ঘটনা ১:
আমি তখন ৩য় কি ৪র্থ সেমিস্টারে পড়ি । একটা ভাইয়া আছে আমার University-র তার অভ্যাস হলো হাতের মধ্যে খোঁচা দিয়ে কথা বলা। যেটা আমার ভীষণ অপছন্দ । তাকে বার বার মানা করার পর ও সে এই কাজ বার বার করতো। তো একদিন কোথা থেকে এসে ভীষণ জোরে আমার হাতে জোরে একটা চিমটি দিয়ে বসলো। আমি হঠাৎ এতো রেগে গেলাম যে চিল্লায় উঠলাম ।
সে ভয়ে কাচুমাচু হয়ে বললো,
“ সরি, আর হবেনা বইন । সরি সরি সরি আমি really সরি” ।
আমি তখন রাগ টা চেপে রেখে বললাম যে “আমি কিন্তু আগে ও বলসি আমার খোঁচাখুঁচি পছন্দ না ,তারপর ও তুই এরকম করলি !”
ঠিক তারপরের দিনই সে একই কাজটা আমার সাথে আবার করলো! মানে চিমটি ! এবার আমাকে আর কে থামায় ! চোখে পানি এসে পরল ব্যথায় । সোজা হনহন করে হেঁটে চলে যাচ্ছিলাম ওর সামনে থেকে ।
ভাইয়া এসে যথারীতি আবার শুরু করলো “সরি বইন সরি।Extremely সরি”।
“আপনি কে?আপনাকে কাল কে ও আমি মানা করেছি যে আমার সাথে এসব করবেননা ।কিন্তু আজই আপনি ......!”
এরপর সে আমাক যতোই বুঝানোর চেষ্টা করে আমার রাগ আর ভাঙ্গেনা । ভাঙবেও না । কারন আমি একবার রেগে গেলে কারো সাদ্ধি নাই যে আমার রাগ ভাঙ্গাবে ।(একটু পাজি আর কি) মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম যে এই লোকের সাথে জীবনেও আর কথা বলবনা ! Everything is finished!
দুইদিন পর আমি University-র সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠছি তিন তলার সিঁড়িতে উঠতেই দেখি একতলার সিঁড়ি থেকে কে জেনো আমার নাম ধরে ডাকছে ।আমি সিঁড়ির কোনা দিয়ে নিচে তাকাতেই দেখি সেই ভাইয়া বত্রিশটা দাঁত বের করে ফ্যাল ফ্যাল করে হাসছে আর হাত নাড়ছে ।আমি ও সাথে সাথে উপর থেকে হাত নেড়ে বত্রিশটা টা দাঁত বের করে দিলাম। হঠাৎ মনে পরল আরে, এর সাথে না আমার ঝগড়া! সাথে সাথে বত্রিশটা দাঁত বন্ধ করে জোরে হহূঃ বলে জলদি ভাগতে লাগলাম।পিছন থেকে সেই ভাইয়ার অট্টহাসি শুনতে পেয়ে যা লজ্জাটাই না পেয়েছিলাম সেদিন
ঘটনা২:
আর একটি ঘটনা যেটা এখন বলবো , বেশির ভাগ মানুষ এটা শুনে হেসেছে সাথে আমাকে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ার উপদেশ দিয়েছে।
এটা আমার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা এর সময়। তাড়াহুড়া করে পরীক্ষা দাওার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে বাস এ উঠলাম। রাস্তার মাঝখানে এসে মনে পরল যে আমি আমার আইডি কার্ড টা আনতে একদম ভুলে গেছি! এখন কি হবে!আমার University-তে আবার আইডি কার্ড ছাড়া ঢোকা নিষেধ । আল্লাহ আল্লাহ্ করতে করতে University-তে গিয়ে Gate এ ঢোকার সময় বললাম যে খালা আইডি কার্ড তো আনি নাই ,আমার পরীক্ষা তো শুরু হয়ে যাচ্ছে ।Please যেতে দেন না খালা । বলে যে না অফিস থেকে পারমিশন আগে আনেন,তারপর। খালা অফিস যেতে অনেক টাইম নষ্ট হবে । “নানা হবেনা” বলেই একপ্রকার হাত ধরে টেনে অফিস নিয়ে গেলেন! আসে পাশের স্টুডেন্টরা আমার দিকে এমন নজরে তাকাচ্ছিল যে মনে হচ্ছিল আমি কি জেনো করে ফেলেছি ! যাইহোক অফিস এ লম্বা মতো
এক স্যার , জিজ্ঞাস করলেন
স্যারঃ কি সমস্যা?
আমিঃ স্যার আইডি কার্ডটা ভুলে বাসায় রেখে আসছি।
স্যারঃ বাসা কই?
আমিঃ জী পুরান ঢাকা ,লালবাগ।
স্যারঃ আচ্ছা অনেক দূর তো ! আইডি নম্বরটা বলেন।
আমিঃ ০*-১২**০-১
স্যারঃ মায়ের নাম? বাবার নাম ? ঠিকানা ?
আমিঃ ___,___,_-
এত প্রস্নের পর প্রশ্ন করে যাচ্ছে আমি তো শেষ।
পরে স্যার যখন বুঝতে পারলো আমি real স্টুডেন্ট উনি আমকে একটা ফরম দিলেন বললেন যে পুরন কর।আমার তো মেজাজ খারাপ।হায়রে আজ পরীক্ষাটা বুঝি ৩০মিনিট দেরীই হয়ে গেলো। ফরম পুরনের পর উনি আমাকে একটা কার্ড দিয়ে বললেন আই নিন আপনার টেম্পোরারি আইডি কার্ড। আমি কার্ড নিয়ে দৌড় দিয়ে লিফট ধরলাম।কিন্তু কপালের দোষ কারেন্ট গিয়ে লিফট গেলো আটকে।মেজাজ পুরাই হট। কারেন্ট আসলো তারপর পরীক্ষার হলে গিয়ে বসলাম আমার সিটে । দেখলাম তিনজন ম্যাম। একজন ম্যাম একজন একজন করে সবার সিটের কাছে গিয়ে বলছে যে “Wear your id please”.
আমি এইটা দেখে একদম মাথা নিচু করে ঝুকে খাতার মধ্য গভীর মনোযোগ দিয়া লিখা শুরু করে দিলাম। যাতে আমারা কাছে এসে জিজ্ঞাস না করে আইডি কই ? নাহলে আবার ব্যাগ থেকে টেম্পোরারি আইডি কার্ড বের করে কারন দর্শাইতে হবে! এমনিতেই নিচে অনেক টাইম নষ্ট করে আসছি ,আর পারবনা।
তো ম্যাম আমার কাসে এসে বললেন “Excuse me, Wear your id please!O…o….You have already,sorry” বলে ম্যাম চলে গেলো। আমি খাতা থেকে মাথা উঠিয়ে ভাবতে লাগলাম “ম্যাম কি বল লো?! You have already! মানে কি!! ম্যাম কিভাবে জানলো আমার ব্যাগ এ টেম্পোরারি আইডি কার্ড আছে !” ভাবতে ভাবতে গলায় হাত দিয়ে দেখি এ কি! আমার আইডি কার্ড দেখি আমার গলায় ঝুলছে !! ৫মিনিট নিজের কর্ম দেখে স্তব্ধ হয়ে ছিলাম সেদিন পরীক্ষার হলে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০১১ দুপুর ১২:৪৪