চৈত্রের দুপুরটা বরাবরি আমার সাধাসিধে..
বিকেলের আযান পর্যন্ত আর নয়তবা বাবা-মায়ের অফিস স্কুল থেকে ফিরে আসার আগ মূর্হুত পযর্ন্ত চিন্তাহীন একটা ঘুম ! ছোটবেলায় ছিলোনা কোনো মোবাইল ফোন ছিলোনা কোনো ফেসবুক একাউন্ট ছিলোনা কোনো মিউজিক সিস্টেম তবুও সবসময় একটা ছন্দে ছন্দে ঘুমটা আমার চোখের পাতায় টোকা দিতো ।
ক্লান্তশ্রান্ত অবশান্ত হয়ে ঠান্ডা কলের পানি কিংবা পুকুর কিংবা নদীর পানিতে প্রান জুড়ানো একটা স্নান ।
তারপর দুপুরের জন্য মায়ের রান্না করে যাওয়া খাবারটা খাওয়া ।
এরপর নিজের রুমে নিজের বিছনায় জানালার পাশে নরম বালিশে মাথা রেখে কোলবালিশটা কোলে নিয়ে জানালার দিকে চোখ রেখে একটা ভাবনা ।
কিন্তু সে ভাবনাটা একটা চিন্তাহীন ভাবনা । নিজেও জানতাম না কি ভাবতাম..
তবু জানালার গ্রিলের উপারে একটা আম গাছ সে আম গাছের ডাল আর পাতার ফাঁকে ফাঁকে নীলচে সাদা রঙের আকাশটা আর রোদের ছায়া দেখতাম আর ভাবতাম । যদিও আমাদের ঘরটা বরাবরি আমার কাছে অপছন্দের তুবোও ঘরটা কেমন যেন এক ফ্যাকাসে সৌন্দর্য দেখা যেতো । চারদিকে তখন ক্লান্তি ছাপ । চারিপাশেই নীরবতা । শুধু আম গাছে ছায়ার মাঝে বসে থাকা কাকটা হঠাৎ হঠাৎ কা কা করে ডেকে যেতো । নয়তো কোনো এক জোড়া শালিক আপন মনে তাদের ভবিষ্যৎ সংসারের প্রেম আলাপ চারিতায় মগ্ন থাকতো । আর অক্লান্ত ঝিঁ ঝিঁ পোকটা শব্দ করেই যেতো করেই যেতো । অপেক্ষা করতাম আর সময় গুনতাম কতক্ষণ ডাকতে পারে । আর তখনি আমি হাঁটা শুরু করতাম বাস্তবতা ছেড়ে ঘুমের দেশে ! জানালা দিয়ে আসা শীতল বাতাস সে হাটার বেগটা হয়তবা আরো বাড়িয়ে দিতো । তারপর আর কিছু জানিনা...
হঠাৎ জেগে উঠি । হয়তবা বিকেলের আযানের ধ্বনিতে নয়তবা মা বাবার ডাকাডাকিতে...
উঠেই কল্পনার জগতের খেলা পন্ড করে বাস্তব জীবনের খেলতে যাওয়ার তাড়াহুড়োতে..
ভেবে দেখতাম না কাকটা বা ঐ শালিক পাখিটা কখন উড়ে গেলো কিংবা ঝিঁ ঝিঁ পোকটা কতক্ষনি বা ডেকে গেলো ?
বা ওর ডাকাডাকি বন্ধই বা করলো কেনো ?
আজো ঠিক অনেকদিন পর এভাবেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম । দেখিনি কোনো কাক শুনিনি কোনো জোড়া শালিকের প্রেম আলাপ । তবু শুধু ছোটবেলার সে ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাকাডাকিটাই ছিল ।
কিন্তু ঘুম থেকে ওঠার পর কোনো তাড়াহুড়ো ছিলো না শুধু ভাবলাম এই কথা গুলো ।
আর মনে হলো ক্লান্তির শেষে নীরবতার মাঝেই কি তুমি ঝিঁ ঝিঁ পোকা ?