টুকরো টুকরো কিছু স্মৃতি
আমার ডায়েরী...আসলে কি লেখার আছে সেটাই তো জানি না। সারাক্ষন আমি নিজের সাথে কথা বলে যাই...কত শত কথা...কত চিন্তা কত স্মৃতি।ছেলেবেলার কথা ভাবলে পুরান ঢাকার বাবুবাজার লেন এর কথা মনে পড়ে যায়। খুব ছোটবেলার স্মৃতি বলতে আমার এটাই। জানিনা তখন আমার বয়স কত ছিল। কিন্তু মনে আছে আমরা একতলা এক বাসায় থাকতাম...গেটের সাথেই ছিল রাস্তা। সারাদিন আমি আর বাবু(আমার ছোট ভাই) গেটের কাছে দাঁড়িয়ে চলন্ত মানুষ দেখতাম। মনে পড়ে রাস্তার উল্টো পাশের বাড়ীতে রাজু সাজু নামের দুই ভাই থাকত। বয়সে আমার চেয়ে ৩-৪ বছরের বড় ছিল। ওদের সুন্দর একটা বোন ছিল। রাজু সাজু ২ ভাই সারাদিন একসাথে দুষ্টুমি তে মেতে থাকত। কি যে ভীষণ দুষ্ট ছিল...জানি না এটা কেন কিভাবে মনে আছে...শুধু মনে পড়ছে ওরা ২ ভাই করতো না এমন কোন কাজ নেই। আমাদের পাশের বাড়ী টা ছিল টিন শেডের এর বাসা...টিন টা একপাশে ভাঙ্গা ছিল। একবার ওদের ২ ভাই এর কোন একজন সেই টিন এর চালে উঠে লাগোয়া গাছ থেকে ফল পাড়তে গিয়ে টিন ভেঙ্গে পড়ে যায়...অনেক বড় আঘাত পেয়ে ছিল। তারপর আরো একবার ওদের কোন এক ভাই এর মুখে গান্দী পোকা কামড়ে দেয়ায় পুরো মুখ ফোস্কা পড়ে কালো হয়ে গিয়েছিল। ঐ বয়সে ওটাই আমার কাছে অনেক ভয়ের ছিল। আমি আর বাবু সারাদিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে কত লোক দেখতাম। এক পাগল ছিল ওই এলাকায়। একবার কেন জানি পাগল টা আমাদের ভয় দেখায়...বাবু ভয়ে দৌড়ে ঘরের ভিতর যেতে গিয়ে বড় সুচালো আলপিন এর উপর পড়ে কপাল কেটে ফেলে...কি রক্ত গলগল করে পড়ছিল।আমার মা দিশেহারা হয়ে ছুটে বের হয়ে যায় বাবু কে কোলে নিয়ে রাস্তায়। ভাগ্য সেদিন আব্বার এক স্টুডেন্ট দেখতে পেয়ে হাসপাতাল নিয়ে যায়। বাবুর কপালে ৭ টা স্টিচ পড়েছিল। কি যে কেদেছিলাম সেদিন...আমরা ৩ ভাই বোন। আব্বা বাসায় ফিরে ঘটনা শুনে রেগে গিয়ে আমার মায়ের সেলাই মেশিনের মাপ জোখের বড় স্কেল নিয়ে ছুটে বেরিয়ে যায় পাগল কে শায়েস্তা করতে। সেদিন আব্বার মাথা ঠিক ছিল না পাগল কে আব্বা সত্যি স্কেল দিয়ে পিটিয়ে স্কেল ভেঙ্গে ফেলে। পাগল টা সেদিন কি বুঝতে পেরেছিল কেন সে মার খাচ্ছে !!