মৃশরিক ওয়ালিদ ইবনে মৃগীরা রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম কে মাজনুন তথা উম্মাদ বলতো । এতে প্রিয় নবী অন্তরে কিছুটা কষ্ঠ অনুভব করেন । এটা মহান রাব্বুল আলামিনের পছন্দ হলো না । আল-কোরআনে এরশাদ হলো-
'' নুন,কলম ও তার লিপিবন্ধ বিষয়ের শপথ । আপনার রবের অনুগ্রহে আপনি উম্মাদ নন । আর আপনার জন্য অবশ্যই রয়েছে অশেষ পুরষ্কার । ( পারা-২৯, সুরা কলম,রুকু-১)
এর পর আল্লাহ পাক সাথে সাথে বদবখত খবিছ ওয়ালিদ ইবনে মৃগীরার দশটি দোষ বর্ণনা করেন । আল-কোরআনে আবার এরশাদ হলো-
অনুসরণ করোনা তার যে কথায় কথায় শপথ করে, যে লাঞ্চিত, যে পশ্চাতে নিন্দাকারী, যে একের কথা অপরের নিকট বলে বেড়ায় , যে কল্যাণের কাজে বাধা প্রদান করে , যে সীমালঙ্গনকারী, যে পাপিষ্ট, যে রুঢ স্বভাব, যে চোগলখোর এবং জারজ সন্তান যদিও সে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে সমৃদ্ধশীল । তার নিকট আমার আয়াত পাঠ করা হলে সে বলে এটি তো পূর্বের রুপ কথা মাত্র । আমি তার শুঁড় দাগিয়ে দেবো ।
ওয়ালিদ যখন আল-কোরআনের এ আয়াত পাক শুনলো তখন সে তলোয়ার নিয়ে মায়ের কাছে উপস্থিত হলো । তার মা কে বলল- মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম ! আমার দশটি দোষ বর্ণনা করেছে তার নয়টি আমার মধ্যে আছে আমি তা জানি কিন্তু বাকী একটি জানিনা তুমিই জানো । বলো , আমি হালাল সন্তান না জারজ(অবৈধ) সন্তান ? সত্য বলো, নতুনা তোমার গর্দান উড়িয়ে দেব । কেননা মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম ! কখনও মিথ্যা বলে না । তখন তার মা বলল- মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম ! সত্যই বলেছে । তুমি জারজ সন্তান । তোমার পিতা উকবা ছিল নপুংসক অথচ ধনী । তার এই সম্পদ অন্যেরা ভক্ষণ করার আশংকা আমি করতাম । তাই এক রাখালের সাথে আমি জেনা করি এবং তুমি তারই সন্তান। (তাফসীরে রুহুল বয়ান, শানে হাবীবুর রহমান, পৃষ্টা-২৯৯)
অপরদিকে হাদিসে এরশাদ হয়েছে যারা নবী পাক ও তার আহলে বাইতের (তার বংশধর) শান,মান,ইজ্জত,মর্যাদা নিয়ে যারা সমালোচনা করে,কটুক্তি করে,হাস্য-কৌতুক-রঙ্গ-তামাসা করে তাদের জন্ম নিচের তিন অবস্থার যে কোন একটি তে হয়-
১. হয়তো তাদের জন্মদানে বাপ-মায়ের ত্রুটি ছিল ।
২. হয় তো তাদের মা রিতুবর্তী(মাসিক অবস্থায়) ছিল ।
৩. হয় তো সে জারজ সন্তান ।
ইসলামী শরিয়া দৃষ্টিতে কাফির, মুশরিক হলো ওরাই যারা ইমান আনে নি । আর মুনাফিক হলো ওরাই যারা নামমাত্র ইসলামে দাখিল হয়ে আল্লাহ-রাসুল-আহলে বাইত-ইমাম -ওলি আউলিয়াদের শান-মান-মর্যাদা নিয়ে যুগে যুগে কটুক্তি-সমালোচনা হাস্য-কৌতুক-রঙ্গ-তামাসা করে । মুনাফিকদের মুখে ইমান ও আমলের বোল, অন্তরে শয়তানি বোল । মুনাফিকরা কাফির-মুশরিকদের চেয়ে খারাপ । তারাই জেনে শুনে ইসলামকে বেশী ধ্বংস করছে । যুগে যুগে ইয়াজিদদের দোসর রা কোরআন-হাদিসের অপব্যাখ্যা দিয়ে জাল হাদিস তৈরি করে প্রচার করে আসছে । মুনাফিকদের প্রচারিত ইসলাম ঠুনকো ইসলাম এবং ইয়াজিদি ইসলাম । আজ কাফির মুশরিকরা ইসলাম ও মহানবী নিয়ে যা বলছে তা তো আমাদের সমাজের একশ্রেণীর মোল্লা-মৌলভীদের কারণেই । মোল্লা-মৌলভী রা ইসলামের যে অপব্যাখ্যা দিচ্ছে তারই কারণে এ জাতি আজ নিষ্পেসিত । যেখানে অন্য ধর্মের লোকজন তাদের ধর্ম প্রচারক কে মাথার উপর রেখে সম্মান ইজ্জত করছে অপরদিকে আমরা অধিকাংশ মুসলিম আমাদের ধর্ম প্রচারক প্রিয় নবী ও তার আহলে বাইত কে যুগে যুগে পদ-তলে এনে তাদের সাধারণ মানুষের কাতারে এনে অপদস্ত করছি । হায় রে মুসলমান ! কবে হুস হবে এ জাতির !
পরিশেষে যারা নবী ও তার আহলে বাইত এর শান-মান-ইজ্জত-মর্যাদা নিয়ে সমালোচনা করে,কটুক্তি করে,হাস্য-কৌতুক-রঙ্গ-তামাসা করে , তারা কোরআনে বর্ণিত উপরোক্ত আয়াতের দশ দোষে দুষিত এবং তাদের সর্বশেষ দোষ হলো তাদের জন্মে অবশ্যই ত্রুটি আছে । হে আল্লাহ সত্যকে জানার ও মানার তোফিক দিন । আমীন ! আল্লাহুম্মা সাল্রি আলা মোহাম্মদ ওয়ালা আলে মোহাম্মদ ।