাগ করা। সোজা হয়ে দাড়ানো মানুষ, বাঁদিকে হেলানো মানুষ, ডান দিকে হেলানো মানুষ। যেমন একদম নীচের সোজা দাঁড়ানো মানুষটির প্রেক্ষিতে ছবিটি বাস্তব জগৎ এর কিন্ত একটু সিড়ি ভেংগে উপরে উঠে গেলেই সে পৌছে যাচ্ছে অবাস্তব জগতে। খেয়াল করলে দেখা যাবে নীচের তিন শ্রেনীর জন্যই নিজের জগৎ সত্যি বাকী দুদলের জগত তার জন্য অবাস্তব। মন দিয়ে খেয়াল করুন।
ড্রাগন ১৯৫২
ড্রাগন শরীর এর শেষ কোথায়, শুরু কোথায়? চোখে দেখেও জবাব নেই।
ড্রইং হ্যান্ডস ১৯৪৮
দুটি হাত যারা একই সময় একে অন্যাকে আকছে। বলুনতো কে কাকে আকছে? আমি পারিনি বলতে।
ওয়াটার ফল ১৯৬১
একটু মন দিয়ে দেখলেই দেখা যাবে ঝরনার পানি মধ্যাকষ'ন কে উপেক্ষা করে নীচ থেকে ঊপরে উঠছে, আবার নামছে, উঠছে নামছে, উঠছে নামছে।
রেপ্টাইলস ১৯৪৩
দ্বিমাত্রিক ছবিকে কি ভাবে ত্রিমাত্রিক রুপান্তরিত করতে হয় এশার ভাল ভাবেই জানতেন। কি বন’না দিতে হবে এই ছবির, না দিলাম না। নিজেই ভাবুন না হয় আমার মত।
সিমেট্রি
দেবদুত না শয়তান দেখছেন
এশারের আরো ছবি দেখতে ইচ্ছে করে? আরে আপনার ইন্টারনেট আছে না? দিন না সাচ'। ওহহ এশারের ইংরেজী বানান টাই তো বলালম না। নিন লিখুন Maurits Cornelis Escher. এশারের পরাবাস্তব জগৎ এ আপনাকে স্বাগতম।
আচ্ছা ওয়েব সাইটাই দিয়ে দিলাম
http://www.tumblr.com/tagged/mc escher
বত'মান অবস্থানঃ দক্ষিন চীন সাগর
রিগঃ ENSCO-53