"নামে নয় কাজে
পরিচয়"এই বাক্যটি আমাদের দেশে বহুল
প্রচলিত।কিন্তু
বর্তমানে ভারতীয়
সিরিয়ালের প্রভাবে
বাংলাদেশের যে
অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে,তাতে বাক্যটিকে
এভাবে বলা উচিত"কাজে নয় নামেই
পরিচয় "।
প্রতিবছর রমজানের ঈদ আসলেই ঈদের পোশাক কেনাকাটার ধুম পড়ে যায়।সবাই নিজের পছন্দের পোশাক কিনতেই
ব্যস্ত হয়ে পড়ে । কিন্তু কয়েক বছর ধরে লক্ষ্য করলে দেখা যায় বেশির ভাগ মানুষই কয়েকটি
নির্দিষ্ট নামের পোশাক কিনতে ব্যস্ত । আর এই পোশাকের
নাম গুলো সব ভারতীয়
টিভি সিরিয়ালের ।এই সিরিয়াল গুলো বাংলাদেশের মানুষ
বিশেষ করে মেয়েদের উপর এমন প্রভাব বিস্তার করেছে যে সিরিয়াল গুলো এক একটা ব্র্যান্ড হয়ে গেছে ।আর এজন্যে পোশাকের জন্য এই টিভি সিরিয়ালের নাম গুলো পরশ পাথর সরুপ । পোশাক যতই নিম্ন
মানের হোক যদি কোন
ভারতীয় টিভি সিরিয়ালের নাম ট্যাগ করেন তাহলে
পোশাকটি সুপার ডুপার
হিট । যদি ৫০০ টাকা
মূলের পোশাকের নাম হয় কিরণমালা কিংবা পাখি তাহলে এই পোশাকটি মেয়েরা
৫০০০ টাকা দিয়েও
কিনতে রাজি ।কেউ নিজের পছন্দের
সিরিয়ালের চরিত্রের
নামে পোশাক কিনে
আবার কেউ প্রতিবেশির কাছ থেকে নাম শুনে
লাফালাফি শুরু করে
দেয় ।ভাব টা এমন আমার পাশের বাড়ির ভাবি পাখি ড্রেস কিনেছে তাই
আমাকেও কিনতে হবে,না হলে ভাবির কাছে আমার ইজ্জত ফেলুদা হয়ে যাবে ।তারা এমন
প্রভাবিত হয় যে একটি বারও চিন্তা করেনা ,আসলে পাখি ড্রেসটা কেমন ভাল না খারাপ ।শুধু সিরিয়ালের
নাম হলেই হইছে আর
কিছু চিন্তা করা লাগবেনা ।মেয়েদের এই সিরিয়াল প্রেমের সুযোগ নিচ্ছে
ব্যবসায়ীরা ।তারা নিন্ম মানের পোশাক গুলাকে সিরিয়াল গুলার নাম ট্যাগ করে মেয়েদের কাছে বিক্রি
করছে চড়া দামে। তাদের ও বা কি করা মেয়েরা যে সিরিয়াল প্রীতি শুরু করছে এতে তারা যদি সৎ থাকে তাহলে তাদের না খেয়ে মরতে হবে ।
এই সিরিয়াল প্রীতি মেয়েরা অনেক বাড়াবাড়ি পর্যায়ে
নিয়ে গেছে ।গত বছর
পাখি ড্রেসের জন্য স্ত্রী স্বামীকে ডির্ভোস দেওয়া
এমনকি আত্মহত্যা পযর্ন্ত করেছে । এই বছর শুরু হয়েছে কিরণ মালা ড্রেস
দিয়ে ।না জানি কতজন
ডির্ভোস আর প্রাণ দেয় এই কিরণ মালার জন্য।এই ভারতীয় সিরিয়ালের কি এমন জাদু আছে যে মেয়েরা এর জন্যে প্রাণ দিতে কুন্ঠিত বোধ করেনা । এই
বাংলাদেশ একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলো ভাষার
জন্য প্রাণ দিয়ে ।এবার
হয়তো এই বাংলাদেশ
আরেকটি ইতিহাস সৃষ্টি করবে পোশাকের জন্য প্রাণ দিয়ে । একটি সম্মানের আরেকটি লজ্জার । কিন্তু আমরা কোনো লজ্জার ইতিহাস চাই না ।প্লিজ মেয়ের তোমরা এই অপসংস্কৃতির পথ থেকে সরে এসো ।ধারণ করো তোমার প্রিয় মাতৃভুমির সংস্কৃতিকে ।এই
নোংরা অপসংস্কৃতির জন্য প্রাণ কিংবা পারিবারিক অশান্তি সৃষ্টি করে এই
বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে বিলীন করতে ভূমিকা রেখো না প্লিজ।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:১৯