somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার প্রেমিকারা - ইলোরা পর্ব ;)

২২ শে আগস্ট, ২০০৯ সকাল ৭:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অনেকদিন থেকে এই সিক্যুয়েলটা লিখবো ভাবছিলাম, কিন্তু হয়ে উঠছিলোনা। যতবারই লিখতে যাই, মাথার মধ্যে থেকে মহামান্য শয়তান মশাই বাধা দেন। বলেন - "আরে ... লিখিসনা, তোর আশা ভরষা সব শেষ হইয়া যায় নাই তো এখনও X(("। এমনিতে এই সিক্যুয়েল ঠিক কয় পর্বে শেষ হবে তা নিয়ে আমারও যথেস্ট সন্দেহ আছে। প্রথমে হাতে গোনার চেষ্টা করেছি, দুই হাতের আঙ্গুল শেষ হয়ে পায়ে গিয়ে ঠেকেছে। সমস্যা হলো - হাতের কড়ে ষোল পর্যন্ত গোনা যায়, পায়ের কড়া তো দেখা যায়না, তাই গোনায় ভুল হয়ে যায় বারবার। ক্যালকুলেটরে হিসাব করতে গেলে কাকে দিয়ে শুরু করেছিলাম সেটাই ভুলে যাই। এই অবস্থাতেও মহামান্যর অনুরোধে চুপ করেছিলাম, কিন্তু এই রমজান মাসে উনি বাৎসরিক ছুটিতে মৃগয়ায় (মতান্তরে জেলখানায়:|) গমন করেছেন বিধায় আমি সুযোগ পেয়ে এই সিক্যুয়েল শুরু করিলাম। ভাবিতেছি এই সিক্যুয়েল খানা শুদ্ধ ভাষাতেই রচনা করিবো ... যা আছে কপালে :D

ইলোরা পর্ব :!>

জন্মের সময়ের নানাবিধ জ্বালা যন্ত্রনার মধ্য দিয়া বাঁচিয়া যাওয়া ছোট্ট শিশুটি (একটি অসম্পুর্ন গল্প ..... দ্রষ্টব্য) ক্রমে ক্রমে বালকে রুপান্তরিত হইয়াছে। কিন্তু তাহার মাতা তাহাকে প্রায়শই গামছা অথবা টেবল ক্লথের শাড়ীতে জড়াইয়া ঠোঁটে টুকটুকে লাল লিপিশটিক লাগাইয়া এবং কপালে টিপ পড়াইয়া আসন্ন্য কইন্যা সন্তানের আবির্ভাবের মহড়া দিয়া লইতেন। সেও বউ সাজিয়া চুপটি করিয়া খাটের উপর বসিয়া থাকিতে বিশেষ অপছন্দ করিতোনা, কারন স্বল্প পরিচিত প্রতিবেশীদের ভইড়কাইয়া দিয়া যেই আনন্দ তাহার মাতা উপলব্ধি করিতেন, পুত্র নিজেও তাহার কিছুটা হইলেও ভাগ পাইতো ;) এমনি ভাবে সুখে দুঃক্ষে উহাদের সময় অতিবাহীত হইতেছিলো। এমন সময় পুত্রের বাবা দিব্য দৃষ্টিতে তাহার পুত্রকে জজ ব্যারিষ্টার রুপে দর্শন করিয়া ফেলিলেন, এবং পুত্রের অফুরন্ত খেলার সময়কে বিনা দ্বিধায় বিনা কাঁচিতে কাটিয়া ছোট করিয়া দিলেন। বিনা মেঘে ভুমিকম্পের ন্যায় এহেন কষ্টদায়ক কাটাকাটিতে পুত্র যারপর নাই ব্যাথিত হইলেও পিতামাতা বেশ আহ্লাদিত ছেলেন। সুপ্রিয় পাঠক, আপনি যাহা ভাবিতেছেন, ঘটনা আসলে তাহা নয়, আমি বলিতে চাহিতেছি যে - বাবা তার সন্তানকে মুনলাইট কিন্ডারগার্টেন স্কুল নামক জেলখানায় অর্থের বিনিময়ে পোস্ট করিয়া আসিলেন :((

ফকিরাপুলের গলীর গলী তস্য গলীর বাসা ছাড়িয়া উহারা তখন সবে মাত্র বাসাবোতে রেল লাইন সংলগ্ন চারতলা বাসায় নতুন সংসার পাতিয়া বসিয়াছে। বাসা হইতে স্কুলে হাটিয়াই যাওয়া যায়। তথাপি পুত্রের পিতা একদিন পুত্রের বিদ্যালয় বিমুখিতা স্বভাবের পরিবর্তন আনয়নের লক্ষ্যে একখানা ছাতা মার্কা ঢেউটিনের তৈরী জীপ গাড়ী ক্রয় করিয়া আনিলেন। প্যাডেল চালিত সেই জীপ গাড়ীতে বসিয়া ভাবের সহিত বিদ্যালয়ে গমন করিতে পুত্র আর কখনই পিছুপা হয়নাই। এইভাবে কিছুদিন বিদ্যালয়ে গমন করিবার পরে সহপাঠিদের মাঝে সে মর্কট সম্রাটের মর্যাদা লাভ করিল আর পরীক্ষায় আশাতীত নম্বর প্রাপ্তির ফলে শিক্ষিকাদিগের প্রিয় পাত্রে পরিনত হইলো। এমনিভাবে তার পরিচিতি ঘটিল ইলোরা, হুমায়রা আর তিন্নির সহিত। তাহাদের মধ্যে ইলোরা অতিশয় সুন্দরী গোলগাল এবং নির্বুদ্ধিমতি ছিলো। উহার ডাক্তার পিতা উহাকে গাদা গাদা বুদ্ধির ইনজেকশন ক্যাপসুলে ভরিয়া খাওয়াইয়াও উহার মাথার হেড অফিসে কিছু ধরাইতে সমর্থ হন নাই বলিয়া বিদগ্ধজনের ধারনা। এই কারনে তিন্নি এবং হুমায়রার সহিত বালকটির বেশী খাতির জমিয়া উঠিল। অপরদিকে ইলোরার মাতাপিতার সহিত বালকের পরিবারের সম্পর্ক ঘনিষ্ট হইতে ঘনিষ্টতর হইতে লাগিলো। সেই উপলক্ষে প্রায়শই বিদ্যালয় ছুটির পর বালকটিকে হুমায়রা এবং তিন্নিকে বিদায় দিয়া মাতৃদেবীর হাত ধরিয়া ইলোরার বাসার উদ্দেশ্যে যাত্রা করিতে দেখা যাইতে লাগিলো।

এমনি ভাবে চলিতে চলিতে একদিন উভয় পরিবারের সন্মতিতে সকলে মিলিয়া রাজেন্দ্রপুরে পিকনিকের উদ্দ্যেশ্যে যাত্রা করিল। পিকনিকের স্থানে পৌছিয়া বালক খিয়াল করিলো ইলোরা নামের অতিশয় পরিচিতা সেই গোলগাল বোকাসোকা বালকাটিকে আজিকে অতি অতি সৌন্দর্য লাগিতেছে। কিন্তু কেন যেন বালিকা তাহাকে সজতনে এড়াইয়া চলিতেছে। অর্ধঘন্টার কাকুতি মিনতি পর, ৩ খানা চকলেট বার, ২ খানা পুস্প ও এক খানা ঘাস ফরিঙ্গের বিনিময়ে কইন্যা অভিমানে মেঘাচ্ছন্য নেত্রে বালকের দিকে তাকাইয়া বলিলো - "তুমি প্রতিদিন শুধু হুমায়রার সাথে বসো, আমার সাথে বসোনা :(" বালকের অন্তরে কি যেন হইয়া গেল, সে বিনা চিন্তায় বিনা দ্বিধায় বলিয়া ফেলিল যে সে এখন হইতে প্রতিদিন ইলোরার সাথেই উপবেশন করিবে। এতে কইন্যা যারপরনাই আনন্দিত হইয়া জঙ্গলের শুকনা ডালপালা ও ঝড়া পাতা মাড়াইয়া নুপুর নিক্কন তুলিয়া দৌড়াইয়া যাইতে লাগিলো, বালকও তাহার পিছু নিল এবং এক পর্যায়ে তাহারা ক্লান্ত হইয়া পাশাপাশি হাটিতে লাগিলো।

বালক আজও জানেনা কেন তার সেই মুহুর্তে পৃথিবীর সবকিছু ভুলিয়া ইলোরার হাতখানি ধরিতে এত বেশী শখ হইয়াছিল। এক সময় বালক সমস্ত দ্বিধা দ্বন্দ পরিত্যাগ করিয়া বালিকার সুকোমল হাতটি নিজের হাতের মুঠোয় তুলিয়া লইলো। আহা ... সেই স্পর্ষ সে আজও ভুলিতে পারেনা। হাত ধরার সঙ্গে সঙ্গে বালিকা বালকের মুখের দিকে চাহিয়া পৃথিবী আলোকিত করিয়া একখানি হাসি উপহার দিয়া কহিল ... "হুমায়রা আর তিন্নির সাথে আর কথা বলবানা, আচ্ছা? সেই জন্য কিন্তু হাত ধরতে দিয়েছি"। বালকের তখন চোখের সামনে হাজার প্রজাপতির উড়াউড়ি, সে কোন রকমে "আচ্ছা" বলিয়া বালিকার হাতটি আরও জোরে চাপিয়া ধরিল।

............................................................

উহাদের প্রেমপর্ব খুব বেশীদিন স্থায়ী হয়নাই। পরের দিন ক্লাসে হুমায়রার বাসা হইতে লইয়া আসা নুডোলসের লোভ সামলাইতে না পারিয়া বালক প্রথমে হুমায়রার সাথে কথা বলিয়া ফেলে, পরে উহার সাথেই বসিয়া গল্পগুজবে মত্ত হয়, ফলে ইলোরার সহিত দাম্পত্য কলহ নিত্যদিনের ব্যাপারে পরিনত হয়। এক পর্যায়ে উহাদের মুখ দেখাদেখিও বন্ধ হইয়া যায়।

ক্রমশ ... আমার প্রেমিকারা - হুমায়রা পর্ব ;)
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০০৯ ভোর ৪:০০
৭২টি মন্তব্য ৭২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×