পর্ব-১
পাতালপুরীর এক সভাকক্ষে চরম আধুনিকতার ছোঁয়ায়, অত্যাধুনিক রুচীসম্মত ইন্টেরিওর ডিজাইনে ও জমঁকালো লাইটিংয়ের মাঝে যমরাজের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে টক শো........প্রেম, যৌণতা ও ভালোবাসা। আমাদের আজকের অতিথি সক্রেটিস ও সাশা গ্রে.....
সক্রেটিসঃ
গ্রীক দার্শনিক ও সৈনিক, যিনি পারিবারিক জীবনে অসুখী ছিলেন। ক্লাসিক্যাল গণতন্ত্রের যুগেও ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়ে নিজহস্তে হেমলক বিষপানে মৃ্ত্যুবরণ করেছিলেন।
সাশা গ্রেঃ
আধুনিক সভ্যতার সবচেয়ে বড় কর্পোরেট বিজনেস "পর্ণোগ্রাফীর সবচেয়ে আলোচিত, সুদর্শনা, সেক্সিয়েস্ট ফিগার ও এনারজেটিক পর্ণোস্টার। যার রেংকিং ইর্ষান্বিত করে অন্য পর্ণোস্টারদের।"
যমরাজ এখানে নিশ্চুপ তিনি শো-কেসের পুতুলের মতই থাকবেন সক্রেটিসের কাম নিয়ন্ত্রণে ও সাশা গ্রের সুরক্ষায়।
সক্রেটিসঃ জানতাম তুমি আসবে আসতেই হবে এই ধারিত্রীর বুকে।
সাশা গ্রেঃ ধন্যবাদ।
সক্রেটিসঃ বলো তো পৃথিবীতে সবচেয়ে উপভোগ্য বিনোদন কি?
সাশা গ্রেঃ সেক্স।
সক্রেটিসঃ এটা তোমার ভিউ, আমার মতে মিউজিক, পারিবারিক সান্নিধ্য বিশেষত শিশু ও বৃদ্ধদের সাথে এবং সৃষ্টিশীল কাজ।
সক্রেটিসঃ আছো কোথায়?
সাশা গ্রেঃ মর্ত্যে বা পাতালপুরীতে।
সক্রেটিসঃ ধরো শিবের সাথে তোমাকে একটি কক্ষে রেখে দেওয়া হল অনন্তকাল, তুমি কি সুখী হবে?
সাশা গ্রেঃ আমি পরম সুখে কয়েকবার ভাসার পর ক্লান্ত ও ক্ষুদার্থ হব। খাবার পেলে আবার, আবার.......
সক্রেটিসঃ একঘেঁয়ে মনে হবে না?
সাশা গ্রেঃ এজন্যই তো বিভিন্ন আসন ও বাৎসায়ন আছে।
সক্রেটিসঃ তুমি কখনও প্রেম করেছো?
সাশা গ্রেঃ ফোরপ্লে বা শৃঙ্গারইতো সর্ব্বোচ্চ প্রেম।
সক্রেটিসঃ পার্কে বসে বাদাম চিবানো, হাত ধরে কয়েক মাইল পাড়ি দেওয়া, বাবা-মায়ের চোখ এড়িয়ে দেখা করা, শত ব্যস্তাতায়ও ফোনে একটু খোঁজ নেওয়া, এরকমটা প্রেম হয়না? কিংবা অপলক চোখে চোখে তাকিয়ে থাকা।
সাশা গ্রেঃ সবকিছুর আল্টিমেটই হচ্ছে সেক্স।
সক্রেটিসঃ কখনও ভালোবেসেছো?
সাশা গ্রেঃ ভালোবাসার গোপন নাম হচ্ছে কাম।
সক্রেটিসঃ তাহলে কাম পরিতৃপ্তির পরই কি ভালোবাসা শেষ?
সাশা গ্রেঃ (নিশ্চুপ)।
বেসমেন্ট অব পর্ণোগ্রাফীঃ
পারিবারিক শান্তি অনয়নে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক অক্ষুন্ন রাখতে ও মানুষের টিকে থাকার তাগিদেই নারী ও পুরুষ উভয়ের সর্ব্বোচ্চ সন্তুষ্টি অজর্নের জন্য চিত্রিত যৌনাচরণ শিক্ষামূলক চলচিত্রের নাম পর্ণোগ্রাফী, যা যথেষ্ট বয়স ও স্বশিক্ষার স্তর পাড়ি দেওয়ার পরই একজন আধুনিক মানুষের দ্বারে পৌছানো উচিত। অন্যথায় যা ঘটছে আশে-পাশে দেখতেই পাচ্ছেন। যারা শিলা কি জওয়ানি দেখে চিৎকার করে উঠেন আবার তারাই গোপনে মোড়কহীন ডিভিডি/সিডি বাজার হতে কিনে আনেন। আমাদের পাঠ্যক্রমে যদি নূণ্যতম যৌন শিক্ষা এবং সামাজিক যৌনাচার নীতিমালা থাকত তবে হয়ত একটা কথা ছিল। নপুংসকরাতো চিৎকার করবেনই বাচ্চারা খারাপ হয়ে যাবে, দেশ রসাতলে যাবে(!!!!!)।
একবার একটা সমাধান ভেবেছিলাম প্রতিটি ট্রাফিক মোড়ে একটি বিশাল ফ্ল্যাট স্ক্রীণে দিনরাত ২৪ ঘন্টা উন্নত-অনুন্নতমানের পর্ণোগ্রাফী প্রদর্শন করা গেলে অন্তত শিক্ষার্থীদের টাকা চুরিও কম যেত, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা মারও কম খেত এবং অনাহরেও কম থাকত, জাতির স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটত, তখন রসময় থেকে রবীন্দ্রনাথ না পড়ে বাৎসায়ন থেকে রবীন্দ্রনাথ পড়লেই যুব সমাজ ঢেঢ় শিক্ষিত হতো।
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ
১. অপ্রাপ্ত(!!) বয়স্কদের জন্য নিষিদ্ধ।
২. দলবদ্ধভাবে দেখা নিষেধ।
৩. পর্ণোগ্রাফী কাম উদ্দীপক, অবিবাহিত হলে চরিত্রের স্থলনসহ(!!) নানা প্রকার স্বাস্থ্যজনিত ক্ষতির সম্মূখীন হতে পারেন।
৪. মনিটর অফ করলেই হবে না স্পিকারও অফ করতে হবে নয়তো দুষ্ট স্কুল পড়ুয়ার দল বাবা মায়ের হাতে ধরা খেতে হবে।
সবশেষে একটি জোকস্
রাতুল মনিটরের দিকে ক্ষুদার্থ পশুর মত তাকিয়ে আছে।
রাতুলের মা রুমে ঢুকতেই রাতুলের অজ্ঞাতে রাতুলের পিছনে দাড়ানো রাতুলের বাবা চিৎকার করে উঠলেন "দেখছো তোমার ছেলে গত এক ঘন্টা ধরে পর্ণো দেখছে।"
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০১২ রাত ৯:১৬