বাংলাদেশি ব্যবহারকারীরা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছিলেন, সামাজিক নেটওয়ার্ক ফেসবুক কীভাবে লাল-সবুজে ভরে গিয়েছিল। ঢাকার গাড়িতে-বাড়িতে, দেয়ালে, পত্রিকায়, চিবুকে-চোয়ালে পতাকার যে ঢল, তার ঢেউ আছড়ে পড়ে ফেসবুকেও। বাঙালির বিজয়ের মাসের গোড়ায় দু'একজনের প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তনের মাধ্যমে এর সূচনা। ১৬ তারিখ তা প্রস্ফুটিত। প্রোফাইলে প্রোফাইলে লাল-সবুজের খেলা। এর মাঝে অনেকের অলক্ষ্যে খোদ ফেসবুকও তার রঙ বদল করেছে। তাতে আমাদের লাল নেই বটে, সবুজ আছে স্বমহিমায়।
সবুজ? নীলের প্রতি বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রীতি কিংবা পাগলামির কথাই তো জানা। গত অর্ধযুগে ফেসবুকের ডিজাইনে বড় ধরনের রদবদল হয়েছে; কিন্তু রঙ সেই ডিপ ব্লু। লোগো থেকে শুরু করে সাইন-আপ পেজ, মোবাইল এপ্লিকেশন, এমনকি সাইট পপ-আপও গাঢ় নীল। এর একটি কারণ অনলাইন রঙ হিসেবে নীলের বনেদিয়ানা। বিজনেস ব্লগ 'কালার লাভারস' এক সমীক্ষায় দেখিয়েছে, বিশ্বের শীর্ষ একশ' সাইটে রঙ হিসেবে লালের পরই নীলের স্থান। ফেসবুকের ক্ষেত্রে রয়েছে আরও কারণ। কয়েক বছর আগে এক অনলাইন টেস্টে অংশ নিয়ে এর তরুণ প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ বুঝতে পারেন, তিনি প্রায় বর্ণ-অন্ধ। কেবল নীল রঙ চেনেন। পরে নিজেই বলেছেন, 'নীল আমার জন্য সমৃদ্ধতম রঙ- নীল যে কোনো কিছুই আমার কাছে স্পষ্ট দৃশ্যমান।
নীল ফেসবুকের সবুজ হওয়ার গল্পও কম মজার নয়। অবশ্য এর চৌদ্দআনা কৃতিত্ব পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিসের। তারা ফেসবুককে সবুজ হতে এক অর্থে বাধ্য করেছে। গ্রিনপিসের পরিচয় নতুন করে দেওয়ার নেই। ষাটের দশকের শেষ দিকে আলাস্কার ভূমিকম্পপ্রবণ আমচিটকা দ্বীপে পরমাণু অস্ত্রের ভূগর্ভস্থ পরীক্ষার প্রতিবাদে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় গঠিত নাগরিক সংগঠন 'ডোন্ট মেক ওয়েভ কমিটি' এক পর্যায়ে গ্রিনপিস নাম ধারণ করে। গত চার দশকে এর কার্যক্রম ৪০টির বেশি দেশে ছড়িয়েছে। নিজেদের কর্মসূচির পক্ষে তারা প্রতিবাদ কর্মসূচি, লবি ও গবেষণা-সমীক্ষা চালিয়ে থাকে।
দুই বছর আগে গ্রিনপিসেরই অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছিল, ফেসবুকের ডাটা সেন্টারগুলো চলে কয়লা-উৎপাদিত বিদ্যুতে। অর্থ্যাৎ লাল। গ্রিনপিস কর্মসূচী গ্রহণ করে লাল ফেসবুককে কীভাবে সবুজ করা যায়।
পরিবেশবাদী সংগঠনটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিল ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গের কাছে। তারা হাতে-কলমে বুঝিয়ে এসেছিলেন কয়লাচালিত বিদ্যুতের বদলে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করলে পৃথিবীর কী কী সুবিধা। ফেসবুকের মতো জনপ্রিয় মাধ্যমের 'গ্রিন' হয়ে যাওয়ার তাৎপর্যই-বা কী। কাঙ্ক্ষিত সাড়া না মেলায় এ নিয়ে প্রচার শুরু করে গ্রিনপিস।
এ বছর এপ্রিলে ফেসবুককে লক্ষ্য করে তারা 'হাউ ডার্টি ইজ ইউর ডাটা?' শিরোনামে একটি রিপোর্টও প্রকাশ করে। তাতে হিসাব করে দেখায়, ৫৩.২ শতাংশ বিদ্যুৎ ফেসবুক কয়লা থেকে উৎপাদন করে থাকে। দাবি জোরদার করার জন্য ফেসবুকেই বেশ কয়েকটি গ্রুপ ও পেজ খোলে। এর মধ্যে 'আনফ্রেন্ড কোল' বলে পেজটিতে লাইক দিয়েছে সাত লাখেরও বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী।
কারো কারো হয়তো মনে আছে,সামহয়ারইনব্লগেই এ নিয়ে লিখেছিলাম। অ
অবশেষ, ডিসেম্বরের ১৫ তারিখ গ্রিনপিসের দাবি মেনে নেয় ফেসবুক। এক ঘোষণায় জানানো হয়, তারা কয়লা উৎপাদিত বিদ্যুৎ থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে সরে যাচ্ছে। গ্রিনপিস জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক উষ্ণতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দারুণ শক্তি জোগাবে।
আমাদের জন্য বাড়তি সুসংবাদ হচ্ছে, লাল ফেসবুক সবুজ হল বাংলাদেশের বিজয়ের দিনে। শুভ সবুজ ফেসবুক।
আলোচিত ব্লগ
কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।
এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?
সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী
বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন
=বেলা যে যায় চলে=
রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।
সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন