তাদের মধ্যে কথোপকথন ছিল এইরকম:
আনন্দ: কি রে কেমন আছিস? আমাকে দাওয়াত দিলি না তোর আপুর বিয়ের?
অনু: দাওয়াত দিব কি করে। মানুষের সাথে কখনো ভাল ব্যবহার করো? আগে ভাল ব্যবহার কর তবে!
আনন্দ: "এই দিপা তুমি কি ভাল আছ?" ভাল ব্যবহার হইছে না। এটা ভাল ব্যবহার না, কত সুন্দর করে বললাম।
অনু: এই ভাবে ঢং করে বলাকে ভাল ব্যবহার বলে না।
এর পর থেকে আনন্দ দ্বিগুন উৎসাহে অনুকে রাগাতে থাকে। ভাল ব্যবহারের নমুনা দেখানোর জন্য। যেখানে সেখানে অনুকে দেখলে জোড়ে নাম ধরে ডেকে উঠে।
ক্লাসের মধ্যে:
আনন্দ: ঐ যে তোর পেন পড়ছে?
অনু: কেথায়? চোখে দেখ না, ডাক্তার দেখাও।
আনন্দ: আমি তো ডাক্তার চিনি না, তুমি যদি দেখাতে নিয়ে যাও।
অনুর কাছ থেকে কোন বই, ক্লাস নোট নিলে আনন্দ পরে এসে বলত কি ফালতু বই এটা অথবা এটা আমার কাছে ছিল এমনিই নিলাম তোর কাছ থেকে। অনুকে কিছু বলার সুযোগ দিত না, বলত চুপ কর একদম ফালতু কথা বলবি না। বেশি ফালতু কথা বলিস।
পরে বন্ধুদের কাছে এসে বলল, নারে আজকে সত্যিই রাগ করেছে, কোন কথা না বলে চুপ করে চলে গেল।
এক মাস বন্ধ, অনুর সাথে দেখা হবে না মন খারাপ।
ভয়ে ভয়ে ফোন করল অনুকে, তাও আবার রাগিয়ে দিল। ম্যাসেজ পাঠাল---"যে এইটা পরবে সে একটা গাধা আর যে রিপ্লাই দিবে সে একটা ছাগল"। বেচারী অনু!!
অনু অনেক দিন কথা বলে না। প্রতিদিন ক্লাসে আসে, কিন্তু আনন্দ শত চেষ্টা করেও কথা বলাতে পারে না অনুকে।
অনুর পেছন পেছন দৌড়াতে থাকে, অনু দাঁড়া কোথায় যাচ্ছিস ক্লাস করবি না।
তাও কোন কথা বলে না অনু।
আনন্দ খুব ভাল ক্রিকেট খেলে। অনু কখনো খেলা দেখতে যেত না। যে দিন সে খেলা দেখতে গেল সেদিন তারা হারল এবং দলের মধ্যে সবচেয়ে বাজে খেলল আনন্দ।
পরদিন:
অনু: তোরে থাপ্পর দিতে ইচ্ছা করছে।
আনন্দ: তুই গেছিস কেন? তুই গেছিস বলেই তো আমরা হারছি, তুই একটা....।
এই ক্লাস করতে আসছিস কেন, একটা ফালতু ক্লাস, স্যার কে দেখতে আসছিস না
শবে' বরাতের সময় ,ফোন করল: কি রে কি করিস? রুটি বানাস না, কি করবি তোদের তো আর কোন কাজ নাই। পড়ালেখা করে কি করবি।
নামায পড়িস, আমার জন্য একটু দোয়া করিস।
পারব না। তোর জন্য আমি কেন দোয়া করব।
আনন্দ সব সময় অনুকে বলত সে অনুর এক বান্ধবীকে ভালোবাসে। সে যেন একটু ঠিকঠাক করে দেয়।এই নিয়ে সব সময় অনুর সাথে ঘ্যানঘ্যান করত।
আনন্দ ভাবত অনু বুঝতে পারে তার ভালবাসা।মুখে যাই বলুক কেন মনের কথা অনু ঠিকই বুঝবে।
আনন্দ একদিন ফোন করল--অনু তোকে আজকে একটা সত্যি কথা বলব, বিশ্বাস করবি।
কি?
আমি এত দিন যা বলসি সব ভুয়া, মিথ্যা কথা। আমি আসলে তোকে ভালোবাসি, তোর বান্ধবীকে না।
তারপর অনেক দিন যায়।ফাইনাল পরীক্ষাও শেষ।
আনন্দ মাঝে মাঝে অনুকে ফোন করে। অনু খুব কম করে।
অনেকদিন পর অনু একটা ম্যাসেজ পাঠায় আনন্দ কে---"আমি আজকে আমার জীবন থেকে একজনকে চিরতরে হারিয়ে ফেললাম, হৃদয়টা শূণ্য লাগছে, হয়ত তাকে সম্পূর্ণ পাইনি কোন দিন"। অনুর খুব মন খারাপ ছিল। আনন্দ সবসময় চটজলদি রিপ্লাই দেয় কিন্তু সেদিন অনেক ক্ষন পর, ঘন্টা দুয়েক পর রিপ্লাই দেয়, ততক্ষনে অনু ঘুমিয়ে পরেছে।( who is the lucky person)
অনু(but ami to unlucky hoye gelam)।
তারকিছু দিন পর অনু ফোন করল সকালবেলা: আমার একটু কাজ আছে, যেতে পারবি? গেলে এক্ষুনি বল, আমি এখন বের হব, দেরি করতে পারব না।
আনন্দ: তুই যা, কাজ শেষ করে আয়, সমস্যা তো নাই কোন। আমি আজকে বের হতে পারব না, বাসায় একটু কাজ আছে।
অনু কাজ শেষ করে অফিস থেকে বের হতেই দেখে আনন্দ ওর এক বন্ধুর সাথে। কোন কথা না বলে চলে আসে। বাসায় আসার পর বিকেলে অনবরত ফোন, বার বার লাইন কেটে দেয়ার পর বিরক্ত হয়ে রিসিভ করল।
আনন্দ: লাইন কেটে দিস কেন?
অনু: আমার ইচ্ছা। ফোন করিস কেন।
তারপর অনেক অনুনয় বিনয় আনন্দর। আর এমন করব না। এরপর থেকে তুই যা বলবি সব করব, এবারের মত মাফ করে দে।।
চলিতে থাকিল তাহাদের........................................
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৩৬