(অঘ্রাণ রাতের একটা অস্পষ্ট মাদকতা আছে। হালকা কুয়াশাঘেরা চাঁদের রাতে বিস্তীর্ণ বনভূমি'র দিকে তাকিয়ে থাকলে ব্যাপারটা ভয়াবহভাবে টের পাওয়া যায়। আমি প্রতি রাতেই আগের চেয়ে বেশি করে বিস্মিত এবং মুগ্ধ হচ্ছি ! -- পাড়াগাঁও, ভালুকা থেকে)
আমাদের রাস্তাটা গাঙচিল হয়ে গেছে, নীল জলে আকাশের বিম্ব
ভোর-রাতে শুরু হয় কুয়াশার কারসাজি, আরও কেউ পাশে থাকে জড়িয়ে
কিংবা থাকেনা কেউ, অথচ থাকার কথা - এই নিয়ে দোটানায় চরাচর
মেঘের ওপার থেকে উঁকি দিয়ে চাঁদ দেখে ভীষণ অবাক চলচ্চিত্র
আমাদের হয়তোবা আমাদের পাশে বসে আমাদের গান শোনা হত না
প্রখর চাঁদের রাতে গহীন বনের পথে আমাদের গাঙচিল উড়ে যায়
ডানার তীব্র বেগে জোনাক লুকিয়ে পড়ে - ভীত এবং সন্ত্রস্ত
এবং এসব দেখে তখন তোমার চোখে পাখির চোখের মত বিস্ময় !
আমরা কই হারাবো? - হারানোর রীতি-মতে এইসব জানা থাকা অনুচিৎ
আমাদের গতিপথ বায়বীয় বলে তাতে সাগরের ভূমিকাও যোগ হয়
কোথাও নিম্নচাপ আমাদের তাড়া করে, কোথাও ঘূর্ণি টানে গভীরে
অঘ্রাণ রাত্রের প্রধান অন্ধকারে আমরা ভেসেই চলি অবিরাম।
গহীন বনের পথে জোছনার উৎপাত - দৃশ্যটা যেন পৃথিবীর নয়
কাঁচপোকাদের ঘরে জোনাকেরা ঢুকে পড়ে - এই নিয়ে ভয়ানক গোলমাল
ভ্যাবাচেকা দৃষ্টিতে এসব তাকিয়ে দেখে আমদানী হয়ে আসা অর্কিড
বৃষ্টির জলে খুব ভিজে গিয়েছিল বলে অঘ্রাণে ঘ্রাণ তারা পায় না।
তুমি জানো সিংহটা মরে যেতে পারে তবু বেঁচে থাকে স্বপ্নেরা সিংহের
বিস্ময় বেড়ে চলে ভয়াবহ অনুপাতে - কোনও এক বিপন্ন স্রষ্টার
পরিযায়ী পাখি জানে বাতাস কতটা গাঢ় - বাতাস যে বার্তায় ভরপুর
সে বাতাসে ভেসে গেল ভালবাসা ভালবাসা - স্বপ্ন তো বিপণন হয় না !
এইসব গানগুলো শুধুই তোমার তরে ভাসিয়ে দিয়েছি আমি, তারপর
চেয়ে দেখি বাতাসের গতিপথ এলোমেলো, কিন্তু তোমার দিকে যাচ্ছে;
ছুটে চলা ও বাতাস, শুনিয়ে দেবে না তাকে শাহেদের প্রার্থনা-সঙ্গীত?
মায়াময় স্বপ্নেরা অবোধ কুয়াশা হয়ে ভেসে থাকে সকরুণ বাঙলায়...