somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভেজা ভেজা

২৬ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আকাশটা আজ অনেক বিশাল। আকাশের বুকে মস্ত বড় একটা ইটের ভাটা। অনেকগুলো মেঘদল ছড়ানো ছিটানো।

একজন হাঁটু গেড়ে বসে পড়েছে, হাঁত বাঁধা পেছনে, পেটানো শরীর, মুখে চাপা ক্রোধ...আরেকজন দুহাত মেলে দিয়েছে দুপাশে--মুক্তির আশায়...

ঘাস ছিঁড়লাম, বালু উড়ালাম। ইটের ভাটা মাথায় রেখে ছবি তুললাম। স্নানরতাদের সংকোচ এড়িয়ে গেলাম খামাখা একটা গল্প জুড়ে দিয়ে।

আমরা হাঁটতেই থাকলাম, হাঁটতেই থাকলাম...

তারপর আবার দুপাশের স্রোতে আঙুল বোলালাম। ঘোলা জলের লাজুক স্রোতে। সিমেন্টের বড় বড় ব্লকগুলোতে নৌকা ভিড়ল, আমাদের নৌকা, কচুরিপানার আয়োজন সেখানে। আমাদের দিকে নির্বাক তাকিয়ে রইল বিশাল আকাশ। আকাশে তখন একটা বিকেল, একটা মস্ত বড় আকাশ, আর একটা ক্লান্তসূর্যাস্ত--একটা ব্রিজের ফাঁকে--নীচের জলে স্পষ্ট সন্ধ্যা, লালচে আলো। কিন্তু দেখলাম কেবল আমি একাই। একজন কিছুটা ভান করল। বাকিরা সবাই ধোঁয়াচ্ছন্ন।

হঠাৎ দেখায় মাটির দেয়াল লজ্জা পেল না! আমি লজ্জা পেলাম। মনটা বিষণ্ণ হয়ে গেল। একটা স্নিগ্ধ সারল্য পরশ বুলিয়ে গেল আমার সবটুকু জুড়ে। আমি ভীষণ মুগ্ধ হলাম। মা'র মনে করিয়ে দেয়া 'লজ্জাবতী'র কথা আমার আর বলা হলো না। আমি বেমালুম ভুলে গেলাম। মাটির দেয়ালের লজ্জা দেখে। খসে পড়া দেয়ালের কান্না শুনে। মশারির স্ট্যান্ড-এ ঝোলানো মলিন কাপড়গুলোও চোখ নামিয়ে রইল। এক কোনায় ধুলোপড়া বইয়ের তাকে এলোমেলো বইগুলোও চোখ এড়িয়ে গেল না। কিংবা মাটির মেঝেতে পা ঘষানোর শীতল অনুভূতি। টুকটুকে লাল লজ্জাগুলো উড়ে উড়ে চলে গেল। কিচিরমিচির করতে লাগল আশেপাশেই। মাথার উপর গোছানো চুলের গোছা দুষ্টুমি করতে থাকল একটানা।

শাড়ির আঁচল এগিয়ে এলো ধীরপায়ে। এবং কোনো অনুযোগ ছাড়াই একটুকরো অজুহাত।

তারপর আঁধার চিরে এগিয়ে চলল আমাদের-দুচোখ। বৃষ্টি এলো না। একটু একটু সোঁদা গন্ধ এলো নাকে। ভেজা ভেজা। আজ প্রথম বারের মতো। যদিও চমকে গিয়েছিলাম প্রথমে। ভূত দেখার মতো করে। তবু মোমবাতির আলো একটুও কাঁপল না।

বিষণ্ণতা চলে গিয়ে একটুকরো হাসি এলো মুখে। আমার খুব ভালো লাগল।

ফিরতে ফিরতে বৃষ্টি এলো। বা-হাতে ধরা ছাতা বেয়ে বেয়ে অমনি আমার জিন্স উঠে গেল হাঁটু পর্যন্ত, আর স্যান্ডেলজোড়া ডানহাতে। ভরদুপুরের পিচগলা রাস্তাটাকে ভীষণ নিরীহ মনে হলো বৃষ্টিভেজা স্পর্শ পেয়ে। অবাক বিস্মিত চোখজোড়াগুলোকে এড়িয়ে গেলাম। অনেকগুলো কেরোসিনকুপি দেখলাম দূরে সারি সারি। পাশাপাশি অনেকগুলো হলুদ আলো। বৃষ্টিভেজা। মাছের বাজারের। এক পশলা বৃষ্টিবেলায় কুঁকড়ে যাওয়া মাছের বাজার।

কিন্তু রাস্তায় জমে যাওয়া জলগুলোর মন ভালো করে দিতে পারলাম না আমি...সারাদিনের ব্যস্ত ক্লান্ত বোবা ঘোলাজল...

২৬০৭০৯০১৪৭
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১০ রাত ২:১২
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আঁচলে বাঁধা সংসার

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১১ ই মে, ২০২৫ সকাল ১০:২০



আমি তখন কলেজে পড়ি। সবেমাত্র যৌথ পরিবার ভেঙে মায়ের সঙ্গে আমাদের ছোট্ট একটা সংসার হয়েছে। নতুন সংসার গুছিয়ে নিতে, মা দিনের প্রায় সবটা সময় ঘরকন্নার কাজে পার করে দিতেন। ঘরের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রেমিকাকে বা বউকে প্রেম নিবেদনের জন্য সেরা গান

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ১১ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৯

নীচের দেয়া গানটাতে হিন্দি, বাংলা, গুজরাটি, পাঞ্জাবী এবং ইংরেজি ভাষায় প্রেম নিবেদন করা হয়েছে। নীচে গানের লিরিক্স এবং বাংলা অর্থ দিলাম। আশা করি গানটা সবার ভালো লাগবে। এই হিন্দি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ডায়েরী- ১৫৩

লিখেছেন রাজীব নুর, ১১ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১:৪৫



কেন জানি মন মেজাজ বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে।
কিছুই ভালো লাগছে না। ইচ্ছা করছে ঘোড়ায় চড়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ি। হাতে থাকবে চাবুক। যেখানে অন্যায় দেখবো লাগাবো দুই ঘা চাবুক। সমস্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ঐতিহাসিক দিন: বাল সাম্রাজ্যের পতন

লিখেছেন নতুন নকিব, ১১ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৫

একটি ঐতিহাসিক দিন: বাল সাম্রাজ্যের পতন

ছবি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

প্রিয় পাঠক, গতকাল ১০ মে ২০২৫। এই দিনটি কোনো সাধারণ দিন ছিল না। এটি ছিল ঐতিহাসিক এমন একটি দিন, যা বাংলাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতের পুশইন : বাংলাদেশ কে Human dumping station বানানোর অপকৌশল !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১১ ই মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৩


ভারতের দিল্লি যখন ইসলামাবাদের দিকে ক্ষোভের তীর ছুঁড়ছে, তখন সেই ধূলিঝড়ে ঢাকা তেমন দৃশ্যমান নয়—তবে নিঃশব্দে এক অস্থির আগুন ছড়িয়ে পড়ছে সীমান্তের ঘাসে। সাম্প্রতিক ভারত-পাক উত্তেজনার ছায়ায়, বাংলাদেশ সীমান্তে শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

×