সূরা নিসার - ১৩৬ নং আয়াতে আল্লাহপাক বলেছেন-
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন কর এবং বিশ্বাস স্থাপন কর তাঁর রসূলও তাঁর কিতাবের উপর, যা তিনি নাযিল করেছেন স্বীয় রসূলের উপর এবং সেসমস্ত কিতাবের উপর, যেগুলো নাযিল করা হয়েছিল ইতিপূর্বে। যে আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাদের উপর, তাঁর কিতাব সমূহের উপর এবং রসূলগণের উপর ও কিয়ামতদিনের উপর বিশ্বাস করবে না, সে পথভ্রষ্ট হয়ে বহু দূরে গিয়ে পড়বে।
আল্লাহর নির্দেশ ঈমান আনতে হবে রসূল (সাঃ) সাহাবাদের মত । যে কেউ আল্লাহকে বিশ্বাস করবে এবং কালেমা পড়ে মুসলমান হয়ে যাবে তার জন্য হারাম বিষয়গুলো হারাম হয়ে যাবে । তখনই হারামকে হারাম মনে করতে হবে । এটিই ঈমানের সর্ব নিম্ন স্তর । সব পাপকে অগ্রাহ্য করতে না পারলেও সে তাকে পাপ বলে মনে করে । পাপকে পাপ মনে করলেই তো তওবা করবে । কিন্তু যদি কেউ নিজেকে মুসলমান দাবী করে কিন্তু পাপ বলে মনে না করে তাহলে বুঝতে হবে ঈমানের সামান্য আলামতও জীবিত নেই । ঈমান মরে গেছে ।
আল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ বা স্রষ্টা নেই । এটা শুধু মুখে বললে হবে না, অন্তর দিয়ে এটাকে সত্য জানতে হবে । যে এটাই সত্য । আমার জানার, মানার বা বুঝার ঘাটতি আছে কিন্তু এটাই চূড়ান্ত সত্য ।
যদি ঈমান না থাকে তাহলে আল্লাহর রহমত ও উনার ভান্ডার থেকে বন্চিত হব । কত নিঃসন্তান লোক রয়েছে, যাদের স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও কোন সন্তান-সন্ততি নেই । কত লোক আছে, যারা ওষধ খাওয়ার পরও রোগ থেকে মুক্তি পাচ্ছে না । কত লোক আছে টাকা থাকা সত্ত্বেও মনে সুখ-শান্তি নেই ।
আল্লাহতায়ালার সাহায্য আসে ঈমান ও ইয়াকিনের উপর । ঈমানদের জন্য আল্লাহ তার কুদরত ব্যবহার করে লাঠিকে সাপে পরিণত করে দেন, আগুনকে বাগানে পরিণত করে দেন , সাগরের মধ্যে রাস্তা তৈরী করে দেন ।
আল্লাহর থেকে নেয়ার উপায় কি ? ঈমানকে মজবুত করতে হবে । হালাল ও হারাম মেনে চলতে হবে । তারপর আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে হবে । সূরা ফাতেহায় আমরা বলি- আমরা তোমারই ইবাদত করি এবং তোমারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি ।
ঈমান যখন থাকবেনা তখন মানুষের মধ্যে মুনাফেকীর আলামত প্রকাশ পাবে । সে মিথ্যা কথা বলা, আমানতের খেয়ানত করা এবং ওয়াদা ভঙ্গ করা এসবকে গুন মনে করবে । আর যার মধ্যে ঈমান থাকবে সে এসব পাপ করে ফেললে তওবা করবে এবং নিজেকে সংশোধন করবে । ঈমান শূন্য আমলের জন্য আল্লাহর কোন ওয়াদা নেই । সাহাবা কিরাম আগে ঈমান শিখেছেন , ঈমানকে মজবুত করেছেন , তারপর আমল করেছেন ।
হযরত হানযালা (রাঃ) মসজিদে বসে আছেন । এক ব্যাক্তি এসে খবর দিল ওনার বাড়ীতে আগুন লেগেছে, তিনি বিশ্বাস করলেন না । আরেক ব্যাক্তি এসে খবর দিলো - হানাজালা তোমার বাড়ীতে আগুন লেগেছে । তিনি তাকেও বলেলেন , না আমার বাড়ীতে আগুন লাগেনি । আরেক ব্যাক্তিও এসে একই খবর দিলো । তিনি তাকেও একই কথা বলে দিলেন । চতুর্থ ব্যাক্তি এসে বলল, তোমার আশে পাশের বাড়িতে আগুন লেগেছিলো কিন্তু তোমার বাড়ীতে এসে আগুন নিভে গেছে । তিনি উত্তর দিলেন- আমার বাড়িতে কিছুই হয় নি । কারণ, কিভাবে আমার বাড়ী ধ্বংস হবে ? অথচ আমি দোয়া পড়ে ঘর থেকে বের হয়েছি । আল্লাহ তায়ালা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না ।
সাহাবী আবু দারদা (রাঃ) সংবাদ বাহকের কথা বিশ্বাস করেন নি । কারণ তিনি আস্হা রেখেছেন আল্লাহর উপর । আর আল্লাহ বান্দার সঙ্গে ওই রূপ ব্যবহার করেন, যে রূপ ধারণা বান্দা আল্লাহর ব্যাপারে পোষণ করে ।