: আপনি কখনও মহামানব দেখেছেন কি? এমন প্রশ্ন শুনলে হয়তো আপনার মাথার রগ গুলো একটু ভাঁজ হবে, এই লোক কি বলছে? মহামানব? আপনার মাথায় তখন শহর এলাকার বাসের তাড়া, কেন না পরের বাস মিস করলে আপনার টিউশনিতে আর যাওয়া হবে না। অর্থাৎ চাকরির পর টিউশনি করে তারপর বাসায়, যাই হউক, ভদ্রলোক মিস্টি একটু হেসে আবার শুধালেন, কি? পারলেন না তো উত্তর দিতে? ফয়েজ সাহেব একটু ভড়কে গেলেন, কি জানি জানতে চাচ্ছিলো? মহাপুরুষ? না না, মহা....ধূর মরুক গে, ফয়েজ সাহেবের দোষ দিয়ে লাভ নেই কেন না ৪৪/৪৫ বছর চলছে, একটানা বিশ বছর চাকরি, মাথার চুলে সাদা পাকা ভরে গেছে, তিনি পরের বাসের জন্য একটু ব্যস্ত হলেন,
ঠিক তখন তিনি আবারও প্রশ্নটি শুনলেন, আপনি কখনো মহামানব দেখেছেন কি? দাদা, উত্তর এখনো পাই নি কিন্তু। ফয়েজ সাহেবের মাথা আবার ঢুকে গেলো মহাপুরুষ না মহামানব এই জটলায়, তিনি বাস দেখে ও না নড়ে চিন্তা করছেন একমনে, সফেদ দাড়ি ভদ্রলোক তাকে ইশারায় বাস দেখালেন, ফয়েজ সাহেক বিদ্যুত গতিতে বাসে উঠে গেলেন এবং কি রহমত একটা সীট ও পেয়ে গেলেন, যেখানে ঝুলে ঝুলে প্রতিদিন যেতে হয় তাকে সেইখানে এতবড় পাওয়া তার জীবনে পেয়েছিলেন কিনা তার জানা নাই, এত দ্রুত কি করে তিনি বাসে উঠলেন আবার সীট ও পেয়ে গেলেন, তাহলে কি ওই ভদ্রলোকই কি মহামানব? তার চিন্তা আবারও থাকে নিয়ে গেলো অতীতে, তিনি যদি ও এই মুহুর্তে অতীত ভাবতে চান না তবে কেন জানি তার ভাবতে ইচ্ছা করছিলো, তিনি অতীতে ঢুকেই গিয়েছিলেন কিন্তু কন্ডাকটারের আওয়াজে তার তন্দ্রা কেটে গেলো, তিনি প্রায় কাছাকাছি চলে এলেন, ভাড়া মিটিয়ে তিনি বাস থেকে নামলেন এবং তিনি খুবই অবাক হলেন যে তার ক্লান্তি, অবসাদ, শ্রান্তি সব এক নিমিষে কোথায় যেন উবে গেলো, তিনি পুরো একজন পচিশ বছরের ছেলেদের মতো হাটা চলা করছে, রাস্তা পার হচ্ছে, মুখে মৃদু সিটি ও দিচ্ছিলেন।
এইসব বিষয়ে রীতিমতো তার চমক লেগে গেলো, তিনি ঝাড়া এক দৌড় দিলেন, আহা, এত ভালো দৌড়বিদ ছিলেন তিনি অথচ সামান্য কিছু টাকার কারণে তার নাম উঠান নি হেডস্যার, কিন্তু এখন তিনি যে ভাবে দৌড় দিলেন তা যে কোন মোটরসাইকেলের আগে যেতে পারবেন এ বিষয়ে তিনি কনফার্ম হলো হ্রষ্টচিত্তে।
প্রতিদিনের মতো তার গিন্নি আগে ঠান্ডা একগ্লাস পানি দিবেন লেবু দিয়ে, তা পান করে গোসলে ঢুকেন। আজ ব্যাতিক্রম করলেন না, কিন্তু গোসলে গিয়ে তিনি যে ভাবে পানি ঢালতে লাগলেন তাতে মনে হতে পারে একজন যুবক বা কিশোর বাথরুমে সাতার কাটছে, বাহির থেকে গিন্নী চেচিয়ে উঠলেন, কি গো? আজ যে বাথরুমটাকে পুকুর বানিয়ে দিচ্ছো যে? গিন্নীর কথায় তার খারাপ লাগে না বরং রাত্রের হিসাবের কথা চিন্তা করে তার বেশ ভালই লাগে, সাতার কাকে বলে তা তখন না হয় বুঝিয়ে দেওয়া যাবে খন।
ফয়েজ সাহেবের যে খটকা লাগেনি তা নয়, তিনি চা পান করতে করতে সেই অদ্ভূত লোকটার কথা ভাবছিলেন, কোন কথা বার্তা ছাড়া এতো পরিচিত কোন মানুষ সম্পূর্ণ চেনা জানা ছাড়া এই ধরণের প্রশ্ন করতে পারে তা কোন ভাবে ফয়েজ সাহেবের মাথায় আসে না, সে চা চুমুক দিচ্ছে আর ভাবছে তার শরীর সব কিছু ঠিক আছে কেবল কোথায় যেন একটা বদল হয়েছে যা সে ধরতে পারছে না, তিনি পরের দিন স্ত্রীকে বৃত্তান্ত বললেন, তার স্ত্রী এমনেতেই সন্দেহ বাতিক, কি বুঝতে কি বুঝে শেষে তারা সাইকিয়াত্রিষ্টের শরপান্ন হলেন। (আজ এ পূর্যন্ত, কথা দিচ্ছি, গল্পটা কিছুটা ভয়ের আবার কিছু ভদ্র সেক্সের, কারো আপত্তি থাকলে সেটা হবে ভিন্ন কথা, আমি সেক্স বলতে বুঝি শিল্প যা অনেকে করে বেচে বর্তে আছে, যাই হউক, বাদ বাকীটা শুরু করবো যদি দেখি পাঠকরা আমার থেকে এইরুপ গল্প চাই, আপাতত বিদায়, ধন্যবাদ সবাইকে।