সারা বিশ্বে জাহাজ শিল্পে বাংলাদেশের এক সময় পরিচয় ছিল জাহাজের ডাস্টবিন হিসাবে। কারন জাহাজের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হত স্ক্রাপ করার জন্য। এটা পরিবেশের জন্য যেমন ক্ষতিকর ছিল তেমনি অনেক রিস্কি। অনেক দেশেই জাহাজ স্ক্র্যাপ নিষিদ্ধ। তবে বর্তমানে সেই বাংলাদেশ জাহাজ শিল্পে একটি উল্ল্যেখযোগ্য নাম।
সারা বিশ্বের ফেরী তৈরি করে যে দেশ সেই দেশের ফেরী তৈরি হচ্ছে এখন বাংলাদেশে !! সৌভাগ্য ক্রমে জাহাজটির নির্মাণ কাজ দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল । আপনাদের সাথে কিছু ছবি শেয়ার করলাম।
প্রসঙ্গগত আপনাদের জানিয়ে রাখি ইউরোপের অধিকাংশ প্যাসেঞ্জার ফেরী তৈরি হয় ডেনমার্ক। আর প্যাসেঞ্জার ফেরী তৈরি করাও সহজ নয়। কারন এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ গুলো খুব সুক্ষ ভাবে করতে হয়। আর আমি নিজস্ব অভিজ্ঞতায় বলি এই প্যাসেঞ্জার জাহজটির নির্মাণ যে ভাবে হচ্ছে তাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে এধরনের কাজ আর ও পাবে। এমন সুক্ষ কাজ আমি ইউরোপিয়ান তৈরি জাহাজেও দেখি নি। জাহাজটির প্রজেক্ট ডাইরেক্টর জানায় তারা সর্বচ্চ চেষ্টা করছে জাহজটির জন্য। এবং এটা বাংলাদেশের তৈরি সেরা জাহাজ হবে। যে দেশ আমাদেরকে এক সময় প্যাসেঞ্জার ফেরী দিত তারাই এখন আমাদের দেশ থেকে প্যাসেঞ্জার ফেরী নিচ্ছে।আর আমরা এখন আর ডাম্পিং দেশ নৈ। আমরাও পারি প্যাসেঞ্জার জাহাজ তৈরি করতে। উপমহাদেশে আমারই প্রথম জাহজ তৈরি করছি। এবং পৃথিবীতে গুটি কয়েক দেশ জাহাজ তৈরি করছে এবং আমরা হচ্ছি তাদের অন্যতম।
ফেরীটির পিছনের অংশের কাজ হচ্ছে
সাইড থেকে ফেরীটি
ব্রিজ। এখান থেকে ক্যাপ্টেন ফেরীটি চালাবে।
ফেরীটির সবচেয়ে উচু স্থানে আমি , ব্লগার নীরব দর্শক এবং ফেরিটির ইনচার্জ।
এরা শুধু নিজের জন্য নয় কাজ করছে দেশের জন্য।
ব্লগার চাটিকিয়াং রুমান এর সাথে আমরা।
যাদের নিয়ে আমরা গর্বিত।
ফেরীটির কিছু তথ্য ।৪৯ দশমিক ৮০ মিটার দীর্ঘ প্যাসেঞ্জার ফেরিটি ডেনিশ প্রতিষ্ঠান হান্ডেস্টেড রভিগ (এইচআর) এর জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে। ১২৭ জন যাত্রি এবং ২৮ টি গাড়ি পরিবহন করতে পারবে। সামনে এবং পিছনে দুদিকেই এই ফেরী চলতে পারবে। এজন্য দুই দিকেই রয়েছে দুটি ইঞ্জিন(৫০০ হর্স পাওয়ারের)। একই স্থানে দাড়িয়ে ফেরীটি চারদিকে ঘুরতে পারবে।
অনেকেই হয়ত ভাবছেন যেখানে বড় বড় জাহাজ তৈরি করছে বাংলাদেশ সেখানে এই ফেরীটি কেন এত গুরুত্ব বহন করছে। কারন টা হল পৃথিবীর অনেক দেশ জাহাজ তৈরি করলে ও প্যাসেঞ্জার ফেরি সব সময় তৈরি হোত ইউরোপে। ডেনমার্কের
তথা ইউরোপের ইতিহাসে এই প্রথম বহির্বিশ্বের কোনো প্রতিষ্ঠানকে নতুন ফেরি নির্মাণ করতে দিল। আর এই অহংকার আমাদের করতে দিল ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড।