বুর্জোয়া কর্পোরেট জীবনের কোন এক বিকেলে সেদিন দেখা হল বিপ্লবী চে গ্যাভারা’র সাথে। পরিচয় দেয়াতে কথা প্রসঙ্গে বললেন, “অনেকে হয়তো জানেনা বুঝলি? এইসব বিপ্লব-টব শুরু করার আগে আমিও কিন্তু মেডিকেল স্টুডেন্ট ছিলাম। পরে মেডিকেলের প্যারা খেয়ে একদিন ভাবলাম, ধুশ শালা! মোটরসাইকেলে করে ঘুরে আসি কোথাও!! ঘুরতে ঘুরতে মনে হল, আমি না করিলে কে করিবে আর উদ্ধার এই দেশ ? আঁতেল ডাক্তারি না, বরং রাজনীতি দিয়েই বিপ্লবটা হবে রে। প্র্যাকটিস করলে উলটা মারাটাই খেয়ে যাব। মেরুদন্ডটা সোজা হবে না আর। ছাত্রজীবনে খাব পড়ার প্যারা, কর্মজীবনে খাব রোগীর অ্যাটেণ্ডেণ্টের প্যারা। বিপ্লব আর হবে না। অগত্যা…”
আমি চুপচাপ শুনি। আর মাথা নাড়ি। বলি, "গুরু, হক কথা। এখন তো অবস্থা আরো খারাপ। খালি মাইর খাই। খেয়েই যাই। দেশে দাম নাই, বিদেশে পরিবার নাই। শহরে পোস্ট খালি নাই, মফস্বলে ট্রেনিং পোস্টই নাই। বিসিএসে সাহিত্য-গ্রামার-অঙ্কের প্যারা খাই, এফসিপিএসএ পাশ নাই, আবার শুধু রেসিডেন্সির পড়ায় আয়-রোজগার নাই। প্যারা আর প্যারা।
তাও তো বলি, বেশ আছি, প্যারা খাছি, আরাম পাচ্ছি।”
বেশিক্ষণ ছিলাম না। চলে আসতে হল। আসার আগে অনেক সাহস নিয়ে বললাম, “গুরু, চলে যাওয়ার আগে একটা সেলফি হয়ে যাক? মান-ইজ্জত থাকবে না নাইলে। ফেবুতে আপ্লডাইতে হবে না? হে হে...”
গুরু সেলফিতে রাজি হলেনা না। অগত্যা মান্ধাত্তার আমলের ব্যাক ক্যামেরা দিয়ে তুলেই ক্ষান্ত দিলাম।
চলে যাওয়ার সময় গুরু শুধু বলে গেলেন,
“সুবোধ, তুই পালিয়ে যা, এখন সময় পক্ষে না…”
০৯ ১১ ১৭
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৪৮