৩২৭-২৬ সালের কথা। মহাবীর আলেক্জান্ডার পুরা দুনিয়া কব্জ কইরে ফেলছে তদ্দিনে।গ্রীক মানচিত্রে তখন ভারত হইল দুনিয়ার শেষ প্রান্ত। এর পরে ধুপ্পুশ কইরে কিনারা দিয়ে নিচে পইরে যাবেন, হাতি, কচ্ছপ কিসু একটার উপর।
এখন মহাবীর যেহেতু, তার উপর প্রায় দেবতা স্ট্যাটাস, তার উপর সূর্যের সন্তান, তার উপর হারকিউলিসের অবতার…দুনিয়াতো পুরাটাই লাগবে।চালাও ঘোড়া ভারতের দিকে।
তিনি আইলেন, দেখলেন, জয় ও করলেন….পাঞ্জাব, সিন্ধু সব কিসু উড়ায় পুড়ায় শেষ করলেন, রাজন্য সুলভ পাইকারি গণহত্যা করলেন, পুরান পুরান সব শহর ধ্বংস কইরে, নিজের প্রাণপ্রিয় ঘোড়া বুসিফালাস (যে কিনা ব্যদ্দপ, “রাজার মত ব্যভার চাই!” খ্যাত পুরুর হাতে শহিদ হয়) এর নামে নতুন নগর স্থাপন কইরলেন।পুরা দুনিয়া বিজয় প্রায় হয় হয় আরকি।পুরুও তখন আলেক্জান্ডারের বেতনভুক দফাদার, আর কারে ভয়!
এরপরের গন্তব্য গঙ্গারিড্ডি নামে এক অচিন রাজ্য।আলেক্জান্ডার বুদ্ধিমানের মত আগে আগে স্পাই পাঠাইলেন কিসু, “যাও, খবর লয়া আসো, এই মচ্ছরের হুলে জোর কত। এইখানের আবহাওয়া দেবতাদের জন্য বেশি স্বাস্থ্যকর নয়। দুইদিনে উড়ায় দিমু সব।ব্যস্ দুনিয়া কাবার।”
স্পাই গেলো খবর লইতে।ফেরত ও আইলো তৎক্ষণাৎ।
“কি সন্দেশ, বলো দেখি। কয়খান লাঠি আর কোঁতকা নিয়া নামসে আহাম্মক গুলা?”
চর কিসু কয় না। খালি কাঁপে ঠক্ ঠক্ কইরা।আলেক্জান্ডার খেইপে গিয়া খ্যাক কইরে উঠলো, “কিরে আবাগির পুত, কথা কস না কেন? মুখের মইধ্যে আন্ডা? তা দেস?”
“হুজুর, কইতে তো চাই, কিন্তু ডর লাগে।কিছু কইবেন না তো? সত্যি কথা কমু?”
“যা অভয় দিলাম। মন খুইলে বল।কিসু কমু না।”
“হুজুর, এই রাজ্য মশা তো না ই, এইটা জয় করা আপনার বাবারো সাধ্য নাই।”
“মুখ সামলায় কথা কবি শুয়ারের বাইচ্চা! সূর্যদেবের অসাধ্য কিসু আসে দুনিয়ায়!”
“আরে দুরু, আপনের ওই বাপের কথা কই নাই।”
“তাইলে কি কইতে চাস? হারকিউলিস পুরা দুনিয়া কান্ধে নিয়া খারায় ছিলো, হ্যায় এই তুসচু দ্যাশ একটারে সাইজ করতে পারবো না? ফাইযলামী করস??!”
“আরে হুরররর…ওই বাপ ও না…। কি বিপদ! আপনের জন্মদাতা পিতা! কানা ফিলিপ!”
সাইড থেইকে কোন ফটকা আবার আস্তে আওয়াজ দেয়, “বেজাত শালা, বাপের ঠিক নাই।”
শুইনাও না শুনার ভান কইরে আলেক্জান্ডার আবার চর রে লইয়্যে পরলো।
“কিরে, কস না, কি দেইখে এতো ডরাইলি?”
“কিচ্যু না, সিরেফ আশি হাজার ক্যাভালরী, দুই লাখ ফুট সোলজার, আশ্টো হাজার অ্যান্টি পারসোন্যল্ রথ এবং কয়ডা হাতি।”
হার্টফেল কইরতে কইরতে কোনমতে আলেক্জান্ডার কইলেন, “হাতি আর ডরাই না।পুরুর ও আসিলো হাতি। ২০ডার বেশী। বেল নাই।এর কয়ডা?”
“এই সামান্যি।ছয় হাজার।”
তৎক্ষণাৎ তলব পরিলো সিপাহসালার দিগের।“টলেমী, সেলুকাস!কি বিপদ কও তো! এই গ্যাইংগারিড্ডাই না কি ছাতা, কেমনে সিস্টেম দেই? আমি দিগ্বিজয়ী আলেক্জান্ডার, পুরা দুনিয়া সাইজ কইরে আনছি, এখন এই শেষ বাধা। মতলব বাতলাও।”
টলেমী বহু ঘোল খাওয়া লোক। সবার আগে বিপদ টের পায়।
“উস্তাদ, সিরেফ ভুইলে জান আরকি। হবে নুয়ায়।“
“মানে?!”
“পোলাপাইন এম্নে খেইপে আসে,ঘরের বাইর আইজ কতো বচ্ছর, খাওয়া যা আসে সেইটা আইতে আইতে যায় পইচা, মশা,ছারপোকা,কাঁকড়াবিছা,ইন্দুর,বান্দর এতো কিসুর জন্তনায় সবডির মাথা গরম। তার উপর কাল্কা চরের মুখে বণ্যনা শুইনে এম্নেই কলিজার রক্ত গ্যাছে পানি হয়া। জাস্ট ভালয় ভালয় উলটা রওনা দেন। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরত চলেন।”
“হইবো না?”
“জি না।”
“তাইলে আমার লিগ্যাসী? দুনিয়া বিজয়?”
“কোনো কাহিনি না।অ্যারিস্টটল সার নতুন ম্যাপ বানায় দিবে। ভারত না হয় আর এড্ডু ছুটো থাকলো। এডি কাহিনী না।”
“হইবোই না কুনোমতে? ইশশ্ বড়ই বেজাত জাতি।ঠিকাসে। চল ওয়্যপাস্।”
সূর্যপুত্রের দিগ্বিজয় ওই খানেই খতম।
ঘটনা যা কইলাম, মুলতঃ (ডায়লগ বাদ দিলে) সত্য।
মজা না?
আরো মজা দ্যাখবেন? যে কোনো ইতিহাস বই নিয়া বসেন। গঙ্গারিড্ডির মূলাংশের নতুন নাম হইসে বাংলাদেশ।