প্রশ্নঃ- তাবলীগ জামাতের ইজতেমা কি বিদআত? তাবলীগ জামাত তো ভাল কথাই বলে?
উত্তরঃ- হ্যা, ইজতেমা সম্মেলন একটি জঘন্য বিদআত। তো তাবলীগ জামাতের লোকেরা তো ভাল কথাই বলে, দ্বীনের দাওয়াত দেয়, নামাযের দাওয়াত দেয়, তাহলে তাদের মন্দ কেন বলছেন? এই যুক্তি অনেক সাধারণ মুসলিম ভাই পেশ করেন। এই প্রকার ভাইদের উত্তরে সামান্য কিছু ব্যাখ্যা তুলে ধরলাম, যাতে করে সবাই বুঝতে সক্ষম হয় মন্দটা কোথায়।
১- এতে সন্দেহ নেই যে, নবী মুহাম্মদ (সাঃ) সব চেয়ে বড় ও সত্য মুবাল্লিগ (তাবলীগকারী)। অতঃপর তাঁর সাহাবাগণ যাঁরা সারা বিশ্বে নবী (সাঃ) এর নিয়মে তাবলীগ করে গেছেন।
কিন্তু বর্তমান যুগের তাবলীগ জামাত সেই নবীর ও তাঁর সাহাবাদের তাবলীগ ছেড়ে কয়েক দশক পুর্বে ভারতের সাহারানপুরের ইলয়াস
সাহেবের তৈরি করা বরং স্বপ্নে পাওয়া তাবলীগ নিয়েছেন। নবী (সাঃ) এবং তাঁর সাহাগণের তাবলীগ কি যথেষ্ট নয়? সেটা কি উত্তম তাবলীগ নয়? না এই যুগে তা অচল?
২- নবী (সাঃ) এর তাবলীগের মূল কথা ছিল বরং ইসলামের মূল কথাই হচ্ছে, তাওহীদ। কিন্তু বর্তমান তাবলীগে তাওহীদের দাওয়াত নেই।
৩- নবী (সাঃ) এর তাবলীগে যে বিষয় থেকে সবচেয়ে বেশী সতর্ক করা হয়েছে তা হল, শির্ক থেকে সতর্কতা। ইলইয়াসী তাবলীগে শির্কের কথা বলা হয় না; অথচ দেশের আনাচে কানাচে অহরহ শির্ক ও শির্কের আড্ডা বিদ্যমান।
৪-নবী (সাঃ) এর দাওয়াতের সব চেয়ে বড় অংশ ছিল, মুশরিকদের ইসলামের দাওয়াত দেওয়া। কিন্তু বর্তমান তাবলীগ জামাত মুশরিকদের দেয় না! অথচ তাবলীগ জামাতের জনক ইলিয়াস ও যাকারিয়া সাহেবের দেশ একটি মুশরিক দেশ।
৫-মহান আল্লাহ, পবিত্র কুরআন যদি আমাদের হেদায়েতের জন্য অবতীর্ণ করে থাকেন, তাহলে তা বাদ দিয়ে ফাযায়েলে আমলের শিক্ষা দেয়া হয় কেন? অনুরূপ নবী (সাঃ) এর হাদীস কি উত্তম বাণী নয়, তাহলে এখনও কেন সাধারণ লোককে বলা হবে, এগুলো তোমরা বুঝবে না। মানুষ না বুঝলে এসব কার জন্য অবতরণ করা হয়েছে?
৬- ইসলাম কি শুধু ফযীলতের নাম? সকল বিধানের সব কিছু বাদ দিয়ে শুধু ফাযায়েল বর্ণনা কেমন ইসলাম! ধরুন নামায একটি ইসলামের বিধান। এ সম্পর্কে মোটামুটি যা আছে তা হল, নামায কি, নামাযের গুরুত্ব, নামায ছাড়ার বিধান, নামাযের রুকন, ওয়াজিব ও মুস্তাহাব, নামাযের পদ্ধতি এবং নামাযের লাভ বা ফযীলত। এখানে সব কিছু ছেড়ে দিয়ে শুধু ফযীলত কেন?
৭- যেই তাবলীগের এত প্রসংশা ও ফযীলত বর্ণনা করা হচ্ছে, কিন্তু কখনো চিন্তা করেছেন কি সেই তাবলীগী নেসাবে অযু করা ও নামায পড়ার নিয়ম-পদ্ধতিটাও কেন লেখা নেই? অন্যান্য বিষয়গুলির বর্ণনা তো দূরের কথা।
৮- ইসলামের রুকন ৫টি আর ঈমানের ৬টি, যা হাদীসে জিবরাঈলে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু এই রকম একটি মৌলিক বিষয় বাদ দিয়ে ৬ উসূল আবিষ্কার কোন্ দলীলের ভিত্তিতে করেছে ইলিয়াসের তাবলীগ জামাত? ইকরামে মুসলিম বা মুসলিমের সম্মানের নামে নীতি তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সত্য হচ্ছে এখানে কেবল তাবলীগীদেরই সম্মান করা হয়! অন্যদের ছায়াটাও তো তারা দেখতে পছন্দ করেন না!
৯- তাবলীগের জন্য কুরআন সুন্নাহ কি যথেষ্ট নয়? শত শত বানোয়াট কেচ্ছা কাহিনীর আশ্রয় নেয়া হয় কেন? তবুও আবার সেই সব কেচ্ছা যাতে আছে সুফীদের কাশফ, কারামত, স্বপ্ন, ইল্কা, ইলহাম ও ফয়েযের কথা।
১০- শরীয়ার কোন মাসলায় আমীর সাহেব সরাসরি কুরআন-সুন্নাহ থেকে সমাধান না দিয়ে দেওবন্দে পাঠান কেন? এমন তো নয় যে, আপনারা তাবলীগের নামে দেওবন্দের প্রচার-প্রসার করছেন!
১১- আপনারা ফাযায়েলে আমল বইটি একাধিক ভাষায় অনুবাদ করেছেন কিন্তু এখনও আরবী ভাষায় তা অনুবাদ করা হচ্ছে না কেন? আপনাদের মধ্যে আরবী শিক্ষিত ব্যক্তিত্ব নেই? নাকি গুমর ফাঁস হওয়ার ভয়ে করেন না?
১২-মোট কথা নবী (সাঃ) এবং সাহাবাগণের দাওয়াতে তাবলীগই হচ্ছে সহীহ, শুদ্ধ, পূর্ণ তাবলীগ। আর অন্যান্য তাবলীগের অনেকটাই হছে, ভুল, অশুদ্ধ ও অপূর্ণাঙ্গ এবং নতূন তাবলীগ। যেমন ইলিয়াস মেওয়াতীর তাবলীগ জামাত। তাই আমাদের নিকট নবীর (সাঃ) তাবলীগই একমাত্র গ্রহণযোগ্য।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৪০