আমি যাকে ভালোবাসি; সে ভালোবাসে তার প্রাক্তন প্রেমিককে।
সবুজ ঘাস মাড়িয়ে যে চলে গেছে--
এক বৈশাখে বকুলের লোভে...!
তার প্রাক্তন প্রেমিক দীপ্ত পুরুষ, নারী সঙ্গী লাভে সিদ্ধহস্ত।
অন্ধকারে যে হয়ে উঠে কৃষ্ণ আর আলোতে বিলায় বুদ্ধের বাণী!
বিলেতি মদে নিজেকে চুবিয়ে মধ্যরাতে ধরে বালিকা শরীর।
উনুনের তাপে সেঁকে নেয় একজীবন।
আমি তার তুলনায় নগন্য প্রায়, যেখানে শতাব্দী শেষ-
ক্ষুধা আর যুদ্ধের চিৎকার শুরু সেখানে জন্ম আমার!
যীশুর ক্রন্দন বুকে নিয়ে যখন হেঁটে বেড়িয়েছি চৌরাস্তায়--
তখন ভালোবাসার বদলে কুৎসা জুটেছে কপালে।
উপাসনালয়ের বাইরে দাঁড়িয়ে ফেরিয়ে করে বেরিয়েছি নিজের জীবন।
গনিকা নাকি কবিতা? প্রেমিকা নাকি যোনি?
ভাবতে ভাবতে হেঁটে গেছি বেশ্যাপাড়ায়।
পকেটে দু'টো কবিতা নিয়ে কেঁদেছি রাতের পর রাত।
প্রথমটি বাবা; যাকে দেখিনি কখনো, অপরটি মা; যে আমাকে দেখেনি কখনো।
মুছে যাওয়া ক্যালেন্ডারের দীর্ঘশ্বাসে প্রায়শ বলতাম;
-আমার বড্ড খিদে পেটে? দোহাই খাবার দিন!
:ইশ্বরকে ডাকো, তিনিই সকলের খাদ্য দাতা!
-আমি অসুস্থ? দোহাই আমাকে সাহায্য করুন।
:ইশ্বরকে ডাকো, তিনি সকলের পালনকর্তা!
-এই যে শুনছেন? আমার মা মারা গিয়েছে। দাফন দরকার...
:ইশ্বরকে ডাকো। তিনি তো জীবনের মালিক!
কেউ এগিয়ে আসেনি!
কথাগুলি বলতে বলতে--
প্রতিটি মানুষ পাশ কাটিয়ে চলে গেলো সময়ের মতো!
গলিতে গলিতে বুর্জেয়া চিৎকাররত কমিউনিস্ট এগিয়ে আসেনি,
সংসদে ঘুমিয়ে থাকা মন্ত্রী এগিয়ে আসেনি, মসজিদের ইমাম এগিয়ে আসেনি,
মন্দিরের পুরোহিত এগিয়ে আসেনি, গীর্জার ফাদার..কেউ,
কেউ আসেনি এগিয়ে !
মায়ের লাশ চার ভাগ করে সৎকার করলাম চার রীতিতে!
মোল্লা তেড়ে এলো, পুরোহিত তেড়ে এলো, যীশু তেড়ে এলো,
বুদ্ধ তেড়ে এলো, সরকার তেড়ে এলো, রাষ্ট্র তেড়ে এলো।
৫৭ ধারায় মামলা দিয়ে জেলে ভরে- শহরে ডেকে দিলো হরতাল!
৫৬ হাজার বর্গমাইলে রক্ত,
শাখায় রক্ত,
সিঁদুরে রক্ত,
টুপিতে রক্ত,
পাঞ্জাবীতে রক্ত।
লাশের গন্ধে বাতাসে নিঃশ্বাস নেয়া দায়।
মিছিল থেকে তারা মদের দোকানে যায়,
মিছিল থেকে তারা বেশ্যালয়ে যায়।
আমার বোনকে স্পর্শ করে,
আমার মায়ের লাশকে ধর্ষণ করে, জন্ম দেয় আমাকে।
পৃথিবীর বুকে ঘুমিয়ে থাকা ইশ্বর কখনো শুনে না- আত্মচিৎকার সর্বহারার,
ধর্ম আর যোনির দখল বরাবরি থাকে সবলের হাতে!
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৩০