একজন নারীর জীবনে একজন পুরুষ মানুষের প্রয়োজন কতটুকু? বেশিরভাগ শিক্ষিত মেয়েরা পুরুষ নির্বাচনের ক্ষেত্রে শিক্ষা, টাকা পয়শা আর শারীরিক সৌন্দর্য এই তিনটি বিষয়কে প্রাধান্য দিতে গিয়ে জীবনের অর্ধেক সময় পার করে ফেলেন। কেউ কেউ হয়তো পারফেক্ট জীবনসঙ্গী পেয়ে যান, আবার কেউ কেউ খুঁজে না পেয়ে সম্পূর্ণ বিপরীত কাউকে বেছে নেন। যেটা তিনি অনেক আগে করলে জীবনটাকে হয়তো আরো কিছুদিন সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারতেন।
প্রেম, রোমান্স বা ভালোলাগা লোকটার সাথে যৌণতা এসবের থেকে টাকা পয়শা বা মর্যাদার স্থান কখনো উপরে হতে পারে কি? আমাদের জীবনটা ছোট ছোট সময়ের একটা বিরাট সমাহার যার যোগফলও খুব বেশি বড় নয়।যৌবনে জীবনের পূর্ণতা আনতে সঙ্গীর প্রয়োজন সবচেয়ে উপরে। যেখানে ভালোবাসা আর পারষ্পারিক সম্মান হবে সবচেয়ে বড় পুজি। টাকা-পয়শা, পদমর্যাদা বা শিক্ষা নয়।যদিও জীবনে এসবের মূল্য কম নয়।
একজন পুরুষ যিনি তার স্ত্রীকে ভালবাসেন, তিনি পারিবারিক শান্তি বজায় রাখতে অবশ্যই অর্থ উপার্জন করবেন। হয়তো সেটা বড় কোন পেশা নয়, হয়তো দিন মজুরী, বা আরো কম পারিশ্রমিকের কাজ। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে তিনি একটি সুখী পরিবারের মালিক।
আমার এক হাইস্কুল সহপাঠি, মেয়ে হিসেবে সে মোটেও রুপবতী নয়। পেশা হিসেবে সে একটি সরকারী প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা। বাড়ী থেকে শত অসহযোগিতার পরেও সে যে তার গ্রাজুয়েশন শেষ করে একটি চাকরি পেয়েছে এজন্য তার আত্নবিশ্বাসও একটু বেশি ছিল। কিন্তু বয়স ২৩ হওয়ার পরে তার স্বাস্থ্য যখন একধাপ খারাপ হল তখন বিয়ের জন্য পাত্র উপযুক্ত পাত্র পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। এমন সময় আমার-ই আরেক সহপাঠী, যে দুইবার এস্এসসি দেওয়ার পরেও পাশ করতে পারেনি সে বিয়ের প্রস্তাব পাঠালো। তার প্রস্তাবে একটি কথা যেটা ওই মেয়ে সহপাঠির মনে ধরেছিল সেটা হলো," স্কুল জীবন থেকে তোমাকে অনেক পছন্দ করতাম। কিন্তু ছাত্র্র খারাপ ছিলাম বলে বলার সাহস পাইনি। আজ আমি একটা চাকরি করি যা দিয়ে ভালোভাবে সংসার চলে যাবে।"
তাদের বিয়ে হলো প্রায় তিন বছর। চেহারা দেখলেই বোঝা যায় কতটা সুখী তারা। দু'জনের আয়ে গ্রামেরবাড়িতে তারা অনেক ভালো আছে।
আরেক জন এর কথা বলি, সে একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার।গ্রামের একজন সাধারণ মেয়ে হিসেবে শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে সে যে এ পর্যন্ত আসতে পেরেছে এটা তার জন্য অনেক কিছু। এখন সে চাকরি করছে একটি ফার্মে। কিন্তু পছন্দ হিসেবে তার শীর্ষে আছে আরেকজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। বয়স ছাব্বিশ। এখনো পর্যন্ত সে তার মনের মানুষের দেখা পায়নি। এজন্য সে যে চিন্তিত নয় তা নয়। সে চিন্তা তার স্বাস্থকে আরো একধাপ নামিয়ে দিচ্ছে। কারণ তার দরকার একজন সমশিক্ষায় শিক্ষিত, সমপেশার একজন স্বামী।মানুষের চিরন্তন জৈবিক চাহিদার চেয়েও সমাজকে দেখানো দায়িত্বটা এখন অনেক বড় ব্যাপার।