Review: The Amazing Spider-Man (2012)
IMDb Rating: 7.5 (Too overrated)
RT “Fresh” Rating: 73% (Score 6.7)
Metacritic Score: 66/100
Box office: $748,605,830
মাঝে মাঝে কিছু মুভি দেখে আমাদের মনে হয় যে মুভিটা না বানালেই বোধহয় ভালো হত, এই মুভিটা সেরকম একটা মুভি। স্পাইডারম্যান মুভি সিরিজ অত্যন্ত সফল একটা সিরিজ যেটা আমাদের অনেকেরই ফেভারিটের তালিকায় আছে। আমি নিজেও স্পাইডি এর ভক্ত, এই সিরিজের প্রত্যেকটা মুভিই উপভোগ্য এবং মেকিংও ছিল বেশ ভালো। অনেকে তো স্পাইডারম্যান ২ কে ডার্ক নাইট এর চেয়েও উপরে রাখেন, স্পাইডারম্যান নিঃসন্দেহে সুপারহিরো জেনারের অন্যতম সেরা মুভি সিরিজ।
এই সিরিজটা কিন্তু খুব বেশী পুরানো নয়; স্পাইডারম্যান মুক্তি পেয়েছিলো ২০০২ সালে, দ্বিতীয় মুভিটি ২০০৪ সালে আর তৃতীয়টি ২০০৭ সালে। অর্থাৎ আমরা প্রায় সবাইই মুভিগুলো দেখেছি, এবং আমাদের মনের ভেতরে এর অভিনেতা অভিনেত্রী বা কাহিনী এখনও ভালোভাবেই গেঁথে আছে। যখন শুনেছিলাম নতুন স্পাইডারম্যান ৪ আসছে তখন থেকেই আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিলাম, হঠাৎ শুনতে পেলাম যে এই মুভিটি দিয়ে সিরিজটিকে আবার “রিবুট” করা হচ্ছে- যেমনটি করা হয়েছিলো নোলানের ব্যাটম্যান সিরিজে। মুভির পরিচালক, অভিনেতা এবং অভিনেত্রী সবাইকেই হঠাৎ করে বদলে দিয়ে নতুন করে আবার সিরিজটা শুরু করায় বেশ বিরক্ত হয়েছিলাম। সন্দেহ করেছিলাম যে হয়তো আগের স্পাইডারম্যান কে নতুন স্পাইডারম্যান ছাপিয়ে যেতে পারবে না, মুভিটা দেখার পর সেটাই প্রমানিত হল। সত্যি কথা বলতে কি, আমার কাছে এই স্পাইডারম্যান কে পুরনো স্পাইডারম্যান এর ধারেকাছেও মনে হয়নি।
যতই রিবুট হোক আর নতুন নায়ক নিক, স্মৃতিতে তো এখনও আগের স্পাইডারম্যান (টবি) টাটকা। অ্যান্ড্রু গারফিল্ড ছেলেটা ভালোই অভিনয় করে, The Social Network মুভিতে তার অভিনয় বেশ ভালো লেগেছিল। কিন্তু তাঁকে স্পাইডারম্যান এর চরিত্রে সেভাবে মানায়নি। প্রত্যেকটা সিনে নিজের অজান্তেই আপনি আগের স্পাইডারম্যান এর সাথে তুলনা করতে থাকবেন আর মেজাজটা খারাপ করবেন! মুভির মেকিংএ অনেক দুর্বলতা ছিল, পরিচালকের (মার্ক ওয়েব) এই ধরণের একটা মুভি তৈরি করার সামর্থ্য আছে কিনা সেটাও একটা ব্যাপার। তিনি এর আগে মাত্র একটা মুভিই বানিয়েছেন, সেটা হচ্ছে (500) Days of Summer। মুভিটা খুব আহামরি কিছু না, মাত্র একটা মুভির অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি স্পাইডারম্যান এর মত বিগ বাজেটের মুভি (যেটার প্রত্যাশার চাপ অনেক) করার সাহস করলেন কীভাবে কে জানে। আর মারভেল যে কি মনে করে ওয়েবের মত একজন মিউজিক ভিডিও নির্মাতাকে স্পাইডারম্যান মুভি তৈরি করতে দিল সেটা জানতে খুব আগ্রহ হচ্ছে। মুভিটা সবদিক মিলিয়েই আগের স্পাইডারম্যান এর চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে। সেই পুরনো মুভি দেখে যেরকম এনজয় করেছি, সুক্ষ হিউমারগুলি উপভোগ করেছি তার কিছুই এটাতে পাইনি। অভিনয় অনেক মেকি লেগেছে, কাহিনী, দৃশ্যায়ন বা চিত্রায়নও তেমন ভালো লাগেনি। এই ধরণের একটা মুভিতে CGI অনেক গুরুত্বপূর্ণ, সেটাও আশানুরুপ হয়নি। ভাবছি ২৩০ মিলিওন ডলার গেলো কোথায়?!
মুভির কাহিনী দেখে মনে হয়েছে সবকিছুই যেন Pre-Planned. পিটার এর বাবা-মা যেভাবে চলে গেলেন, এরপর তার চাচা চাচির সাথে তার যে ইমোশনাল বিল্ড-আপ সেটা তৈরিই হয়নি। এমনকি নায়িকার সাথে পিটার এর সম্পর্কটাও একেবারে হঠাৎ করেই হয়ে গেলো, দেখে মনে হয়েছে যে একদম নবিস একজন স্ক্রিনরাইটার আর পরিচালক মিলে মুভিটি তৈরি করেছেন। পিটার যখন যেটা চায় সেটাই হয়, সে ডঃ কনরস এর সাথে দেখা করতে যায়-সেখানে কাকতালীয়ভাবে (!) একজন ইন্টার্ন এর কার্ড পেয়ে যায়। কপালগুনে সে তার ক্রাশকেই গাইড হিসেবে পেয়ে যায়, নায়িকা সব বুঝতে পারলেও কিছুই বলল না! একদিন হঠাৎ করে সে তার বাবার ডায়রি পেয়ে যায় আর সেভাবেই সে ডঃ কনরস কে সঠিক ইকুয়েশনটি বাতলে দিতে পারে। এমনকি একদম হঠাৎ করেই সে সঠিক জিন সিকোয়েন্সটি বের করে ইঁদুরের শরীরে সফলভাবে ব্যাবহার করতে পারে (মারহাবা!)। এই ধরণের কাজ যে কতটা কঠিন আর কতটা time consuming সেটা বোধহয় পরিচালক সাহেবের জানা নেই। এমনকি পিটার অত্যন্ত শক্ত মাকড়সার জাল তৈরি করার একটা মেশিনও তৈরি করতে পারে, যেটা দেখে মনে হয়েছে যে হয়তো তার কাছে আলাদীনের চেরাগ টাইপ কিছু একটা আছে! আগের স্পাইডারম্যান এর মত নিজের শরীর থেকে জাল তৈরি করতে পারলে কি সমস্যা হত, স্পাইডারম্যান এর শরীরে ডিএনএ তো এমনিতেই মিউটেটেড।
ছোটখাটো অনেক জিনিশই চোখে এবং “কানে” লেগেছে, কারন মুভির আবহসঙ্গীতও ছিল awful. প্রায়ই অতিরিক্ত সাউন্ড ব্যবহার করা হয়েছে, ক্ষেত্রবিশেষে ভুল সাউন্ডও ব্যবহার করেছেন পরিচালক। যেমন পিটার এর স্কুলের জীবন, সেখানে তার অবস্থানটা ভালোভাবে বোঝানো হয়নি। স্পাইডার এর কামড় খাওয়ার পর পিটার এর Transformation টাও সঠিকভাবে বোঝানো হয়নি। হঠাৎ করে সে সুপার হিউম্যান ক্ষমতা পেয়ে বেশ কিছু উল্টা পাল্টা কাজ করলেও কেউই কোন সন্দেহ করলো না! ভিলেনের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। পিটার কিন্তু অনেককেই তার চেহারা দেখিয়েছে, যেটা কিছুটা অস্বাভাবিক লেগেছে। ভিলেনের সাথে স্পাইডারম্যান এর লড়াই তেমন উপভোগ্য হয়নি, ভিলেনের চেয়ে স্পাইডারম্যান কে অনেক উইক লেগেছে। তবুও নায়ক বলে কথা, শেষ পর্যন্ত তার জয় অনিবার্য! নায়িকার বাবার অভিনয় আর তার পরিনতি কিন্তু আগেই আঁচ করা গেছে। পুরো মুভিটাই খুব বেশী Predictable হয়ে গেছে, এইরকম হলে মুভি দেখার মজা অনেক কমে যায়।
আরও অনেক কিছুই বলা যেত, কিন্তু তার আর প্রয়োজন বোধ করছি না। আমি বলবো না মুভিটা একেবারে খারাপ হয়েছে, কিন্তু আগের স্পাইডারম্যান এর স্মৃতি টাটকা থাকতে থাকতেই কেন আবার এই মুভিটা তৈরি করা হল সেটা বোঝা গেলো না। পুরনো সিরিজের লাস্ট একটা মুভি করে বছর দশেকের একটা বিরতি নিয়ে নতুন করে করলেই বোধহয় অনেক বেশী ভালো হত। এখন আপনি না চাইলেও সবসময় আগের মুভিগুলোর সাথে এর তুলনা করবেন, ফলস্বরূপ এই মুভিটা নিজের মেরিটের চেয়ে কম মার্কস পাবে। অভারওল খারাপ না, প্রিয় চরিত্রের বিগ বাজেটের মুভি সবসময়ই আমরা দেখবো। তবে মুভিটা হয়তো বেশিরভাগ দর্শকের আশাই পুরন করতে পারবে না। আমি নিজে রেটিং দিলে এই মুভিকে ৬/১০ দিবো, যদিও expectation অনেক বেশীই ছিল! যাই হোক, মুভিটা অবশ্যই দেখবেন- কারন একজনের ভালো না লাগলেই যে আপনারও ভালো লাগবেনা সেটা নাও হতে পারে!