ওনাদের দু'জন কে আমি বেশ কিছু দিন থেকেই চিন, সেই ১৯৯৯ অথবা ২০০০ এর দিকে হবে। আমার স্কুলের খুব কাছের বান্ধবী ইসরাত জাহান পিয়া এর বাবা মা। পিয়াদের বাসা স্কুলের খুব কাছেই ছিল। স্কুল টিফিনের সময় ওদের বাসায় যেতাম। আন্টির হাতে বানানো অনেক আচার আমি খেয়েছি। আন্টি বর্তমানে কিডনী ফাউন্ডেশনে ভর্তি আছেন। ওনার দু'টো কিডনীই নষ্ট হয়ে গেছে। আন্টি আগে থেকেই একটু অসুস্থ থাকলেও আংকেল ছিলেন বেশ স্মার্ট আর শক্ত সামর্থ্য। অথচ ওনার চোখের দিকে তাকালেই বোঝা যায়, এখন কতোটা অসহায় হয়ে পড়েছেন তিনি। যে মানুষটা শুধু একটা পরিবারকে দাড় করাবার জন্য জীবন যুদ্ধে নেমেছিলেন, সে শক্ত সামর্থ্য মানুষটাই আজ যুদ্ধে পরাজিত সৈনিকের মত চেয়ে আছেন। মাকড়সা যেমন তার বুকের সবটুকু দিয়ে নতুন প্রজন্মকে বাঁচিয়ে রাখে, মানুষ মা বাবা গুলোও ঠিক তেমন।ছেলে সন্তানের জন্য একটা সময় হয়তো ওনারা দু'জন দু'জন কে সময় দিতে পারেন নি, দু'জনের একমাত্র উদ্দ্যেশ্য তৈরি করে নিয়েছিলেন, সন্তানের জীবনের নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করা। দু'জনই আলাদা ভাবে শুধু ছেলে সন্তানের কথাই ভেবেছেন। এখন বেলা শেষে, ওনাদের কিন্তু কেউ পাশে নেই। আছে শুধু দু'জন দু'জনার হয়ে। আসলে স্বামী, স্ত্রী এ দু'জন মানুষের মাঝে কোন রক্তের সম্পর্ক্য নেই। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় বাবা, মায়ের সাথে সন্তানের সম্পর্কের পর যে সম্পর্কটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্তপূর্ণ , তা হল স্বামীর সাথে স্ত্রীর সম্পর্ক। বোধকরি আমাদের ইসলাম ধর্মে এজন্যই এ দু'টো সম্পর্ক কে বারবার সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করা হয়েছে। এর গুরুত্ব বোঝাবার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি শুধু ছবির দু'জন বাবা মায়ের কথাই বলছি না। এ দু'জন বাবা মা হলেন, আমাদের বর্তমান সমাজের একটা বৃহদাংশের প্রতিচ্ছবি। যে বাবা মা গুলোর ছেলে সন্তান গুলো সম্পর্কের দায় ঘুচিয়ে চলে গেছে বহুদূর।
তাই আমি চাই, স্বার্থপর হয়ে যাক সকল বাবা মা গুলো, ভাল থাকুক তাদের ছেলে সন্তানকে ভুলে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:০২