প্রচণ্ড শব্দে ঘুম ভেঙে গেল।
বুক ধড়ফড় করছে। বোঝার চেষ্টা করছি কিসের শব্দে ঘুমটা ভাঙল। সাইরেনের শব্দ, মাইকের শব্দ আর কান্নার আওয়াজ সব মিলিয়ে হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা।
আমি পাশের ঘরে গিয়ে দেখি নানি আর মা হাউমাউ করে কাঁদছে, আর আব্বা বিমর্ষ মুখে বশে আছেন। আমার খুব বিশ্বাস করতে ইচ্ছা হল স্বপ্ন দেখছি। এমন ভয় কখনো লাগেনি আমার।
আব্বা বললেনঃ উঠেছিস বাবা, যা অজু করে জায়নামাজ নিয়ে আয়, নফল নামাজ পড়।
কেন কি হয়েছে আব্বা, সবাই কাঁদছে কেন, কেউ মারা গিয়েছেন?
তুই কিছু বুঝতে পারছিসনা?
না, বলনা কি হয়েছে?
বাইরে গিয়ে দেখ।
মা চিৎকার করে বললেনঃ ওর এখন বাইরে যাওয়ার কি দরকার? অরণ্য তুই এদিকে আয় বাবা, কাছে আয়।
আমি মার কথা শুনে ভীষণ ভয় পেয়ে গেলাম। আমি একটা অজানা শঙ্কা নিয়ে দরজা খুলে বাইরে বের হলাম।
ভেবেছিলাম বাইরে গিয়ে ভয়ংকর কিছু দেখব, কিন্তু কিছুই দেখলাম না। দিনের আলো ফুটে গেছে ঝড় নেই, বৃষ্টি হচ্ছেনা, আকাশ একদম পরিষ্কার শুধু কিছু মানুষ রাস্তা দিয়ে দৌড়িয়ে স্কুল মাঠের দিকে যাচ্ছে। হঠাৎ পাশের বাসার রমিজ চাচা রাস্তা থেকে চিৎকার করে বললেন অরণ্য কি করছ, তাড়াতাড়ি মসজিদে আস আর তোমার আব্বাকেও নিয়ে আস।
আমি এতক্ষণে মসজিদের মাইকে কি বলছে শোনার চেষ্টা করলাম। “মহাবিপদ! মহাবিপদ! গজব নাযিল হচ্ছে। কেয়ামতের আলামত প্রকাশিত হচ্ছে। সবাই মসজিদে চলে আসুন। গুনাহ মাপের জন্য সকলকে দোয়া করতে বলা হচ্ছে। মহাবিপদ! মহাবিপদ!...........................” কথা গুলো এমন ভাবে বলা হচ্ছিল যে বুকের মধ্যে অশুভ একটা ভয় গেঁথে গেল। আমাদের এলাকায় একটা ওষুধ কোম্পানির ফ্যাক্টরি ছিল, সেখান থেকেও অনবরত সাইরেন বাজছে।
আব্বা আমার পাশে এসে আকাশের দিকে তাকালেন। আব্বার চোখমুখ কেমন যেন শুকনো হয়ে আছে।
আব্বা আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা, সবাই এত কিসের ভয় করছে?
এখন কয়টা বাজে যা ঘরে গিয়ে দেখে আয়।
আমি ছুটে ঘরে গিয়ে দেখলাম ঘড়িতে তিনটা বাজে।
এখনতো তিনটা বাজে।
তুই ঘুমিয়েছিস কয়টায়?
রাত সাড়ে এগারটার দিকে। কিন্তু এর সাথে রাতে ঘুমানোর সম্পর্ক কি?
তোর কি মনে হয় তুই দুপুর তিনটা পর্যন্ত ঘুমিয়েছিস?
আমি ভয়ানক চমকিয়ে আব্বাকে বললাম, তারমানে এখন রাত তিনটা বাজে?
আব্বা আমার হাত শক্ত করে ধরে বললেন, হ্যাঁ।
To Be Continued……………
আমার প্রথম সায়েন্স ফিকশান গল্প লেখার একটি খুদ্র প্রচেষ্টা। গল্পের নাম আপনারা ঠিক করবেন। যদি ভাল লাগে জানাবেন। আপনাদের উৎসাহ পেলে গল্পটা শেষ করব।