সাদা চামড়ার গ্রহনযোগ্যতা সর্বব্যপী। এই যেমন আমাদের দেশের কালো মেয়েদের বিয়ে দেওয়া যতটা কঠিন ফর্সাদের ততটা সহজ। গায়ের রং কালো এবং বদসুরত হলে তাকে পড়াশোনা, চাকরী, প্রেম, বিয়ে সর্বোপরী জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হতে হয়। এ সত্য ছেলে মেয়ে উভয়ের জন্য প্রযোজ্য।
চীনে সবাই সাদা চামড়ার অধিকারী। কিন্তু তারপরেও আরেকটু সাদার প্রতি এদের একটু বেশি আগ্রহ আছে। ব্যাপারটা ওয়াশিং পাওডার এর সেই বিজ্ঞাপনের মত,”সাদা, সাদা আরো সাদা”।
ওদের সামনে দিয়ে ইউরোপ আমেরিকার কোন শ্বেতাঙ্গী হেটে গেলে ওরা বলে, ”দেখো ওই লোকটা সাদা। নিশ্চিত আমেরিকান হবে।”
আগ্রহ আরেকটু বেশি হলে ওরা কাছকাছি চলে যায় পরিচিত হতে। পরিচয়পর্ব শেষ করে নিজেকে গর্বিত ভাবে। বন্ধমহলে গল্প করে এই নিয়ে। আমেরিকানদের মুখ থেকে একটা ইংরেজি শুনলে সেটার উচ্চারণ প্র্যাকটিস শুরু করে।
ওদের কাছে গায়ের রঙ এর সঙ্গা একটু অন্য রকম। যেমন আমেরিকানরা হইলো সাদা, ওরা হলদে, আমরা হলাম বাদামী আর কান দা ( আমার আফ্রিকান ক্লাশমেট) হচ্ছে কালো।
মানুষ হিসেবে কারা ভালো? জানতে চাইলে বলবে, ”সাদারা।”
আর ইংরেজি শেখার প্রতি এদের এতটা আগ্রহ দেখলে মনে হয়, এটা শিখতে পারলে উন্নতির চরম শিখরে পৌছে যাবে। আজকে দুই চাইনিজ আমাকে তাদের ইংরেজি লিশেনিং এর অডিও শুনিয়ে বলে, বুঝতে পারো?
চাইনিজ ছাত্রদের পড়ানোর জন্য লিসেনিং। এতটা সহজ আর ধিরে ধিরে বলছিল যে আমাদের দেশের বাচ্চারাও বুঝতে পারবে। আমি ওদের সাম ইংলিশ কিছু চাইনিজ ব্যবহার করে অডিওটির কথোপকথন বুঝালাম। ওরা কিছুক্ষণ হা হয়ে গেল। এরপর আরেকজন শুনালো টেইলর সুইফট এর গান। আমারে বলল বুঝতে পারো? আমি বরাবরের মত বললাম, হ্যা।
ওদের চোখ আবার বড় হলো। আমি ওদের বললাম, তোমরা ইংরেজি কেন পড়তে চাও? এটা যদি তোমাদের জন্য এতই দরকারী হত তাহলে তোমাদের সরকার-ই পড়ানোর ব্যবস্থা করতো। যেমন আমরা পড়ি।”
ওরা উত্তর খুজে পেলনা। এদের মধ্যে যারা কলা (আর্টস) রিলেটেড সাবজেক্ট এ পড়াশোনা করে এরা ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে ভেবে দিকবিদিক হয়ে যায়। একটা চাকরী পাওয়া এদের কাছেও সোনার হরিণের মত।