বলছি বহুকাল পরের কথা!
এক জরাগ্রস্থ সন্ধ্যায়-বহুদিন পর,
আমাদের পরিচিত শতবর্ষী বিলের ধারে
আধো আলোয়, আধো আঁধারে আমরা;
পরস্পরকে দেখে স্মিথ হাসি।
তোমার চুলে পাক ধরেছে নাকি? চমকে উঠে
শাড়ির আঁচলে চুল ঢেকে তুমি বল 'কই নাতো!'
আমিও আমার বিবর্ণ চুলে;
মনের ভুলে হাত বুলাই আগের মত।
ভাবি, বলবে (তোমার) এই চুল ভালবাসি।
মনে পড়ে আমাদের সেই সব দিন- মনে পড়ে নাকি?
আমাদের সাপ-লুডু খেলা সেই যুগ?
মনে পড়ে কুটনা বুড়ির কথা,
অথবা রোগামত সেই ছেলেটা।
মনে পড়ে পেয়ারা গাছের তল?
পুকুরঘাটের ক্লান্ত দুপুর।
দল-ছিন্ন দুটো পাখির সন্ধ্যাবেলার উড়া-উড়ি, মনে পড়ে নাকি?
মনে পড়ে পাতায় লেখা ভুলেভরা চিঠির কথা?
মান-অভিমান, আদর-শাষন সবই ছিল চিঠির মাঝে।
মনে পড়ে শীতের রাতের গীত-আয়োজন?
চাদরে আদর মাখা মুখটি তোমার ঢাকা ছিল,
আমি কিন্তু ঠিক চিনেছি সেদিন তোমার দু-চোখ দেখে।
সে কি! তোমার চোখে পানি কেন?
'ও কিছুনা। মনে হয় ধুলো-কণা।'
চমকে উঠি আজো তোমার দু-চোখ দেখে।
গভীর-জলের ঢেউ খেলে যায় ক্ষণে-ক্ষণে চার-চোখেতে!
এখন জলের বড়ই দাম।
অযথাই কিছু জল ঝরানোর মানে হয়!
তারচে বরং এসো দুজন দীর্ঘশ্বাসে
বিলের পানি আধেক করি।
সঞ্চিত হোক পুঞ্জি কিছু লাভের খাতায়।