উত্তরে আংকেল ঘটনার আরো গভীরতায় প্রবেশ করলেন-
অক্টোবর ১৭ হতে ২৩ ডিসেম্বর ১৭ ইং পর্যন্ত আশিক ও ঐশী’র অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি আমি মোটেও জানতে পারি নাই। আমার স্ত্রীর কাছে মেজর আশিকের স্ত্রী ও বাবা-মা বিষয়টি আলোচনা করে মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করে ব্যার্থ হলে ২৪ ডিসেম্বর, ১৭ ইং আমার বাসায় থাকাকালীন আমি রোজা ও আমার স্ত্রীর কাছ থেকে সার্বিক বিষয়টি প্রথম অবগত হই। তখন জানতে পারি পরিকল্পিতভাবে মেজর আশিক এর বুদ্ধি ও পরামর্শে তার সম্বন্ধীর স্ত্রী ঐশী স্বামীর ঘর ত্যাগ করে বাচ্চাদের নিয়ে তার বাবা জাফর কাওয়ালীর কাছে থাকতে থাকে। অধ্যাবধি সেখানে তার স্বামী গেলে অল্প সময় থাকতে দিয়ে বিদায় করে দিতো এবং মেজর আশিক কে ডেকে ঘন্টার পর ঘন্টা বাসায় অবস্থান করত। কখনও কখনও ৫/৬ ঘন্টা ঐশী ও আশিক বাসার বাইরে অন্যত্র অবস্থান করত। আমি পরোক্ষভাবে বিষয়টিতে ঢুকতে গেলে আশিক বুঝতে পেরে আমাকে সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে।
পরবর্তীতে তারা কাপ্তাই থাকাকালীন আশিক প্রতিদিন রাত্রি ১০/১১টা হতে মধ্যরাত অবধি বাসার বাইরে লনে বসে ঔশীর সাথে মোবাইল কথোপকথন অব্যহত রাখে। আশিকের স্ত্রী আফরোজা ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারতো না। একাকী চোখের পানি ফেলত। ফেব্রুয়ারী ১৮ এর ১ম সপ্তাহে ঐশী চট্টগ্রাম আসলে আশিক চট্টগ্রামে গিয়ে co এর অনুমতি ছাড়া রাত্রিতে বাইরে অবস্থান করে ও মোবাইল বন্ধ রাখে। বিষয়টি co হতে-৩১৬ ব্রিগেড কম্পান্ডার বিগ্রেডিয়ার ওয়াসিম জ্ঞাত হলে কমান্ডার তার Channel এর মাধ্যমে আশিক/ঔশী কে একত্রে থাকার তথ্য উদ্ধার করে। পরে ৮ হতে ১০ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ মেজর আশিক কে বিগ্রেডে ডেকে তার বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগ জিজ্ঞাসা করেন। আশিক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানায়, সে তার সম্বন্ধীর স্ত্রী ঔশীর সাথে রাতে একত্রে ছিল। এর দ্বারা কমান্ডার তাকে সাজা দেন এবং সতর্কও করে দেন। [ফিরে এসে ২/১ দিন পর মেজর আশিফ তার CO লেঃ কর্ণেল মাহিন এর কাছে Appendix- J জমা দেন।]
বিষয়টি আমি কমান্ডার হতে ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮ইং তারিখে জানতে পারি। সার্বিক বিষয়ে যথাযথ বোঝানোর জন্য একই দিন রাত্রি ৮টায় আমি আশিক কে মোবাইলে বোঝানোর চেষ্টা করতে শুরু করলে সে আমার সাথে অস্বাভাবিক এবং অবাস্তব আচরণ ও বক্তব্য শোনায় যা ভাষাহীন। আমি সম্পূর্ণভাবে হতবাক হয়ে যাই। এরপর হতে অদ্যবধি তার সাথে বা তার স্ত্রীর সাথে আমার কোন যোগাযোগ ছিলোনা। তবে ঘটনা প্রবাহ আশিক এর শ্বশুড়-শ্বাশুড়ি আামায় প্রতিনিয়ত জানিয়ে থাকেন। আশিক স্টাফ কলেজে এলেও তার স্ত্রী ও সন্তানদের কে জোড় করে অসুস্থ্য শ্বশুড়-শ্বাশুড়ীর কাছে রেখে অফিসার্স মেসে থেকে কোর্স চালিয়েছেন।
পরবর্তীতে আমার বড় ছেলের বিবাহ বিষয়ে আমি ও আমার স্ত্রী ব্যস্ত থাকায় এই বিষয়ে ৫ মে, ২০১েইং পর্যন্ত সম্পূর্ণ অজ্ঞাত থাকি। কিন্তু গত ০৬ মে ২০১৮ আশিক এর শ্বশুড় মোবাইলে জানান পরিস্থিতি অনেক অবনতির দিকে গেছে। এখন প্রায়শই আশিক ঐশীদের বাসায় যায়, থাকে। ঔশী ইতিমধ্যে তার স্বামী নয়ন কে তালাক নামা পাঠিয়েছে। ঔশী এর বাবা আশিক এর পক্ষ নিয়ে রোজার বাবা/ভাইদের সাথে অত্যন্ত খারাপ/অস্রাব্য গালাগালি করেছে ইত্যাদি ইত্যাদি। বর্তমানে আশিক চাচ্ছে সেনাবাহিনী চাকুরী হতে তার স্বীয় প্রত্যাশা অনুযায়ী অব্যহতি পাবার পর তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ঔশী কে বিয়ে করবে। আশিক এর স্ত্রী রোজা কে আমি শুরু হতেই উপদেশ দিয়ে ছিলাম CO কাছে সমগ্র বিষয়াবলী সম্পূর্ণভাবে জানাতে। কিন্তু সে অতীব পতিভক্ত স্ত্রী। এত অপরাধের পরও সে এবং তার বাবা মা প্রত্যাশা ছিলো যে আশিক একদিন সঠিক পথে ফিরে আসবে। কিন্তু জানালে তো সংসার ভেঙ্গেই যাবে আর জোড়া লাগবে না। রোজার সরলতার সুযোগ আশিক ভালভাবে কাজে লাগিয়ে ছিলো। সে সময় সেনাবাহিনীর কাছে আমার প্রত্যাশা ছিলোঃ
১। মেজর আশিকের স্বীয় পরিকল্পিত চাকুরী অব্যহতি বিষয়টি স্থগিত রেখে অন্য যে কোন ব্যবস্থায় তাকে শায়েস্তা করা।
২। মেজর আশিফ কে Track করত আজিমপুর ঔশিনদের বাসা হতে তাকে Red Handed catch করত সেখান হতে ঐশী ও তার বাবা জাফর কাওয়ালী কে Custody তে নিয়ে একত্রে Interrogate মাধ্যমে চরম ভিতী স্থাপন করা অথবা ভিন্ন কোন পন্থা যা দ্বারা সেনা বাহিনীর প্রতি তাদের চরম ভীতি স্থাপিত হয়।
৩। মেজর আশিক কে তার স্ত্রীর/সন্তানদের নিয়ে প্রকৃত সংসার করণ নিশ্চিত করা।
৪। সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি রক্ষার্থে যে কোন পদক্ষেপ নেয়া।
৫। অসহায়/নিরাপরাধ মেয়ে রোজা ও তার ০২টি নিষ্পাপ শিশু সন্তান কে রক্ষা করা।
৬। ৫/৬টি পরিবার কে দুশ্চিন্তা মুক্ত করা ও তাদের সকলের মান সম্মান রক্ষা করা।
৭। মেজর আশিক বাংলাদেশ সেনা বাহিনী সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান দ্বারা ভুল পথে ধাবিত হচ্ছে বিধায় তার বিরুদ্ধে কঠোর পন্থায় ব্যবস্থা নেয়া যাতে কুরুচিপূর্ণ চিন্তা/চেতনা সম্পূর্ণভাবে দূরীভূত হয়।
এটুকু বলার পর আংকেলের গলা ধরা আসছিলো। তার চোখ ভেঁজা ভেঁজা অবস্থা। পরবর্তী ঘটনা জানার জন্য আমি কিছুক্ষণ অপেক্ষা করব। তার আগে আংকেল কে একটা সিগারেট খাওয়াতে হবে।
চলবে---------।
বি:দ্র: গল্পের চরিত্র সম্পূর্ণ কাল্পনিক। এর সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই।
স্কেচঃ শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া)
উৎসর্গঃ শ্রদ্ধেয় ব্লগার কানিজ রিনা আপা ও শ্রদেয় ব্লগার খাইরুল আহসান স্যার।
প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুণ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৫১