পর্ব-৪
আমাদের আজকের পর্বটি আয়োজন করা হয়েছে একটি স্থির সময়ে, আলোকের বেগে গতিশীল মহাকাশ যানে। যার পিছনের পর্দাটি মূলত মহাকাশযানের একটি সচ্চ কাঁচের দেওয়াল। নিয়মিত ম্যাটার-এন্টি ম্যাটারের সংঘর্ষে সৃষ্ট পাওয়ার থেকে আমরা ছুটে চলেছি।
আজকের অথিতিবৃন্দের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি..........
আইনস্টাইনঃ নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী।
রবীন্দ্রনাথঃ এনার সাথে সকলেই একটু আধটু পরিচিত।
স্টীফেন হকিংঃ নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী, কেমিষ্ট ও মহাকাশ বিজ্ঞানী।
আমাদের যমরাজকে আজ একটু আটোসাটো মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ মুডে, চরম গাম্ভীর্যে দেখা যাবে এবং প্রতিটি শব্দের সাথে হু, হু করতে শোনা যাবে।
রবিঃ মানুষের রুচীবোধ কোথায় নেমে এসেছে দেখেছেন? রিকশা-বাস-ট্রাম-ট্রাক, গাড়ি, রেস্তরা, পার্ক যত্রতত্র কিস, ফোরপ্লে ও সেক্স করে বেড়াচ্ছে।
আইনস্টাইনঃ আসলে ছুটন্ত সময়ে, এটমিক প্রেমের মহত্ত্বই এই। সময় ও সুযোগের সর্বোত্তম ব্যবহার।
স্টীফেন হকিংসঃ ধরা যাক একটা ব্ল্যাকহোলে যদি সময়ের কাঁটা উল্টে দিয়ে আপনি সমগ্র বাৎসায়নের আসনসমূহ উল্টোতে থাকেন। অর্থ্যাৎ বিপরীতে ঠিক।
রবিঃ প্রশ্ন এই নয়, প্রশ্ন হল মানুষের চিরায়ত ভালোবাসার রূপটা নোংরামীতে ভরে যাচ্ছে। দীপকরা হয়ে যাচ্ছেন টিপক(???)। ক্যামেলিয়াকে নিয়ে লিখা হচ্ছে কমলার যৌবণরস। ভাবতে পারেন ভবিষ্যতে কি দেখতে পাবো ?
আইনস্টাইনঃ ঘটনার রূপ নয়, কামনার শব্দ নয়, সমস্তই একেকটি জরুরী কালপেন, শব্দের মহত্ত্বে নীতিবাগীশতা যে সমস্ত সময় গঠিত প্রলাপ তৈরী করে, তা ভ্রম মাত্র।
স্টীঃ বিভ্রান্ত হবেন না? একটি মাত্র রূপে এসে একক প্লানেটের দ্বন্দে, বিবেচনায় ভুল করবেন না।
রবিঃ মহত্ত্বম অন্ধকারাছন্ন যে সমস্ত ক্যাফেটেরীয়া, রেস্তরা, ঝোঁপ-ঝাড় বা পার্কে আসনে হেলান দিয়ে অথবা রিক্সায় বসে হুডটা টেনে দিলেন, কিংবা ডিস্কো-বান্দরে ভর করে ৪-চাকায় চেপে, অতঃপর অশ্লীল শব্দোৎসবে ভর করে ব্যক্তিত্ব হারালেন, এ দূষণের দায়ভার কে নিবে?
স্টীঃ প্রাগৈতিহাসিক রূচীবোধে স্কুল পালিয়ে যেতেই পারেন, তাই বলে একেকটি মহাবিস্ফোরনের পর, মহাবিশ্বের প্রসারতার সাথে আপনার ব্যস্ততাকে একত্রিত না করতে পারলে, নতুন আরেকটি মহাবিশ্বের জন্য সমন্বিত হবেন কিভাবে ?
আইস্টাইনঃ এইসব নিয়া চিন্তা কইরা বা কথা না বইলা একটা ফিশান ঘটাই, সব চুরমার কি বলেন?
রবিঃ তাতে আমার প্রেসটা যদি বন্ধ হইয়া যায়, মহৎ হইবার পারুম তো ? কিংবা ইতিহাসের পাতায় আমার নামটা থাকবো কি?
স্টীঃ একটু ধীরে সুস্থে বসুন, মাথা জ্যাম খায়া গেছে। দাড়ান, একজন সাইক্রিয়াটিস্টকে আসতে বলি।
লাল টকটকে টি-শার্ট, জীন্স আর সাদা কেডস্ েধীরে সুস্থে কালপেন করে আসছেন একজন সাইক্রিয়াটিস্ট, সুধি দর্শক ও পাঠকবৃন্দ, আমাদের ছেড়ে উঠবেন না, একটি বিজ্ঞাপন বিরতির পরই আমরা ফিরে আসছি..................।
(সময় কিন্তু, থেমেই আছে, পাঠক কিছু নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন না, সময় কিভাবে থেমে আছে। ব্যাখ্যা শুনুন অনুষ্ঠানের শেষের দিকে।)
সিগমুন্ড ফ্রয়েডঃ ধন্যবাদ এমন একটি প্রাণবন্ত আলোচনায় আসতে বলার জন্য। আপনাদের যুক্তিতর্ক উপভোগ্য কিনা এখনই বিশ্লেষণে যাব না, তার দায়ভার দর্শকের হাতে। যাই হোক, মানসিক ব্যালেন্স, ইমব্যালেন্স, রুচী-অরুচী এসব অপ্রাসঙ্গিকতা। মহাবিশ্বের গন্ডিটাতে না গিয়ে, কার্বন বেস্ড দু-পেয়ে হিউম্যান নিয়ে বলতে গেলে যদি বলি। মানুষের বিকাশের শুরুতে কাম-প্রেম সবই উন্মুক্ত ছিল। আধুনিক আই.টি ও টেলিকম টেকনোলজির কল্যানে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই তাও উন্মুক্ত হয়ে যাবে। আপনার বেড-রুমের কার্যকলাপ অচিরেই ইউ-টিউভে লাইভ চলে আসবে, স্যাটেলাইট প্রযুক্তির মাধ্যমে। তাহলে, কোথায় গেল সেই নীতিবাগীশ তর্ক। বরঞ্চ সাইকোলজির ভাষায়, যারা অংশগ্রহণ না করে যারা দেখছেন, আলোচনা-সমালোচনা করছেন, তাদেরকেই বিকৃত মানসিকতা সম্পন্ন বলতে হবে। সুস্থ বিনোদনের কোন ব্যবস্থা নেই, যুবক-যুবতীর অন্তরঙ্গ মুহূর্ত কাটানোর কোন স্থান নেই, ধর্মের বেড়ী পড়িয়ে ফায়দা লুটছেন হারেমের বিলাসিতায়।
চলবে.....................
(* অনুষ্ঠান শেষে যমরাজ বিগ বেং থেকে শুরু করে চরম সংকোচনের কিছু স্থির ভিডিও ট্র্যাক নিয়ে বসে থাকবেন, যখন যেখানে প্রয়োজন ঘুরে বেড়াবেন এবং সময়কে কড়ে আঙ্গুল দেখাবেন, সেই সাথে গতি ও স্পেসকেও।)