আমি পুরো কুরআন পড়েছি, এবং এখন পর্যন্ত যত দূর প্রিয় নবীজীর পথ শিখেছি, তা থেকে জানি যে, ইসলাম কখনোই আক্রমণ করার কথা বলে না। ইসলামের শেষ নবী (সাঁ)-এঁর সময়ে যতগুলো যুদ্ধ হয়েছে, সেগুলোর সবই ডিফেন্সিভ ছিলো। অথচ, মহানবী'র জীবনী নিয়ে লেখা 'আর-রাহীকুল মাখতুম' বইটি'র বাংলা অনুবাদটি এই কথাই লিখেছে যে - নবীজী গনিমতের লোভ দেখিয়ে যুদ্ধে যেতে বলেছেন।
আমি কেন এই বইকে নিষিদ্ধ করার দাবী জানাচ্ছি?
১) আমি এই কারণে বইটি নিষিদ্ধ করতে বলছি যে, প্রথমতঃ আল্লাহ ও মহানবী সম্পর্কে ভুল ধারণা সৃষ্টি হবে। এমনিতেই অনেকে ইসলামের হুর-পরী নিয়ে ঠাট্টা করেন, গনিমতের কথা শুনলে তারা তো হেসেই খুন হোন। গনিমতের ভুল ব্যাখ্যা দেন।
২) গনিমতের লোভ দেখিয়ে জঙ্গি তৈরী বন্ধ হবে। এই গনিমতের লোভ দেখিয়ে অনেক খারাপ লোকই সাধারণ মুসলিম-যুবাদের বেপথে নিয়ে যাবে, যুদ্ধ করিয়ে পরের ক্ষতি করাবে।
৩) এই বইটি পড়লে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যা করতে বলেননি, সেটা মানুষ করবে। রেফারেন্স হিসেবে নিয়ে আসবে, এই বইটি।
এই বইটিতে কি আছে?
এই বইটিতে বদর যুদ্ধের কারণ হিসেবে লেখা আছে যে, মহানবী (সাঁ) বুঝি বলেছেন - "সিরিয়া থেকে মক্কা প্রত্যাবর্তনকারী এক কুরাইশ কাফেলার সঙ্গে প্রচুর ধনমাল রয়েছে। সুতরাং, তোমরা এর জন্য বেরিয়ে পড়। হয়তো আল্লাহ পাক গনিমত হিসেবে এসব মালপত্র তোমাদের দিয়ে দিবেণ।"
সম্মানিত পাঠকগণ, বুঝে দেখুন, এখানে কি কি শব্দসমূহ লেখা আছে! 'প্রচুর ধনমাল', 'গনিমত' এসবের লোভ দেখিয়ে যুদ্ধ!!! এগুলো কি বিশ্বাসযোগ্য? যেখানে ইসলামে কাউকে প্রথমে আক্রমণের কথাই নিষিদ্ধ, সেখানে সম্পদের লোভ দেখিয়ে যুদ্ধে যাবার কথা মহানবী বলবেন কেন!!!
দ্বিতীয়ত, বইটির ৩৬০ নং পৃষ্ঠায় লেখা আছে যে, আবু সুফিয়ানের ধনসম্পদওয়ালা কাফেলার উপরে মদীনার মুসলমানরা আক্রমণ করতে চেয়েছিলেন। অথচ, এটা সত্যি নয়। বাংলাদেশের ইসলামী ইতিহাস বইগুলোতে লেখা আছে যে- আবু সুফিয়ানের ভুয়া খবর মক্কায় পৌঁছালে মক্কার কুরাইশরা যুদ্ধের জন্যে আগে সৈন্য পাঠায়। অর্থাৎ, কুরাইশরাই আগে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে আক্রমণ করেছিলো। আর, মদীনার মুসলমানরা আত্মরক্ষা করেছিলেন। অথচ, আর-রাহীকুল মাখতুম বইয়ে উল্টোটা লেখা!
আবারো বলছি, মহানবী (সাঁ)-এর সময়ে কোন আক্রমনাত্মক যুদ্ধ হয় নাই। তিনি যতগুলো যুদ্ধ করেছেন, সবগুলোই ছিলো ডিফেন্সিভ। প্রথম আক্রমণাত্মক যুদ্ধ শুরু হয় খলিফা মুয়াবিয়া'র সময় থেকে যখন তিনি যাকাত দিতে অস্বীকার করার কারণে একটি গোত্রের বিরুদ্ধে সৈন্য প্রেরণ করেন।
আশা করি, সরকার এই বইটি নিষিদ্ধ করবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:১৪