১৭ই জানুয়ারী ১৯৬২ সালে জন্ম নেওয়া কানাডিয়ান এই অভিনেতার জন্মদিন চলে গেল ক'দিন আগেই!
নব্বুই দশকের কিংবদন্তী কমেডিয়ান জিম ক্যারীর সাম্প্রতিক মুভি গেল বছর জুনের ১৭তারিখে রিলিজ হল, Mr. Poppers Penguin.
আইএমডিবি রেটিং দেখে এই মুভিটির কিছুই বোঝা যাবেনা।
কোন মুভি ডাউনলোড করার আগে রেটিং চেক করে নেওয়াটা আমার অভ্যাস বলা চলে। তাই স্বভাবতই স্বল্প রেটিং দেখে হতাশ হয়েছিলাম।
কিন্তু প্রিয় অভিনেতা বলে কথা! যাকে ভালবাসা যায়, তার খারাপ-ভাল সবটা মিলিয়েই ভালবাসা যায়।
তাই বাংলাদেশ ভাল খেললে ক্রিকেটারদের বন্দনায় মুখে ফেনা তুলে ফেলবো, আর খারাপ খেললে তিরস্কারের দুয়োধ্বনিতে উড়িয়ে দিবো এমন টা আমি নই।
ধুচ্ছাই! লিখছিলাম মুভিটা নিয়ে, এর মধ্যে চলে আসলো ক্রিকেট!
হু! যা বলছিলাম। অল্প রেটিং দেখে হতাশ হয়েও মুভিটা ডাউনলোড করে ফেললাম। তারপরের এক ঘন্টা পয়ত্রিশ মিনিট হাঁসতে-হাঁসতে আর কাঁদতে-কাঁদতে ক্যামনে যে কেটে গেল টের ই পেলাম নাহ!
এ্যান্টার্কটিকার পেঙ্গুইন নিয়ে পুরাই তেলেসমাতি কান্ড করা হয়েছে মুভিতে!
আধুনিক ফ্লাটবাড়িতে দারুন কিউট সব পেঙ্গুইনদের কান্ডকারখানা দেখে চোখ কপালে উঠে যাবে আপনার! আর মুখে মাছি ঢুকতে থাকবে মাঝে মাঝে!
হয়ত আফসোস ও করবেন ইসসসস! যদি আমার ও একটা পেঙ্গুইন থাকতো!
মুভিটি Richard and Florence Atwater এর Newbery Award প্রাপ্ত শিশুতোষ বই Mr. Poppers Penguin উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে।
স্টোরিলাইন তেমন আহামরি কিছু নাহ। প্রেডিক্টেবল কিন্তু তারপর ও দারুন উপভোগ্য প্রতিটা মুহুর্ত!
আপনি যদি সিরিয়াস টাইপ মুভিবোদ্ধা বা সমালোচক হয়ে থাকেন তাহলে হয়ত আপনাকে মুভিটা হতাশ করতে পারে।
তবে যদি নির্মল আনন্দ আর বিনোদন পেতে চান, নির্দ্বিধায় দেখতে পারেন!
এ্যাডভেঞ্চার পাগল বাবার সাথে পপারের যোগাযোগ খুব কম ই হত। বিশ্বভ্রমণের নেশায় মত্ত বাবার সাথে যোগাযোগটা এক সময় একেবারেই ক্ষীন হয়ে গেল।
বাবার সাথে যোগাযোগ বঞ্চিত হয়ে এভাবেই সে বড় হয়ে উঠলো একজন সদালাপী এবং বিনয়ী কিন্তু আন্তরিকতাবর্জিত একজন সফল ব্যবসায়ী হিসাবে।
বাবার মত সেও কাজ পাগল হল। যার ফলে তার নিজের সন্তানদের সাথে তার দূরত্ব সৃষ্টি হল। ক্যারিয়ার যতটা উর্ধ্বমুখী হয় পরিবারের সাথে তার সম্পর্কের ততটাই অবনতি হতে থাকে।
একটা পর্যায়ে স্ত্রী ছেড়ে চলে গেল পপারকে, সাথে সন্তানরাও। এখন মাঝে মাঝে ভিজিট করতে আসে পপারকে দেখতে।
তাতেও ভ্রুক্ষেপ করার মত সময় নেই পপারের। ক্যারিয়ারে নিজের অবস্থান সিকিউরড করতে এক বুড়িকে পটাতে হবে তার যক্ষের ধন ট্যাভার্ন (সরাইখানা) বেচতে। কিন্তু সে বুড়ি কারো কাছেই বেচবেনা।
এর ই মাঝে একদিন হঠাত একটা পার্সেল আসে পপারের বাসায়।
খুলতেই বেরিয়ে আসে জীবন্ত পেঙ্গুইন! বাবা গিফট পাঠিয়েছে তাকে!
ওলট পালট হয়ে যায় পপারের সমস্ত পৃথিবী!
ছয়টি পেঙ্গুইন দাপিয়ে-কাপিয়ে-লাফিয়ে-ঝাপিয়ে লঙ্কাকান্ড ঘটিয়ে দেয় পপারের সাজানো ফ্লাটে!
ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত পপার তাই এ্যানিম্যাল কন্ট্রোল কে ডেকে পেঙ্গুইন গুলোকে তাড়ানোর চেষ্টা সহ আরো নানাভাবে ব্যর্থ হয়।
এর মাঝে বাচ্চারা ভিজিটে এসে পেঙ্গুইন গুলোর প্রেমে পড়ে যায়। তারপর পেঙ্গুইন গুলো হয়ে ওঠে পরিবারের ই একটা অংশ।
এদিকে নিউইয়র্ক জু এর একজন অফিসিয়াল খবর পায় পপার অবৈধভাবে পেঙ্গুইন পুষছে। পেঙ্গুইনদের জন্য আদর্শ পরিবেশ এই ফ্লাটে নেই এই অভিযোগ তুলে সে জোর করে পপারের কাছ থেকে পেঙ্গুইন গুলোকে নেবার চেষ্টা করে।
এদিকে মহানন্দে একটা পেঙ্গুইন ডিম ও পাড়ে!
মা পেঙ্গুইন টির মাঝে পপার তার হারানো পরিবারের প্রতিচ্ছবি দেখতে পায়...
পেঙ্গুইনদের জন্য বাসযোগ্য করতে পপার বরফ দিয়ে সমস্ত ফ্লাট ভরে ফেলে।
ক্যারিয়ারের কথা ভুলে পপার সময় কাটাতে থাকে পেঙ্গুইনগুলোর সাথে।
ওদের লালন-পালন আর দেখভাল করাটাই হয়ে ওঠে পপারের ধ্যান-জ্ঞান।
ক্যারিয়ারের প্রতি পপারের উদাসীনতা দেখে বস তাকে চাকুরীচ্যুত করে।
এখন কি করবে পপার!
একদিকে ক্যারিয়ার, হাতের মুঠো থেকে ক্রমেই দূরে সরে যাওয়া স্ত্রী-সন্তান, আরেক দিকে জীবনকে দূর্বিসহ করে তোলা এই ছ’টি পেঙ্গুইন...
চাকুরী বাচাতে পেঙ্গুইন গুলোকে ত্যাগ করবে? বুড়ির কাছ থেকে আদৌ কি তার ট্যাভার্ন কেনা হবে?? পরিবার নাকি ক্যারিয়ার এর মুল্য বেশি সেটা কি সে কখনো উপলব্ধি করবে???
উপরোক্ত প্রশ্নগুলোই শুধু নয়, এরকম আরো অনেক প্রশ্নের উত্তর জানতে দেখেই ফেলুন না মুভিটা! পুরোপুরি উপভোগ করবেন কথা দিলাম!
ডাউনলোড করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।
ফাইল সাইজঃ ৬০০এমবি/এমকেভি/ব্রুরে রিপ