প্রথম পর্ব
৮.
সাজ্জাদের বাড়িয়ে দেওয়া হাত ধরে বসে আছে তিতলী। তিতলী নতুন হাত দেখা শিখেছে। নতুন শিক্ষাটা একেকদিন একেক জনের পর অ্যাপ্লাই করা হয়। আজকের গিনিপিগ সাজ্জাদ ভাই।
"সাজ্জাদ ভাই, দেখতে পাচ্ছেন, এই যে এটা হচ্ছে হার্ট লাইন, আর এটা লাইফ লাইন। সেকী! আপনার হার্ট লাইন তো বেশ ত্যাঁড়াব্যাঁকা!”
সাজ্জাদ মোটেই তিতলীর কথা শুনছেনা। সে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তিতলীর দিকে তাকিয়ে আছে। তিতলীকে সাজ্জাদ দেখছে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে। তিতলী আজকে পড়েছে অফহোয়াইট রঙের একটা কামিজ। মাথায় যথারীতি লাল স্কার্ফ। কয়েকটা চুল স্কার্ফের ফাঁক দিয়ে বের হয়ে আছে। মানুষ এত সুন্দর হয় কি করে? তিতলীকে দেখে মনে হচ্ছে সদ্য ফোঁটা গোলাপ ফুলের কুঁড়ি।
তিতলী নামের এই বিস্ময় বালিকার সাথে সাজ্জাদের পরিচয় আজ থেকে প্রায় একবছর আগে, বিরাট এক দূর্ঘটনার মধ্য দিয়ে। । সাজ্জাদ তখন ঢাকা ভার্সিটিতে ফিজিক্সে পড়ে, থার্ড ইয়ারে। ফিজিক্সের অধ্যাপক ডঃ জামান আহমদ সাজ্জাদকে খুবই স্নেহ করেন। সেই স্নেহের বদৌলতেই সাজ্জাদকে উনি তিন-চার মাস পর পর পাঁচশ’ টাকা হাতে গুঁজে দিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলেন, “তোমার বাড়ির অবস্থা তো আমি জানি, লজ্জা করোনা।" সাজ্জাদ প্রথম দিকে ভীষণ আপত্তি করলেও পরের দিকে তেমন কিছু বলতনা। কারণ, স্যারের দেওয়া টাকাটুকু দিয়ে তার হাতখরচ মোটামুটি চলে যায়। যার ফলে টিউশনির টাকাটা গ্রামের বাড়িতে মা’কে পাঠানো যায়। সাজ্জাদের সে মাসে ভয়াবহ দুঃসময়। দুইটা টিউশনির বেতন পাওয়া যায়নি। হাত একেবারে খালি। এদিকে সামনে ছোট বোনের বিয়ে। বাড়িতে কিছু টাকা পাঠানো দরকার। অনেকটা বাধ্য হয়েই সাজ্জাদ ফোন করেছিল ডঃ জামান আহমদের কাছে। স্যারের কাছে যদি কিছু টাকা ধার পাওয়া যায় সেই আশায়। স্যারের ফোন ধরেছিল তিতলী। ডঃ জামানের একমাত্র কন্যা।
“হ্যালো স্লামালিকুম।"
“ওয়াইকুম আসসালাম। স্যারকে কি একটু দেওয়া যাবে? আমি স্যারের ষ্টুডেন্ট। আমার নাম সাজ্জাদ কাদের।"
“আব্বু তো বাসায় নেই। আশুলিয়া গিয়েছেন। ভুলে ফোন বাসায় রেখে গেছেন। আপনি বরং দুইঘন্টা পরে ফোন করেন।"
সাজ্জাদ হতভম্ব হয়ে ফোন রেখে দিয়েছিল। মানুষের কন্ঠস্বর এত মিষ্টি হয় কি করে? কি অপূর্ব একটা ব্যাপার! সাজ্জাদ তিতলীর বেঁধে দেওয়া দু’ঘন্টা সময়ের আগেই ফোন করেছিল আরো চারবার। মিষ্টি কন্ঠস্বর শোনার লোভে। চতুর্থবার ফোন করার পর তিতলী বিরক্ত হয়ে বলেছিল,“আপনার আর ফোন করার দরকার নাই। আব্বু আসলে আমি তাঁকে বলব।"
সাজ্জাদ আর ফোন করেনি। সন্ধ্যার দিকে তিতলী-ই সাজ্জাদের নাম্বারে ফোন করেছিল। ফোঁপাতে ফোঁপাতে বলেছিল, “ভাই, আব্বু এক্সিডেন্ট করেছে আশুলিয়া থেকে ফেরার পথে। ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। এখন পপুলারে আছে। ডাক্তার বলেছে আব্বুর জন্য ‘এবি পজিটিভ’ ব্লাড লাগবে। আপনি তো আব্বুর ষ্টুডেন্ট। আরো ক’জন ষ্টুডেন্টকে একটু খবর দেন না ভাই! কারো কাছে যদি ব্লাড পাওয়া যায়। আমি আমার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুদেরকেও বলেছি। আম্মুকে জানাইনি এখনো। আম্মুর হার্টে সমস্যা আছে। আম্মু আছে নানা বাড়িতে।।”
সাজ্জাদ ব্যস্ত ভঙ্গিতে হড়বড় করে বলেছিল, “আপনি কোন চিন্তা করবেননা। চিন্তার কিছু নেই। আমি এক্ষুণি পপুলারে আসছি। ব্লাডের জোগাড় হয়ে যাবে।"
পপুলারের ৩০২ নাম্বার কেবিনের সামনে দাঁড়িয়ে একটা মেয়ে আকুল হয়ে কাঁদছে। সাজ্জাদ এবং তার বন্ধুরা মেয়েটাকে ঘিরে দাঁড়ানো। মেয়েটার মাথায় একটা লাল স্কার্ফ। সেই মেয়েটাই তিতলী। তিতলী কাঁদতে কাঁদতে সাজ্জাদের দিকে তাকিয়ে বলেছিল, “ভাইয়া, আব্বু কি মরে যাবে? আমার আব্বু কি মরে যাবে?”
সাজ্জাদ তিতলীর মাথায় হাত রেখে দৃঢ় গলায় বলেছিল, “অবশ্য-ই না। স্যার নিশ্চয়-ই বেঁচে থাকবেন।"
সাজ্জাদের ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে ডঃ জামান মারা গেলেন অপারেশন থিয়েটারে। ভোরের আলো ফুটতে তখনো অনেকটাই বাকি।
৯.
তৃণা বসে আছে হায়দার আলী সাহেবের বাসার ড্রইংরুমে। হায়দার আলী সাহেব একজন বড় শিল্পপতি। উনার আরেকটা পরিচয় আছে। তিনি তৃণার সৎ বাবা। তৃণা ভেবেছিল সে আজকে সাজ্জাদের সাথে দেখা করতে যাবে। কিন্তু পরে সেই প্ল্যান বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়েছে। তৃণা ঢাকায় এসেছে, এই খবর পেয়েও সাজ্জাদ একবারও ফোন করেনি। সাজ্জাদ নিজে ফোন করলে তখন নাহয় দেখা করে আসা যাবে। লং ডিসট্যান্স সম্পর্কগুলোর একটা বড় সমস্যা হচ্ছে কয়েকদিন পর পর ইগো প্রবলেম বিশালাকৃতি ধারণ করে।
তৃণা তার মা’কে আধাঘন্টা আগে ফোন করে বলেছে, “মা আমি সায়েন্স ল্যাবের কাছে। তোমার বাসায় আসব আজকে।" তৃণার মা জাহানারা এই আধাঘন্টার মধ্যে খাবার-টাবার বানিয়ে একাকার করে ফেলেছেন। ড্রইংরুমের বিশাল টেবিলে পাঁপড়, ক্ষীর, আইসক্রীম, স্যান্ডুইচ, ফ্রুট সালাদ, নুডলস, কোক আর হলুদ ভাতের মত কি যেন একটা। খুব সম্ভবত জর্দা পোলাও।
“মা, আমি কিছুই খাবনা। এত খাবার দেখে ক্ষিধে মরে গেছে। আর আমি সকালে মামার বাসা থেকে নাস্তা করে এসেছি। মামী পরোটা আর ডিম ভাজি করেছিল।"
“একটু কিছু খাও মামণি। তোমার তো নুডলস ভাল লাগে।"
“আচ্ছা অল্প নুডলস দাও।"
“তুমি কালো হয়ে গেছ, মামণি। পড়াশোনার কি খুব চাপ? হলে তো খাওয়ার ও খুব কষ্ট।"
তৃণা মাথা নাড়তে নাড়তে মনে মনে বলল, “আমার জন্য যখন তোমার এত দরদ তখন তুমি বুড়া-হাবড়া হায়দার আলীকে বিয়ে করছিলা কেন?” মনের কথাটা মুখ ফুটে বলতে পারলে তৃণার ভাল লাগত। কিন্তু মায়ের সাথে তৃণাকে বেশিরভাগ কথাই বলতে হয় মনে মনে।
“মা আমি চলে যাব একটু পর। বাবু বাসায় নাই?”
“আছে, বাবু আছে। এখনো ঘুম থেকে উঠেনি। তুমি দুপুরে ভাত খেয়ে যেও, মামণি।"
“না ভাত খাবনা। গা ম্যাজম্যাজ করছে। বৃষ্টিতে ভিজেছি তো! তুমি বাবুকে ডেকে দাও।"
বাবু ঘুমঘুম চোখে ড্রইংরুমের স্লাইডিং গ্লাস ধরে দাঁড়িয়ে আছে। তার ঠিক বিশ্বাস হচ্ছেনা তৃ’পু এসেছে। বাবু দুই সেকেন্ড মূর্তির মত দাঁড়িয়ে থেকে প্রায় দৌঁড়ে গিয়ে ঝাপিয়ে পড়ল তৃণার কোলে।
“আরে দাঁড়া, দাঁড়া। এগার বছরের বুড়াকে আমি কোলে নিতে পারব নাকি? ব্যাগ থেকে ক্যাডবেরীটা বের করতে দে। স্কুল ছিল না আজকে?”
বাবু হিহি করে হাসতে হাসতে বলল, “আজকে তো শনিবার তৃ’পু। স্কুল বন্ধ।" বাবুর মনে এখন ঈদের আনন্দ। তৃ’পু যেদিন আসে, আম্মু তাকে সেদিন একটুও বকা দেয়না। সে আজকে পড়তে না বসলেও কোন সমস্যা নাই, গোসল না করলেও সমস্যা নাই। সে আজকে তৃ’পুর সাথে কম্পিউটারে অনেকক্ষণ গেম খেলতে পারবে।
জাহানারা ড্রয়িংরুমে তৃণা, বাবু কাউকে দেখতে না পেয়ে বাবুর ঘরে ঢুকলেন। তৃণা একটা কাগজে কার্টুন আঁকছে। চারপাশে রংপেন্সিল ছড়ানো। বাবু বসে আছে তৃণার গা ঘেঁসে। কে বলবে এরা আপন ভাইবোন না? জাহানারা আলীর চোখ গভীর মমতায় আর্দ্র হল। তৃণার জন্য দুপুরে রান্নাবান্নার ব্যবস্থা করতে হবে। সবচে’ ভাল হয় মোরগ-পোলাও করলে। তৃণা মোরগ-পোলাও খেতে ভালোবাসে। রান্না করার জন্য হাতে প্রচুর সময় পাওয়া যাবে। আজকে তৃণা বিকালের আগে বাবুর হাত থেকে ছাড়া পাবেনা। জাহানারা দীর্ঘশ্বাস গোপন করলেন। তৃণাকে দেখে বাবু আনন্দে নাচানানাচি করতে পারে, তিনি পারেননা। বড় মানুষ হওয়া বিশাল সমস্যার ব্যাপার। যখন-তখন হাসা যায়না, যখন-তখন কাঁদা যায়না।
তৃণা মোরগ-পোলাও খেয়ে হায়দার আলী সাহেবের বাসা থেকে বের হল বিকেল সোয়া তিনটার দিকে। তখন আকাশে চৈত্রের প্রখর রোদ।
১০.
“হ্যালো, হ্যালো”
সাজ্জাদ ফোনটা কিছুক্ষণ কানে চেপে ধরে থাকল। তৃণা ফোন ধরে জলতরঙ্গের মত রিনিঝিনি শব্দে হ্যালো বলে। রিনিঝিনির ঝংকার শেষ হওয়ার পরে সাজ্জাদ সবসময় কথা বলে।
“জ্বী, মিস হরিণী, কেমন আছেন?”
“ভাল আছি। আমি যেদিন ঢাকাতে এসেছি, সেদিন-ই তোমাকে জানিয়েছি। আর এতদিন পরে তোমার ফোন করার সময় হল?”
“এতদিন পরে কই? তুই ঢাকায় আসার চারদিন পরে ফোন করলাম। তুই চাইলে ঘণ্টা, মিনিট, সেকেন্ড, মিলিসেকেন্ডের হিসাব বের করে দিতে পারব।"
“আচ্ছা, থাক। খেকশিয়ালের মত করে আর হাসতে হবেনা। ঢাকা ভার্সিটিতে আসলে তোমাকে পাওয়া যাবে?”
“আলবৎ পাওয়া যাবে। কয়েকদিন পর দেখবি আমি তোষক-বালিশ নিয়ে ঢাকা ভার্সিটির ফুটপাতে শুয়ে আছি। পাশে একটা থালাও থাকবে।"
তৃণা হেসে ফেলল বালিকার মত খিলখিল করে। হাসতে হাসতেই বলল, “কালকে আমি একবার যাব তোমার কাছে। সময় হবে জনাবের?"
“আজকেই চলে আয় না। আজিমপুর থেকে ভার্সিটি আর কত দূরে? দশ মিনিট লাগবে।"
“নাহ! আজকে বিকালে নীতুকে একটু পড়া দেখিয়ে দেব। শোন, তোমার তিতলী বেগম কেমন আছে?”
“আছে ভাল-ই। তুই আয় কালকে। তিতলীর সাথে তোর পরিচয় করিয়ে দেব। এরকম রূপবতী মেয়ে তুই জীবনে আর কখনো দেখতে পাবিনা।"
তৃণা ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলল। সে দীর্ঘ চার বছর ধরে সাজ্জাদকে চেনে। কাজেই সে ভাল করে জানে রূপবতী মেয়েদের প্রতি সাজ্জাদের আলাদা একটা আকর্ষণ আছে। তৃণা কোন রূপবতী মেয়ে না। গায়ের রঙ কালো, চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা, নাক থ্যাবড়ানো। কাজেই তার প্রতি সাজ্জাদের আকর্ষণ না থাকাই স্বাভাবিক। অথচ গভীর রাতে হঠাৎ যখন সাজ্জাদ ফোন করে বলে, “মিস হরিণী! আপনি না থাকলে আমার যে কি হত! আমি তো অথই জলে ভেসে যেতাম!” তখন সেই অমোঘ আবেগের ভাষাকে উপেক্ষা করার ক্ষমতা তৃণার থাকেনা।
অনেক সময় দুটো মানুষ পরস্পরকে মুখে “ভালোবাসি” না বলেও বহু কথামালার ফাঁকে নীরব ভাষায় বলে ফেলে, “ভালোবাসি”! সেই নীরব ভালোবাসার শিকড় বহুদূর পর্যন্ত ছড়ানো থাকে। খুব সহজে শিকড়টা উপড়ে ফেলা যায়না।
১১.
ঘড়ির কাঁটা রাত দুইটার ঘর ছুঁয়েছে। নীতু জেগে আছে তখনো। একবার আড়চোখে সে তৃণা আপার দিকে তাকাল। আপা গভীর ঘুমে। নীতু বালিশের নীচ থেকে মোবাইলটা বের করে ফেসবুকে লগিন করল। রাসেলের কি কোন মেসেজ আছে? না, নাই। আজকে রাসেলের কোন স্ট্যাটাস ও নাই। রাসেল ঘন ঘন স্ট্যাটাস দেওয়া পছন্দ করেনা। নীতু গভীর মনোযোগ দিয়ে রাসেলের ওয়াল পোষ্টগুলো পড়ছে। কে কোথায় কি কমেন্ট করল, কে রাসেলের কোন পোষ্টে লাইক দিল-সব নীতুর জানা। তবু বারবার দেখতে ইচ্ছা করে। রাসেলের ছবিও বারবার দেখতে ইচ্ছা করে। এরকম কেন হয় নীতু জানেনা। নীতু রাসেলের ফেসবুক ওয়ালে কাঁপা কাঁপা হাতে লিখল, “ভালোবাসার অর্থ জানিনা, জানিনা ভ্রান্তি কিংবা ঠিক...তোমার-আমার মাঝের দেয়াল বৈশাখী ঝড় উড়িয়ে নিক!”
“উঁহু, নীতু, মোবাইলটা বন্ধ কর। চোখে আলো লাগছে।"
“একি সর্বনাশ! তৃণা আপা ঘুমায়নি এখনো!” আতঙ্কে নীতুর হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেল। আপা যদি কিছু বুঝে ফেলে?
নীতুর আতঙ্কিত হওয়ার মত কিছু হয়নি। কারণ তৃণা তখন ঘুমের মধ্যে মজার একটা স্বপ্ন দেখছে। সে, বাবু আর মা অনেক দূরে হেঁটে হেঁটে কোথায় যেন যাচ্ছে। চারপাশে ঘন বন। বাবু বলছে, “আমাকে কোলে নাও তৃ’পু, আমাকে কোলে নাও। আমার পায়ে ব্যথা করে।“ এখন আর তৃনার পাশে মা’কে দেখা যাচ্ছেনা। মায়ের জায়গায় সাজ্জাদ হাঁটছে তৃণার পাশে। হঠাৎ তৃনা পেছন ফেরল। মা একটা চোরাবালির মধ্যে আটকে গেছে। মা চিৎকার করে বলছে, “মামনি তৃণা, আমাকে রেখে যেওনা।“ মায়ের চিৎকার ঢেকে গেল একটা গানের সুরে। গানের সুরটা তৃণার খুব চেনা।
“খেলাঘর বাঁধতে লেগেছি, আমার মনের মন্দিরে...
কত রাত তাই তো জেগেছি, বলব কি তোরে?”
নীতু জেগে ছিল সারারাত। হাতে মুঠোফোন। তার মনের মন্দিরে রাসেল নামের মায়াময় ছেলেটির জন্য ভালোবাসা।
(চলবে)
তৃতীয় পর্ব