somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাউন্সিলের পাঁচ দিনেও মহাসচিব পায়নি বিএনপি ;););)

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ৩:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিএনপির বর্তমান মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে ওই পদ থেকে সম্মানজনকভাবে বিদায় দেওয়ার উপায় খোঁজা হচ্ছে। খোন্দকার দেলোয়ার ওই পদে থাকতে অনড় অবস্থান নেওয়ায় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের পঞ্চম দিনেও মহাসচিবসহ দলের স্থায়ী ও নির্বাহী কমিটির নাম ঘোষণা করতে পারেননি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

মহাসচিবের নাম ঘোষিত না হওয়ায় এ পদের দাবিদারদের অনুসারীরা বিভেদে জড়িয়ে পড়ছেন। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহাবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সব দিক চিন্তাভাবনা করেই চেয়ারপারসন মহাসচিব পদে মনোনয়ন দেবেন। এ জন্য কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। এ নিয়ে উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা আছে। আর আছে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা। তবে এ নিয়ে দলের মধ্যে বিভক্তির কোনো আশঙ্কা নেই।

সূত্র জানায়, পরবর্তী কাউন্সিল পর্যন্ত খোন্দকার দেলোয়ারকে মহাসচিব রাখা সম্ভব নয় বলে মনে করছে বিএনপি। ফলে স্বল্প সময়ের জন্য তাঁকে মহাসচিব পদে রাখা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি তাঁকে বোঝানোরও চেষ্টা চলছে।

বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, খোন্দকার দেলোয়ারকে মহাসচিব করার পরিকল্পনা খালেদা জিয়ার থাকলে তিনি তা কাউন্সিলেই করে ফেলতেন, এতে কাউন্সিলকে শতভাগ সফল বলে উল্লেখ করা যেত। কিন্তু এ পদে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে চেয়ারপারসনের বিকল্প চিন্তার কারণেই যত জটিলতা তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘চেয়ারপারসন এমন একটি উপায় খুঁজছেন, যাতে সাপও মরে, লাঠিও না ভাঙে।’
অনড় দেলোয়ার, বিরোধীরাও তত্পর: চেয়ারপারসনকে অনুরোধ করাসহ এ পদে আসতে পারেন এমন নেতাদের সমর্থন নিতে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন দেলোয়ারের অনুসারীরা। তবে দলের স্থায়ী কমিটির বেশির ভাগ সদস্য ও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা খোন্দকার দেলোয়ারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁরা চেয়ারপারসনকে এই বলে বোঝাচ্ছেন যে, কাউন্সিল ঘিরে বিএনপি চাঙা হয়ে উঠেছে। একজন নতুন ও কর্মঠ মহাসচিব এলে দল আরও চাঙা হবে। তাঁরা খোন্দকার দেলোয়ারের অসুস্থতার বিষয়টিও তুলে ধরেছেন।

অন্যদিকে খোন্দকার দেলোয়ারের পক্ষে অবস্থান নেওয়া কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা খালেদা জিয়াকে বলেছেন, বর্তমান মহাসচিব নিজেকে বঞ্চিত মনে করলে ভবিষ্যতে দলের দুঃসময়ে হাল ধরার জন্য কেউ এত ত্যাগ স্বীকার করবেন না। দলের একজন যুগ্ম মহাসচিব প্রথম আলোকে বলেন, “চেয়ারপারসনকে বলেছি, খোন্দকার দেলোয়ারকে পুরস্কৃত করা না হলে ‘কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে’, এ কথা দ্বারা আর কেউ অনুপ্রাণিত না-ও হতে পারেন।” তিনি বলেন, অন্য কাউকে মহাসচিব করতে হলে খোন্দকার দেলোয়ারকে অখুশি না রেখে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে চেয়ারপারসনের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

সূত্র জানায়, ১১ জানুয়ারির পর থেকে কাউন্সিল অনুষ্ঠান পর্যন্ত খোন্দকার দেলোয়ার তাঁর ভূমিকার কথা বারবার চেয়ারপারসনকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। পাশাপাশি তাঁর অনুসারী নেতারাও চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করে দেলোয়ারকে মহাসচিব হিসেবে নির্বাচন করার অনুরোধ জানাচ্ছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত খালেদা জিয়া এ ব্যাপারে নিশ্চুপ থাকছেন। দেলোয়ারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত দলের যুগ্ম মহাসচিব গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সম্প্রতি তরিকুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে বর্তমান মহাসচিবের পক্ষ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন বলে জানা গেছে। তা ছাড়া মহাসচিব-দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা কৃষক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাসায়ও দেলোয়ার তাঁর একজন অনুসারীকে পাঠিয়েছিলেন বলে সূত্র জানায়।

তবে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘তরিকুল ইসলাম দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। আমিও ওই দলের একজন হওয়ায় তাঁর বাসায় গিয়েছি। পরবর্তী মহাসচিব নির্ধারণের বিষয়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। খোন্দকার দেলোয়ারের পক্ষে সমর্থন চাওয়ার জন্য সেখানে যাইনি।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘মহাসচিব হওয়ার বিষয়ে চেয়ারপারসনের নির্দেশ পাইনি। কাকে তিনি মনোনীত করবেন, তা নিয়ে ভাবছি না। যিনিই ওই পদে থাকুন না কেন, তাঁর নেতৃত্ব মেনেই দল করব।’ তরিকুল ইসলাম বলেন, মহাসচিব হওয়া না-হওয়া নিয়ে তাঁর সঙ্গে চেয়ারপারসনের কোনো কথা হয়নি।

বিপাকে খালেদা: মহাসচিব নির্বাচনের জন্য খালেদা জিয়া তাঁর ছেলে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারপারসন ও জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। তা ছাড়া এ পদের দাবিদার নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। তাঁরা খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তের ওপর বিষয়টি ছেড়ে দিয়েছেন। শুধু খোন্দকার দেলোয়ার সেটা মানতে রাজি হননি।
সূত্র জানায়, তারেক রহমানও খোন্দকার দেলোয়ারের ব্যাপারে সম্মানজনক সিদ্ধান্ত নিতে চেয়ারপারসনকে অনুরোধ করেছেন। তবে তারেকের ঘনিষ্ঠ এক আইনজীবী বলেছেন, তারেক রহমান এই পদে ফখরুল ইসলামকে আনার পক্ষে।

সূত্র জানায়, একদিকে খোন্দকার দেলোয়ারের অনড় অবস্থান ও অভিমানী মনোভাব, অন্যদিকে জ্যেষ্ঠ নেতাদের বিরোধিতার কারণে বিপাকে পড়েছেন খালেদা জিয়া।

খোন্দকার দেলোয়ারের ঘনিষ্ঠ এক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, দুঃসময়ের কাণ্ডারি হিসেবে খোন্দকার দেলোয়ার চান, তাঁকেই ওই পদে রাখা হোক। কাউন্সিলের পর বিদায় দেওয়া মানে তাঁকে যথাযথ মূল্যায়ন না করা।

চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি মির্জা আব্বাস খোন্দকার দেলোয়ারকে মহাসচিব রাখতে অনুরোধ করেন। ওই সূত্রের মতে, খালেদা জিয়া বরাবরই খোন্দকার দেলোয়ারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তাঁকেই ওই পদে রাখতে হবে।

বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, দুঃসময়ের ভূমিকার কথা চিন্তা করে খোন্দকার দেলোয়ারকে এক বছরের জন্য মহাসচিব হিসেবে নির্বাচন করা হতে পারে। পাশাপাশি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে রাখার চিন্তা করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে অসুস্থতার বিষয়টি সামনে এনে খোন্দকার দেলোয়ার ওই পদ স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিলে ফখরুল ইসলাম পরবর্তী মহাসচিব হতে পারবেন। এতে খোন্দকার দেলোয়ার যেমন পুরস্কৃত হবেন, তেমনি তাঁর একটি সম্মানজনক বিদায়ও হবে।
কাউন্সিলররা দেলোয়ারের নাম প্রস্তাব করেননি: ৮ ডিসেম্বর বিএনপির জাতীয় কাউন্সিলে বিভিন্ন বিভাগের আটজন কাউন্সিলর বক্তব্য দেন। তাঁদের মধ্য থেকে কেউই খোন্দকার দেলোয়ারকে মহাসচিব করার কথা উল্লেখ করেননি।

খোন্দকার দেলোয়ারের ঘনিষ্ঠ কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা বলেন, কাউন্সিলরদের বেশির ভাগই দেলোয়ার-সমর্থিত। দেলোয়ার আশা করেছিলেন, কাউন্সিলররা মহাসচিব হিসেবে তাঁর নাম প্রস্তাব করবেন। কিন্তু তা না করায় তিনি বিস্মিত হয়েছেন।

সূত্র জানায়, খালেদা জিয়াও ভেবেছিলেন, কাউন্সিলররা খোন্দকার দেলোয়ারকে মহাসচিব হিসেবে দেখতে চাইবেন। কিন্তু এ নিয়ে কোনো কাউন্সিলর কথা না বলায় অন্য কাউকে মহাসচিব করার ব্যাপারে কিছুটা হলেও সুবিধা পাচ্ছেন তিনি।



-------------------------
সূত্রঃ প্রথম আলো
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ৩:১৭
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×