আমরা সবাই ছোটবেলা থেকেই জেনে আসছি, সময় ও ¯্রােত কারো জন্য অপেক্ষা করে না। সময়কে নিয়ে এ প্রবাদটি যেমন চিরন্তন সত্য, ঠিক তেমনি জীবন গঠন করতেও অনেক প্রভাব ফেলতে পারে এই প্রবাদটি। সময়কে যদি সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি তাহলে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছতে সময় লাগবে না। ক্যারিয়ারের যে কোনো বাধা ডিঙানো সম্ভব হবে সময়ের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে। যদি সময়ের কাজ সময়ে করা হয়; তবে কেউ আটকে রাখতে পারবে না আপনার সাফল্যকে। তাই সময়ের কাজ সময়ে করা ভালো।
এ লক্ষ্যে সময়ের চাকাকে নিয়ন্ত্রণ করার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। আর এই শর্টকাট প্রসেসের নাম সময় নিয়ন্ত্রণ বা টাইম ম্যানেজমেন্ট। সকালে যখন সূর্যি মামা পূর্ব দিগন্ত আলো করে পৃথিবীকে তার আগমন বার্তা শোনায়; তখন হয়তো আপনি মাথার নিচে বালিশ রেখে শেষ প্রহরের স্বপ্ন দেখছেন। ঘুম থেকে উঠে হয়তো এলোমেলো ভাবছেন, কোনো নির্দিষ্ট পরিকল্পনা আপনার নেই। এ রকম লক্ষ্যহীন হয়ে জীবনে সফল হওয়া যায় না। এ জন্য শিখতে হবে টাইম ম্যানেজমেন্ট। এখন এ বিষয়ে রইলো কিছু পরামর্শ।
প্রথমেই চিন্তা করুন আগামীকাল কোন কাজটা সবচেয়ে জরুরি। সবার আগে সে কাজের প্রতি জোর দিন। চেষ্টা করুন। সময়মতো পারলেও সময়ের আগেই কাজটি শেষ করতে। এছাড়া অন্যান্য কাজকেও অবহেলা করলে চলবে না বরং আরও বেশি যতœ নিয়ে কাজগুলো করতে হবে।
* জীবনে অলস সময় নানাভাবে আপনার কাছে ধরা দেবে। ঠিক তেমনি সারাদিন কিছু অলস সময় আপনাকে হাতছানি দেবে। তার মানে এই নয়, অলস সময়কে হেলাফেলা করে কাটাবেন। অর্থাৎ অলস সময়কে দীর্ঘায়িত করা আর তাকে নিজের সঙ্গী ভেবে নেয়া একই কথা। যারা এই বিষয়টিকে প্রশ্রয় দেন, তারাই মনে-প্রাণে বিশ্বাস করেন, আজকের কাজ কালকে হলেও করা সম্ভব। কিন্তু আজকের কাজ কালকে করা সম্ভব নাও হতে পারে, এটি অলস সময় ভাবতে দেয় না।
* শুধু পরিকল্পনা নয়, চেষ্টা করুন তা বাস্তবায়ন করার। প্রথমে রুটিনমাফিক কাজ করা অসুবিধা হয়ে দাঁড়ায়। এটা কোনো ব্যাপার না। ধীরে ধীরে আপনি এটার সাথে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন। তখন রুটিন মাফিক চলাটা অনেক সহজ হয়ে যাবে এবং আপনি সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে পারবেন। পরবর্তীতে আপনি সময়কে নিজের মতো শাসন করতে পারবেন।
* তারুণ্যের সবচেয়ে বড় শক্তি গতি। গতিকে কেন্দ্র করে যে কেউ আবর্তন করতে পারে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে। মনে রাখতে হবে যে, সময় ও ¯্রােত কারো জন্য বসে থাকে না। আপনার অবর্তমানে আরেকজন সময়কে ব্যবহার করতে পারলে আপনারও তা করার ক্ষমতা থাকা উচিত। মনে রাখতে হবে, সময় হলো শিকারী কুকুরের মতো প্রভুভক্ত। তাই তাকে শাসন করাই সাজে সবসময় আদর করা নয়। সময়কে যদি নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারেন তাহলে সফলতার পরিবর্তে ব্যর্থতা দিয়ে ভরে উঠবে জীবন।
* খেলাধুলা একজন তরুণকে দিতে পারে নির্ভেজাল আনন্দ। তাই প্রতিদিনের রুটিনে থাকা উচিত খানিকটা খেলাধুলা, খানিকটা আড্ডা কিংবা একটু ইন্টারনেট দুনিয়াটা দেখে নেয়া ইত্যাদি। এমনকি বন্ধুদের সাথে মজা করে খেতে গেলেও অনেক কিছু আবিষ্কার করা যায়, যা জীবনের কাজে লাগতে পারে। তাই বলা চলে প্রতিদিনকার ব্যবহারিক জীবন থেকে অনেক শিক্ষা নেয়া যায়।
* সেকেন্ডের হিসেবেও সময়কে হিসাব করা যেতে পারে এবং জীবনে সফল হতে হলে সময়কে এভাবে হিসাব করাই উচিত। তাই সময় নষ্ট করবেন না। মনে রাখতে হবে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই মূল্যবান। সে জন্য হিসাব কষে আর জীবনে চাওয়া-পাওয়ার বিন্যাসেই সময়কে খরচ করা উচিত। যারা সময়ের কাজ সময়ে করে তাদের কাছে সফলতা নতজানু স্বীকার করে। আর সময়ের সাথে বদলে যায় তাদের ভাগ্যরেখা।
Click This Link page_id= 66&issue_date= 2012-12-23