একটু বড় হলাম যখন!!
বলত তখন মায়৷
কাপড়-চোপড় ঠিক করে চল,
নজর পড়বে গায়৷
তখনো ঠিক বুক গজায়নি,
তবু মায়ের ভয়৷
মায়ে বলতো মেয়েরে তোর, সামলে চলতে হয়৷
মায়ের কথা বুঝিনি ঠিক! পাড়ার ছেলের দল৷
গায়ে পড়ে বলতো কথা,
চোখে খেলতো ছল৷
যখন আমার বুক গজালো,
ডাঙ্গর গতর গায়৷
নিষেধ হলো বেড়ে দ্বিগুন, ভয়ে থাকত মায়!!
হাঁটতে পথে পান্ডা ছেলের চোখে খেলত নেশা,
এদিক ওদিক তাকানো যার
নিত্য দিনের পেশা৷
মুখে থাকত লজ্জা আমার,
বুকে থাকত ভয়!!
মায়ের বাড়ন মাইয়া মাইনষের চুপ থাকিতে হয়৷
স্নানের বেলা পুকুর ঘাটে, মারত কত উকি৷
লজ্জা আমার সাড়া গায়ে
লতায় লজ্জামুখি৷
আমার কতো ইচ্ছে হতো
ডানা মেলে উড়ি
ভালবাসার আকাশটাতে ইচ্ছেমত ঘুরি৷
তবু আমি থেমে যেতাম
মায়ের কথা শুনে৷
সমাজ আমায় দেখিয়ে দেয়, থাকতে ঘরের কোনে৷
একদিন যবে স্কুল হতে,
বাড়ী ফিরছি একা৷
সেদিন আমার শরীর নিয়ে
তাদের সাথে দেখা৷
চিৎকার দেব তাও হলনা
কত আহাজারি,
উদয় হলো মায়ের কথা
আমি একটা নারী৷
যে শরীরটা নিয়ে ছিল
মায়ের এত ভয়,
সে শরীরতো হায়নার চোখে
মাংস পিন্ডময়৷
বুকের কাপড় খুলে নিয়ে
বুকে দিল হাত,
হাত নয় সে যে থাবাই দিলো, বসায় দিলো দাঁত৷
যে তল দিয়ে জন্ম ওদের
সেই তলে দেয় শূল,
শরীর নিয়ে লজ্জা মায়ের,
সবই ছিল ভুল৷
সাড়া শরীর চিবে খেল
ফাটিয়ে দিল তল,
রক্ত গেল তানা তানা
বিষিয়ে দিল জল৷
চুষে খেল শরীর খানা
জনের পরে জন,
দাঁড়াবারও শক্তি আমার ছিলনা তখন৷
কাঁদতে কাঁদতে ডেকেছিলাম, ঈশ্বর তুমি কই!!
বাঁচাও আমায় চুপ থেকোনা, মেয়ে যদি হই৷
বাঁচাইনি নির্লজ্জ্য ইশ্বর, তাকিয়েছে শুধু!!
ঈশ্বর তারা যাদের কাছে নারীর শরীর মধু৷
কোনমতে কষ্ট শয়ে
বাড়ি ফেরার পর,
মাতো আমার অর্ধমৃত
একি হলো তোর!?
দেখনা মা তোর লাজুক মেয়ের একি হল হাল!!
তোর কাছে মা তলোয়ারের
থাকতে হবে ঢাল৷
কাপড়ের পর কাপড় দিয়ে
শরীর ঢাকা যায়৷
লজ্জা ঢাকবি কি দিয়ে মা কলঙ্কিনির গায়৷
যত পারিস কাপড় দে মা
লজ্জা যদি ঢাকে,
নরপশুর লজ্জা যদি
এই কাপড়ে থাকে৷
তুইতো জানিস তোর মেয়েটা
তোর অবাধ্য নয়৷
কেন তবে এমন হবে?
এমন কেন হয়!?
তোর সমাজের কথা শুনে
রাখলি ঘরের কোনে
তোর মেয়েকে চিবিয়ে খেল
সেই সমাজের জনে৷
স্বামি-স্ত্রীর মিলন শেষে শরীর নাপাক হয়৷
স্নানে আনে পবিত্রতা
তোর ধর্ম তাই কয়৷
তবে মাগো জল ঢেলে দে
করে দেমা পাক,
কলঙ্ক মা শরীর থেকে
ধুয়ে মুছে যাক৷
আর কতদিন এভাবে মা
আড়াল হবি বল!?
কত মেয়ের আর্তনাদে
চোখে ফেলবি জল৷
উড়ার সময় তোরা মাগো
ভেঙ্গে দিবি ডানা৷ প্রতিবাদের কোন ভাষায়
নেই কি তোদের জানা?
এই ভাবেই কি বেঁচে থেকে, নারীর জীবন যাবে?
আমার ছোট্ট বোনটি ও কি
এমন সাজায় পাবে?
এভাবে আর কত মাগো
মুছে দিবি হাসি,
আমরা হব ধর্ষিতা মা
তুই মা হবি দাসী৷
মরতে গিয়ে পারিনি মা
মরবো কেন বল?
মরলে আমি পশ্রয় পাবে
ঐ কুকুরের দল!!
চিৎকার করে সমাজটাকে দেখিয়ে দি মা আয়, নির্যাতনকে লাতি মেরে পিষিয়ে দেবো পায়৷
বাঁচতে হলে আয় মা এবার বাঁচার মতই বাঁচি৷
লুকানো মা মরার সমান, বুঝিয়ে দে আছি৷
জাগুক জাতি নারী সমাজ
জাগুক যত বোন৷
আগে বাড়ো নারী তুমি
ছাড়ো ঘরের কোন৷
ফকির বলে- সালাম নারী
গুছে তুলো পাপ৷
তালা ভেঙ্গে দাও সে তোমার দাঁতভাঙ্গা জবাব....
নিজেকে আজ ধিক্কার দিয়ে একটা কথায় বলব
এটা কোন কবিতা নয়
জেগে উঠার গল্প...