শহর কিংবা গ্রামে প্রত্যেক যায়গায় ধামডা ধামডা ছাওয়াল মাইয়াদের একটি ফ্রেন্ড সার্কেল আছে। এই খাসির লাহান পোলা মাইয়ারা কি করে জানেন, একত্রে বসে দুনিয়ার চাটাম ছাড়া শুরু করে অথবা হই- হুল্লোর করে এলাকাটা আউলায়া দেয়। ইদানিং কালে আরেকটা তামাশা শুরু হইছে, তাহলো চার পাঁচজন একত্রে বইসা এনড্রেয়েড মোবাইল টিপাটেপি করিতে থাকে। তখন আর দুনিয়ার খবর থাকেনা। উপর থেইক্যা ঠ্যাডা না পড়া পর্যন্ত হুশ হয়না। এই যে এরা হগলতে বইশা মেলা মেশা কইরা বাড়িতে যায়, তাতে করেনা একজনের থেইক্যা আরেক জনের সাথে কানেকশন হইতে পারে। তাই আপনাদের ঘরে ধামডা ধামডী থাকলে তাদেরকে এখনি আটকান। নইলে ঘরের পাল মইরা ছাপ হইয়া যাইবে।
আগেরকার দিনে একজন আরেকজনের সাথে দেখা হইলে সালাম কিংবা আদাব দিত, তারপর মুসাফা এবং ঈদে-চাঁন্দে কোলাকুলি কইরা প্রানডা জুরাইতো। কিন্তু এহন পোলায় পোলায় বা পোলায় মাইয়ায় অথবা মাইয়ায় পোলায় হাগ দেয়, হাগ। তোমরা হাগ দে বাবা তাতে কোনো সমস্যা নাইকা, কিন্তু আপাতত অফ যা। কারণ তোগো হাগা হাগিতে পরিবারের অন্যে কারো সদস্যের প্রাণ দপ করে নিভিয়া যাইতে পারে।
করোনার ছুঁতোয় সরকার স্কুল কলেজ বন্ধ কইরা দিয়েছে। এই সুযোগে পাড়ার বেবাক ছাওয়াল মাঠে ধুমছে ক্রিকেট খেলিতেছে। হেতারা একজন আরেক জনের সাথে রান নেয়। একে অন্যের সাথে দল ভাগায়, দৌড়ায়া বোলিং করে। অপর দল ফিল্ডিং করার সময় নিজ দলের সাথে একত্রে বইসা থাকে। ক্যাচ আইট হইলে একজন আরেক জনের সাথে হাত মেলায়, জড়ায়া ধরে। এই সমস্ত বাদরামি বন্ধ করা দরকার। না হলে আপনার কচি বাচ্চাটা টান হইয়া ঘুমা্য়ই পড়িবে।
খেয়াল রাখুন আপনার যুবর্তী কইন্না পাড়ার রহিমুদ্দিনের ছেলের সাথে চিপা-চাপায় পলান্তিস পলান্তি খেলে কিনা। এমনও তো হতে পারে রহিমুদ্দিনের পারিবারে কেউ করোনায় আক্রান্ত। তাহলে কিন্তু আপনার পরিবারের সর্ব্বোনাশ হ্ইতে পারে। সুতরাং আপনার ধামড়া পোলা মাইয়া থাকলে এখনি আপাতত পলান্তিস পলান্তি খেলা বন্ধ করুন। না হলে আপনার গেম ওভার হইয়া যাইবেক।
বাঙ্গালির বাজে অভ্যাস আছে। হ, বাল পাকনামি করবেন না এই অভ্যাস আপনারাও আছে। তাহলো পকেটে কিছু টাকা থাকলে বাজারে গিয়ে মুখের থুতু (ছেপ) আঙ্গুলে লাগায়া টাকা গণনা শুরু করেন। মনে হয় যেন আপনিই একমাত্র টাকা পঁয়সা ওয়ালা অন্যেরা রাস্তায় ফকির। এই বদ অভ্যাস ছাড়ুন। কারণ টাকার মাধ্যমেই ভাইরাস সংক্রমন ও ছড়াতে পারে। টাকা গণনার সময় ক্লোরিন মিশ্রিত পানি ব্যবহার করতে পারেন। টাকা গণনার শেষ হলে নিজ দায়িত্বে সাবান দিয়ে হাত ধুঁয়ে নিবেন। মনে রাখবেন টাকা পঁয়সা আপনার পরিবারে করোনার কারণ হতে পারে।
যারা বিড়ি/সিগারেট শেয়ারিং করে খান তারা এখন থামুন। একাও খাবেন না। কারণ বিড়ি-সিগারেট শরীলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। বিড়ি খাওয়া ছাড়তে না পারলে মনে করুণ, বিড়ি খাইনা যেন গু খাই, অথবা আমার বিড়ি খাওয়া আদরের মেয়ের করোনার কারণ হতে পারে। আর যারা খোলা মাঠে বসে তালুতে দু হাত ঘষে স্টিক সাজান তারা একটু বিরতি দেন। কারণ আপনারা যারা স্টিক সাজান তারা তো আর একা একা টানেন না, লগে দোস্ত বন্ধুরে নিয়ে টানেন। দোস্ত বন্ধু আপনাকে করোনা ভরে দিতে পারে।
আপনি সারা জীবন সুদ, ঘুষ, আকাম-কুকাম করে শেষ বয়সে দয়াল নবীজীর রওজা মোবারক জিয়ারত করে বড় বড় দাড়ি রাখছেন। সেই দাড়িতে মেহেদি লাগিয়ে নূরানী ভাব ধরে নামের আগে টাইটেল লাগিয়েছেন হাজী সাব। এখন মহল্লায় আগ বাড়াইয়া মানুষকে জ্ঞান দিতাছেন। ইদানিং কয়েক চিল্লা দিয়া ধর্মীয় বাণী প্রসব করিতেছেন। আপনাকে মাঝেমধ্যে অন্যান্য মুসল্লিদের সাথে ছোট খাটো ধর্মীয় বিষয় নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করতে দেখা যায়। আপনি এমন ভাব নিয়া চলেন মনে হয় আপনি একমাত্র ছহী, অন্যেরা ভ্রান্ত। আপনার অতীত কর্মকান্ড এবং বর্তমান বাড়াবাড়ির কারণে জনগণ উপর থেইক্কা জ্বি” আচ্ছা” বললেও ভিতরে ভিতরে বইল্লা উঠে- একটা কালো বিড়াল সাতশ ইঁদুর মেরে এখন হাজি সাব সাজছে”। এই করোনাতে আপনি সবচেয়ে মারাত্মক বাণীটা প্রসব করছেন, তাহলো “করোনা ভাইরাস কাফেরদের রোগ, করোনা ভাইরাস মুসলমানদের পাপের শাস্তি, করোনা আল্লাহ বিধর্মীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য পাঠাইছে, করোনা মানুষের পাপের ফল, কিংবা মুসলমানদের জন্য করোনা ভাইরাস- আল্লাহ ভরসা।”
জ্বি, আপনাকে বলছি, এই সমস্ত আজবগুবি কথাবার্তা ছাড়ুন, কারণ আমার দয়াল নবীজী যুদ্ধের ময়দানে শিরস্ত্রাণ পরিতেন। সাহাবীদের তরবারী সাপ্লাই দিতেন। তীর দিয়া কাফেরদের বক্ষ ছিন্নভিন্ন করিতেন।
বি:দ্র: সীমিত আকারে সাধু চলিত -আঞ্চলিক মিশ্রণ জায়েজ। ইহা মানবিক কাজ কর্ম হিসেবে বিবেচনা কইরেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:০৭