দয়িতার কাছে জমা রেখে বীজপক্ষ; আমি পিঠ
টান করে উঠে দাঁড়াই। গলায় লাল গামছা ঝুলিয়ে
হুঁকোতে শেষ টান দিয়ে বলি, তবে যাই।
চাতালে গুঁজে রাখা ভাঙা সাঁকোর বিলাপ। শুকনো
বিলের ঝুরঝুরে পাড় টাঙানো সিঁকাতে। হাত বুলিয়ে
শেষ বার কাঁথার ভাঁজে ঘষে তুলি শরীর উত্তাপ।
পড়ে থাকে আর্দশলিপিপৃষ্ঠার মত চেনা জীয়ল বিল।
চেনা বন্ধুর গাঢ় স্বরে সূর্য এসে টোকা দেয় পিঠে।
আমার নির্মোহ প্রস্থানের দিকে তির্যক অবিশ্বাসের
চাহনি সার সার তাল খেজুর বেথুন জঙ্গলের। আমি
স্মিত হেসে ঘামে ভেজা মুখ মুছে বলি,
আচ্ছা, যাই তবে।
আমার যাবার রেখা ধরে কাঠবিড়ালীর পায়ে চলা পথ।
ভাঙা দোয়েলের বাসা যত্নে তুলে দিয়ে গাছে
বাঁ হাতে ধানের পালান রেখে পায়ে পায়ে উঠে আসি সড়কে।
দূরে ধোঁয়াটে গ্রামের রেখায় একটি করুন রঙ লেপ্টে থাকে।
জল রঙের আদুরে কণার ঘ্রাণ এসে লাগে নাড়া পোড়ানো মাঠ হতে।
আমি মৃদু মাথা ঝুঁকিয়ে হাসি, আচ্ছা, যাই।
চলে যাবার গল্প মানে আমার এই।
যেভাবে নির্বিঘ্নে ধুয়ে ফেলা যায় বিকেল মাঠের দৌরাত্ন চিহ্ন,
কিঙবা মুছে ফেলা যায় রৌদ্রজল ঘাড় হতে,
আমার চলে যাবার আগে মুখের মানচিত্র হতে এভাবেই
আমি মুছে ফেলেছি দ্রাঘিমা রেখা।
বালুচরে শত পদচিহ্ন জোয়ারে ভেসে যেতে দিয়ে
নেহায়েত পথচারীর মত পেরিয়ে এসে অতগুলো স্মৃতি,
আমার নিরুপদ্রব চলে যাওয়া নিজ গাঙে; আকুল একাকী।
সেপ্টেম্বর ১০, ২০১২
ছবিসূত্র: গুগল
Remorse or Sphinx Embedded in the Sand, 1931
by Salvador Dalí (Spanish, 1904-1989)
উৎসর্গ:
কিছু দৃশ্যস্পর্শহীন কিঙবা বধির সময়
আমাদের কাঁধে মাঝে মাঝে
প্রেত নৃত্যে মাতে। ঘড়া ঘড়া জল অথবা
স্বস্তিকা ফোঁটা ছিটানো বন্ধুরা থাকেন
এত কাছে তখন, মনে হয় একাত্না
বহুদিন ছিল এক কৌটোয় ঈশ্বরের ঘরে...
আমার সামহোয়্যার ইনের সকল বন্ধুদের কে...