রাঢ়াং - শিল্পকলায় যে কয়টা নাটক দেখেছি তার মধ্যে সবচেয়ে সবালীল নাটকগুলার মাঝে একটা । সাঁওতাল বিদ্রোহ নিয়ে করা আরন্যক নাট্যদলের সফল একটা নাটক, এখনও নিয়মিত প্রদর্শনী চলছে । মজার ব্যাপার হচ্ছে যে সাঁওতাল দুঃখ গাঁথা, জমি হারানো নিয়ে এই নাটক, সেই সাঁওতালরা এখনও আবার সেই একই অবস্হার মুখোমুখি । আফসোস সাঁওতালদের দুঃখ নিয়ে মঞ্চ মাতালেও বাস্তবে সেই সাঁওতালদের নিয়ে আমাদের নাটক পাড়ার কারো কোন প্রতিক্রিয়া নেই , এই আরন্যকের যেখানে সাঁওতালদের কে নিয়ে সবচেয়ে সরব হওয়ার কথা ছিল, মামুনুর রশীদ সেদিনের কথা লিখলেও আজ বড়ই নীরব !
সিধু, কানু, চাঁদ ও ভৈরবের নেতৃত্বে গড়ে ওঠে সাঁওতাল বিদ্রোহ কিংবা ইলা মিত্রের নেতৃত্বে নাচোলের কৃষক আন্দোলনে সাঁওতালদের ভূমিকা -এইসব কেবল মঞ্চ মাতানোর জন্যই গড়ে উঠা কাহিনী হয়ে আছে । বাস্তবের সাঁওতাল নিয়ে কারো কোন মাথা ব্যথা নেই ।
ব্যক্তিগত ভাবে আমার ধারনা বাংলাদেশে সাধারন মানুষের উপর ধর্মীয় আবহে যে নীপিড়ন হয় তার বিশাল অংশজুড়ে আসলে মূল কারন ভূমি দখল । ধর্মকে জাস্ট ব্যবহার করে পরিস্হিতি তৈরি করা হয় । ক্ষমতাবানরা এইখানে নানা ইস্যুর মাধ্যমে প্লট তৈরি করে, গল্প সাজায় আর সবসময় নীপিড়ীতরা খেয়াল করলে দেখা যাবে একেবারে গরীব ঘরানার, যাদের আসলে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা থাকেনা ।
আলফ্রেড সরেন সাঁওতালদের ভূমির অধিকার রক্ষা করতে গিয়ে ২০০০ সালে আমাদের ক্ষমতাধর ভূমি খেকোদের হাতে নির্মম ভাবে নিহত হন । সভ্য সমাজ আজ ১৬ বছর পার হলেও প্রমানিত অপরাধী [ ভূমিদস্যু হাতেম আলী ও সীতেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য ] এর বিচার করতে পারে নাই , বরং নতুন ভাবে তাদের সব বসতি উচ্ছেদ করে ফেলেছে !!
সাঁওতালদের মাঝে ফেসবুক ব্যবহারকারি খুব বেশী নেই , যেকারনে তাদের না খেয়ে থাকার কথাও কেউ জানতে পারছেনা । সুশীলরা হয়ত নতুন কোন মঞ্চ নাটকের প্লট খোজায় ব্যস্ত ।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৪১