দেশ, পরিবার ও আত্নীয়-স্বজন থেকে দূরে থাকলে অনেক সময় খারাপ লাগে। কিন্তু সেটা যে কতটা প্রকট হতে পারে তা দেশের বাইরে লম্বা সময়ের জন্য না আসলে বুঝা যাবে না। দেশে থাকতে প্রতি সাপ্তাহিক ছুটিতে সারাদিন শেষে বিকেলে বের হতাম বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারতে। রাস্তার পাশের দোকানগুলো থেকে ঝালমুড়ি ভাজাপোড়া আর চা থেকে শুরু করে নামিদামি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট এর আইটেম কিছু্ই বাদ যেত না। মিরপুর শেওড়াপাড়া আর কাফরুল এর অলিগলি দলেদলে ঘুরতাম পাখীর মত করে।
আর এখানে বাইরে যাওয়ার কথা ভাবতেই গলা শুকিয়ে আসে। মনে হয় যেন বাইরে বেড়াতে নয়, যুদ্ধ করতে যাচ্ছি যোদ্ধার বেশে। মাইনাস ১০ থেকে শুরু করে -৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় মনে হয় পুরো পৃথিবীটা এক বিশাল ডীপফ্রিজ আর আর মানুষগুলো কুরবানী গরুর মাংস। আর বাইরের দৃশ্য পুরোটাই সাদাকালো’র এক বিশাল ক্যানভাস। কোন বৈচিত্র নাই।
তাই সারাদিন ঘরে বসে থাকা, শুয়ে থাকা, মুভি দেখা, পরীক্ষার প্রস্তুতি’র মাঝে পড়ে থাকতে থাকতে নিজেকে অন্যরকম একটা মানুষ মনে হয়। ঘুম থেকে উঠার পরে এক ঘন্টা ধরেও মন খারাপ থাকে। স্কাইপ দিয়ে কথা ভিডিও কল করেও বাড়িতে ফেলে আসা মুখগুলোকে খুব কাছ থেকে দেখতে ইচ্ছা করে।দেশের কাঁচা মরিচ দিয়ে ভাত খাইতে ইচ্ছা করে। শনি মঙ্গল বারে হাটে যেতে ইচ্ছা করে। বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারতে ইচ্ছা করে।
আমি জানি আমার বন্ধুরা এতোটাই ব্যস্ত যে তারা হয়তো আমাকে মিস করার সময়ই পায়না। কিন্তু আমি তাদের মিস করি। প্রচন্ড।