বিখ্যাত ইমাম। যার সারাজীবন কেটেছে রাসুল (সাঃ) কে অনুসরণ করে। যিনি নিজের কোন আত্বজীবনি লিখে যাননি। তিনি যখন তাঁর ছাত্রদের শিক্ষা দিতেন তখন বার বার বলতেন, “তোমরা আমার কোন কথা লিখে নিও না। আমি আজ যা পালন করি, কাল তা পরিবর্তন করি।“ তিনি আরো বলতেন, “যখনি কোন সহিহ হাদিস পাবে, মনে রেখ, সেটাই আমার মাযহাব।
কেন তিনি এই কথা বলতেন? চলুন, সেদিকে আগাই।
আজ আমরা সভ্য। বিজ্ঞান আমাদের দিয়েছে অনেক কিছু। ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার কল্যানে সারা দুনিয়াতে কোরান-হাদিস যেভাবে বিস্তার লাভ করেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়েছে কোরান-হাদিস। আজ বুখারী বাংলায়, মুসলিম বাংলায়।
আবু হানিফার সময় কিন্তু তেমন ছিল না। তাঁরা অনেক কষ্ট করতেন একটা হাদিস সংগ্রহ করতে। শত শত মাইল পায়ে হেটে যেতে হত। যখনি কোন সহিহ হাদিস পেতেন, তাঁর উপর আমল করতেন। পুরনো আমল বাতিল করতে তাঁদের একটুও কষ্ট হত না। আর এটাই একজন ইমানদারের কাজ। আশা করি বুঝতে পেরেছেন কেন আবু হানিফা ঐ কথা বলতেন।
তখন আব্বাসীয় খেলাফত চলছে। আব্বাসীয় খেলাফতের প্রতিষ্ঠাতা মনসুর আব্বাসী একদিন ইমাম আবু হানিফা কে ডেকে বললেন, আপনি আমার দরবারের প্রধান বিচারপতির পদ গ্রহণ করুন। আবু হানিফা বললেন, “আপনার আইন সভায় বসে আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসুলের (সাঃ) আইন কে আমান্য করতে পারবো না আমি।“ ব্যস আর যায় কোথায়? জুলুম, নির্যাতন, জেল হাজত……ইত্যাদি। শেষে জেল হাজতে রুটির সাথে বিষ মিশিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়।
আবু হানিফাকে বাগে আনতে না পেরে তাঁর প্রধান শিষ্য মোঃ ইউসুফ কে প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত করা হয়। পরবর্তিতে ইউসুফ এই উপমহাদেশে বিভিন্ন মসজীদে ইমাম নিযুক্ত করেন যারা ইউসুফ তথা মনসুর আব্বাসীর দেয়া আইন প্রবর্তন করেন। যে কারনে আমরা প্রকৃত ইসলাম থেকে অনেক দূরে সরে এসেছি। প্রশ্ন আসতে পারে, কেন ইউসুফ নিজের নামে মাযহাব চালু না করে ইমাম আবু হানিফার নামে চালু করলেন। এর উত্তর হল, তৎকালীন সময়ে মানুষ আবু হানিফাকে ভীষণ বিশ্বাস করতো। আবু হানিফার নামে যেকোন আইন চালু করলে মানুষ তা যাচাই বাছাই না করেই আমল করতো। তাই তাঁর নামে মাঝহাব চালু করাটাই ছিল যুক্তিযুক্ত।
সময় এসেছে ইতিহাস জানার। হে মুমিন! আর চোখ বুজে থেকনা। ইতিহাস খুঁজে বের কর। মুসলিম বিশ্বকে বাঁচাও এবং নিজে বাঁচো জাহান্নামের আগুন থেকে।
আল্লাহপাক আমাদের সঠিক দ্বীনের বুঝ দিক। আমীন।
YOU CAN VISIT MY BLOG:
https://www.shishir54.xyz
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৪