যদি তাকে, কাছে পাওয়া, যেতো সারাদিন
একদিন, একা।
হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ি জলের অতল আকাশে হাঁ-মুখ বাড়িয়ে।
বন্ধুর বউ দেখে সঙ্গী চেয়েছি আমি।
বন্ধুবধুর তুলতুলে শিশু, কোলে তুলে শিশু।
বউ কি শিশু কি মায় প্রেমিকা জোটেনি অভাগা আমার।
মাছ হয়ে উঠি আমি। ধীরে ধীরে গাছ হয়ে উঠি।
নদী হয়ে উঠি আমি। ধীরে ধীরে বন হয়ে উঠি।
জল হয়ে উঠি আমি। চুপে চুপে স্নানঘরে জল হয়ে ঢুকি...
কিশোরী, বালিকা তবু গল-অঞ্চলে
নও-গম্বুজে লালচাকাদাগ, স্নানঘরে কাঁদে ছোটবোন আর
আমি কাঁদি হায়! ভুলে গেছি কথা পাহারা দেয়ার
কোনোদিন আর ভালোবাসবেনা কাঁদে একাকীনি ত্বক ছিঁড়ে খুঁড়ে
নধর শরীর ঘষে কালিমা উঠাতে চায়!
(ভাই! একবার অন্ধের মতো আঙুল বাড়িয়ে ছুঁয়ে দাও দেখি আমার শরীর)
জল আমার বড় একা লাগে।
জল আমার গলে বুকঢেউ বেয়ে ক্লেদ উঠে আসে।
জল আমার বড় একা একা লাগে।
পালাই পালাই।
আকাশের নীল অন্ধযষ্ঠি আশ্রয়ক্ষেতে দু'চোখ ডুবিয়ে দিয়ে বুঁদ হয়ে থাকি,
আশ্রয় পাই।
চোখ খুললেই
শকুনেরা সবখানে।
মাংস লোভের এ-শহর হায় শরীর শরীর
কোনো প্রাণ নাই; ওষ্ঠে কঠিন মাটি
অচেতন সব শর্ত এবং
প্রত্যয়নহীন প্রস্তুতি-পাশে ধুলো জমে ওঠে।
তাকে দূর থেকে চেয়ে দেখা যায়--
একফালি জানালায়
গরাদের ফাঁকে কাঙ্ক্ষিত আশ্রয় খোঁজে আতিপাতি।
বিদ্যুৎচকিত ও মৌনমুখ কেবলই ঘুরে ফিরে দাঁড়ায় আঁধারে।
ছায়াবালিকাটি আজ
আঙুল নামায় জলে,
(আহা! সে আমার প্রথম প্রেমিকা!)
আমি ওর
স্বপ্ন ও চোখের জলে শুয়ে থাকি শব্দহীন, অনুভূতিহীন
ঝিনুক হয়ে চিরদিন--
চিরদিন আমি তার নিষেধ-খেলার সাথী;
গোপন সুখ তার একে একে আমিই কি ভেঙেছি!
কতভাবে ডাকলাম কাছে
ও বালিকা তবু কিছুই বোঝেনি! এ-ই ধরে নেবো!
যে বালিকা আজ আঙুল নামালো জলে,
এত ভোরে, চারপাশে তার ইতিউতি ঘুরে গেছি শিমুলের ফুল।
ও বালিকা তবু কিছুই বোঝেনি!
(দৃষ্টিহীনের আঙুল বাড়িয়ে একবার ভাই ছুঁয়ে দাও দেখি আমার কপোল)
শুধু কখন সে চুপিসারে, একা
শিমুলের আবডালে বসা
পাখিদের, মেঘেদের, বাতাসের, পরাগের সাথে জলের কণার
ঘোরলাগা কী দারুণ ভালোবাসাবাসি
দেখে গেছে চুপচাপ
আমাকে বলেনি। গেল কি হারিয়ে!
এইভাবে আজো, একা।
হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ি জলের অতল আকাশে হাঁ-মুখ বাড়িয়ে।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৯:৫৫