ভারতের কেরালা রাজ্যের ত্রিসুর জেলা'র মেথালা, কোডুঙ্গাল্লুর তালুক। এখানেই রয়েছে ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে পুরনো মসজিদ। প্রাচীন কেরালা রাজ্যের রাজা ছিলেন চেরামান পেরুমল। কথিত আছে, ইসলামের শেষ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সা) যখন চাঁদকে দ্বিখণ্ডিত করেন, তখন, সেটা কেরালা থেকে দেখতে পান রাজা পেরুমল। এরপরে ঘটনাক্রমে জানতে পারেন, আরবে মহানবী (সা)-এর আগমন ঘটেছে। তখন তিনি রাজ্যের ভার ছেলের কাছে দিয়ে পাড়ি জমান আরবে।
বলা হয়ে থাকে যে, রাজা পেরুমল মহানবী (সা)-এঁর দরবারে আদার আঁচার উপহার হিসেবে নিয়ে যান। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পরে, নিজ রাজ্যে ফেরার পথে, রাজা চেরামান পেরুমল মারা যান। নবীজীর সাথীদের একজন তাবেয়ী মালিক দিনার কেরালায় পৌঁছে রাজার মৃত্যুর খবর তখনকার কেরালার রাজার কাছে দিলে তিনি একটি মসজিদ নির্মানের জন্যে জায়গা বরাদ্দ দেন।
ছবি-২ঃ মসজিদটির পুরনো কাঠামো
পরবর্তীতে, ১৫০৪ সালে, পর্তুগীজরা এই মসজিদটি সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেয়। বর্তমান অবকাঠামোটি নির্মাণ হয় ১৯৮৪ সালে। এই মসজিদে একটি প্রদীপ আছে যা ১০০০ বছরেরও পুরনো এবং যা কখনো নিভতে দেয়া হয়নি। দর্শনার্থীরাই এটা যুগের পর যুগ জ্বালিয়ে রেখেছেন। এছাড়াও, মসজিদে হিন্দুদের অনেক আচার-আনুষ্ঠানিকতা হয়ে থাকে। তারমধ্যে, বিদ্যারামভমের অনুষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত।
বিদ্যারামভমের অনুষ্ঠান (বিদ্যা মানে "জ্ঞান", আরম্ভম মানে "শুরু") যা সাধারণত বিজয়দশমীতে অনুষ্ঠিত হয়, ঐতিহ্য অনুযায়ী হিন্দুরা তাদের সন্তানদেরকে একজন পুরোহিতের মত একজন শিক্ষিত ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে বিদ্যা শিক্ষার জন্য দীক্ষিত করে। চেরামান মসজিদে, এই অনুষ্ঠানে মসজিদের মুসলিম ইমাম দ্বারা সঞ্চালিত হয়। ইমাম সাহেব যিনি একটি শিশুর জিহ্বায় বালিতে আঁকা বর্ণমালা খুঁজে বের করেন। এঁর মাধ্যমে শিক্ষার দেবী সরস্বতীকে তার প্রতি আহবান জানানো হয়।
চেরামান পেরুমল জুমা মসজিদটি প্রথম নির্মিত হয় ৬২৯ সালে।
তথ্যসূত্রঃ
১) দ্যা হিন্দু (ভারতীয় পত্রিকা)
২) ডেক্কান হেরাল্ড,
৩) দ্যা টাইমস অব ইন্ডিয়া
৪) ছবি-২ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:৪৩