সেই বহুকাল আগের কথা তখনও ফেসবুক নামক বইটি ইন্টারনেটে আসে নাই।তখনকার গল্প বলিতেছি
আম্রে মুকুল আসিবার কিছু দিবস পর একজন জোয়ান ছেলে বিবাহ করিল এক রূপসী কন্যাকে।তাহার বহুদিনের খোয়াব প্রতিবছর সহধর্মনীর জন্মদিবসে সে সারপ্রাইজ দিইয়া পত্নীর পিলে চমকায়া দিইবে । আর এই কার্য সম্পাদানের জন্যে তাহার জানা দরকার পত্নীর জন্মতারিখ খানা। তখন তো আর ফেসবুক নামক কোনো বই ছিলো না যে বইয়ের পাতা উল্টাইয়া প্রিয়দর্শনীর জন্মতারিখ জানিয়া লইবে। ইহা জানার জন্য পত্নীর পিতামাতা কিংবা পত্নীর কাছে দারস্থ হইতে হইবে।ছেলেটি মনে মনে সিদ্ধান্ত লইলো মধুর রাতে পত্নীর কাছে জানিয়া লইবে জন্মদিবস খানা।
বর (যে জনা বিয়া করিয়া নিজ সিদ্ধান্তে গ্যাড়াকলে পড়িবার মত্তহয় সেজনাকে ছেলে বলা নিত্যান্ত বেকুবি) মহা আনন্দে বাসর ঘরে প্রবেশ করিয়া কনের হস্তখানা নিজ হস্তে বুকখানায় ধারন করিয়া বলিল
-প্রিয়া তুমি অতি সুন্দর চাদেঁর মতন মুখ
কত তারিখ জন্ম তোমার বললে পাইতাম মনে সুখ।
-স্বামী তুমি নির্লজ্জ অতি বেশরম
২৯ ফেব্রুয়ারী জন্ম আমার
ছিল ফাগুনের গরম।
এই উত্তর শুনিয়া স্বপ্নভঙ্গের পর বরের মনখানা কিরূপ হইয়াছে সেটা আর জানা হয় নাই। জানা হইবে কি করিয়া অন্যের প্রাইভেসি নষ্ট করা তো আর তাহাদের কার্ম নহে।
যাইহোক তখনকার দিনে ঈশ্বরের কৃপায় ছেলেদের ছেয়ে মেয়েদের হ্নদয়ে পিরিত নামক বস্তু খানা অতি মাত্রায় বর্ষিত হইয়া ছিলো যাহার কারণে জন্মদিবসে প্রেমিকের কাছ হইতে অল্প কিছু পাইলে তাহাদের পিলে চমকাইয়া উঠিত।আর ছেলেরাও সারা বছর অপেক্ষা করিতো কখন আসিয়া দাড়াঁইবে প্রিয়ার জন্মদিবস।
এখন আমাদের উপর ঈশ্বরের সেই কৃপা আর নাই এখন বিবাহ বার্ষিকীতে হীরার হার আর জন্মদিবসে লেটেস্ট আইফোন না হইলে নারীগণের পিলে চমকায় না।পিলে নামক বস্তুখানার দাম এখন হীরার হার আর আইফোনে গিয়া ঠেকিয়াছে।
এইছাড়া দিবস মনে না রাখিতে পারিলে রইয়াছে কঠিন যন্ত্রণা;-(। আমি নিত্যান্ত হতদরিদ্র মানুষ ঈশ্বর আমাকে পিরিত দিলেও নারীর পিলে চমকানোর ক্ষমতা দেয় নাই।
তাই জীবনের কঠিনতম সিদ্ধান্ত আজ নিয়া নিলাম আমার বিবাহ এবং কনের জন্ম তারিখ উভয় ২৯ শে ফেব্রুয়ারী হইতে হইবে ইহার অন্যথায় হইবে না।আশা করি কনে খুঁজিয়া পাইতে ঈশ্বর আমার উপর কৃপা হইবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:২৮