উপরের ছবির মেয়েটি সালমা। রানা প্লাজায় বেঁচে যাওয়াদের একজন। কি অসীম শক্তি থাকলে মানুষ এটা পারে। তিনি সেই রকম একজন মানুষ। এখন মৃত। শুয়ে আছেন মর্গে। রানা প্লাজা পরবর্তী জীবনের কামড়ে অতিষ্ট হয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বাংলাদেশে মানুষ দুইভাবে মরে, ১. গোছানো পরিকল্পিত মানবলোভসৃষ্ট দুর্যোগের কারণে, ২.গোছানো পরিকল্পিত মানবলোভসৃষ্ট জীবন ব্যাবস্থার কারণে। তার জন্য এই কবিতা।
মাঘের সকাল, ডিমের কুসুমের মত রোদ
আর গরম পরটার মত সদ্য ভাজা খবর
বাতাসে লাশের গন্ধ
আজকের প্রাতরাশ অনেক মানবিক হবে
আজকে অনেক কান্নাকাটি হবে
আজকে অনেক কাভারেজ হবে
আজকের বুক চাপরানো আহাজারি দেখে
আমরা বলবো, কি দরকার ছিল আত্মহত্যার
পাঁচতারা চাকুরী জোটেনা সবার
সবার ভাগ্যে থাকেনা ক্ষমতার অলৌকিক হাত
আর তাই ভাগ্য নিয়ে আমরা একটু বিমর্ষও হবো
আবার খুশিও হবো, ইশ!
আমাদের ভাগ্য, আমাদের সামষ্টিক সৌভাগ্য
আমাদের হাড়গুলো রানা প্লাজার পুকুরে নেই
আমাদের করতে হয়নি বোবা আহাজারি
আমরা তো জানি দেশের রপ্তানী আর লাভ কতটা জরুরী
যারা মরেছে তারাতো মরেই, প্রতিনিয়ত
আমরা তাদের “কারণের” সাথে আছি
আমাদের পাললিক মন আর একগুচ্ছো স্ট্যাটাস নিয়ে
যেভাবে আছে, মানবাধিকার, শ্রমিকাধিকার, নারীধিকার
ধিক্কার! ধিক্কার! ধিক্কার! থু থু থু
আমাদের প্রতিদিনের লালা ঝুলে থাকে সরকারের ওয়াদায়
লাশের গন্ধ পাই, তালতাল লাশের স্তুপ এনজিও কায়দায়
ধিক্কার! ধিক্কার! ধিক্কার! থু থু থু
আমাদের লাশের প্রস্তুতি
গণতন্ত্র করবো অনেক, চেতনা করবো অনেক
ভোট ভোট ভোট, জোট জোট জোট
আর সকালের টেবিলে তাজা তাজা লাশ
ডেনিম জিন্স খুলে, ডিএনজির টপস খুলে
পাললিক মন নিয়ে গুলশান ২ এ গোলাপ ফুল দিতে দিতে
বাউয়া ব্যাঙের মত চুদতে চুদতে বলবো
মানবাধিকার, শ্রমিকাধিকার, নারীধিকার
ধিক্কার! ধিক্কার! ধিক্কার! থু থু থু