রবিউল আউয়াল মাসের বারো তারিখ।
সোমবার।
শুক্লা-দ্বাদশীয় অপূর্ণ চাঁদ সবেমাত্র অস্ত গিয়াছে। সুবহে সাদিকের সুর্খ-নূরে পূর্ব আসমান রাঙা হইয়া উঠিতেছে। আলো-আঁধারের দোল খাইয়া ঘুমন্ত প্রকৃতি আঁখি মেলিতেছে।..............................।
আরবের মরু দিগন্তে মক্কা নগরীর এক নিভৃত কুটীরে একটি নারী ঠিক এই সময়ে সুখস্বপ্ন দেখিতেছিলেন।
নাম তাঁর আমেনা।
আমেনা দেখিতেছিলেনঃ এক অপূর্ব নূরে আসমান জমিন উজালা হইয়া গিয়াছে। সেই আলোকে চন্দ্রসূর্য গ্রহতারা ঝলমল করিতেছে। কার যেন আজ শুভাগমন, কার যেন আজ অভিনন্দন। যুগযুগান্তের প্রতীক্ষিত সেই না-আসা অতিথির আগমন মুহূর্ত আজ যেন আসন্ন হইয়া উঠিতেছে।........................।
আমিনার কুটীরেই বা আজ কী অপরূপ দৃশ্য! কারা ওই শ্বেতবসনা পুন্যময়ী নারীরা? বিবি হাওয়া, বিবি হাজেরা, বিবি মরিয়ম, সবাই আজ তাঁর শিয়রে দণ্ডায়মান। বেহেশতী নূরে সারা ঘর আজ আলকিত।বেহেসতী খুশবুতে বাতাস আজ সুরভিত।
এক স্নিগ্ধ পবিত্র চেতনার মধ্যে আমিনার স্বপ্ন ভাঙ্গিল। আঁখি মেলিয়া চাহিয়া দেখিলেন-কোলে তাঁহার পূর্ণিমার চাঁদ হাসিতেছে।
সংগে সংগে সারা সৃষ্টির অন্তর ভেদিয়া ঝঙ্কৃত হইল মহাআনন্দধ্বনি; "খুশআমদিদ ইয়া রসুলুল্লাহ!" "মারহাবা ইয়া হাবীবুল্লাহ"! বেহেসতের ঝরোকা হইতে হুর-পরীরা পুষ্পবৃষ্টি করিতে লাগিল;.................................।
মহাকাল ঋতুচক্রে আজ কি প্রথম -বসন্ত দেখা দিল?
প্রকৃতির কুঞ্জবনে আজ কি প্রথম কোকিল গান করিল?
কে এই নব অতিথি- কে এই বেহেশতী নূর- যাঁহার আবির্ভাবে আজ দ্যুলোকে-ভূলোকে এমন পুলক শিহরণ লাগিল?
এই মহামানবশিশুই আল্লার প্রেরিত সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ পয়গম্বর- নিখিল বিশ্বের অনন্ত কল্যান ও মূর্ত আশীর্বাদ-- মানব জাতির চরম এবং পরম আদর্শ স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি- বিশ্বনবী-
-হযরত মুহম্মদ-
(সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া-সাল্লাম)
______________________________________________
গোলাম মোস্তফা রচিত "বিশ্বনবী" এর পরিচ্ছদ-১ এর অংশ বিশেষ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০৪