দেখলে মনে হতে পারে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ থেকে আগত কোন শরনার্থী শিবির।
০২্।
হেতারা হয়ত স্বপ্ন দেখে বাংলা ছবির ছাকিব খানের মত কোন রাজপুত এসে কেউ ভালোবেসে বউ করবে। কিন্তু বাস্তবে ঘটে তার উল্টোটা। অনেক সময় তাদের কে বখাটে যুবকেরা বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অনৈতিক কাজ করে চম্পট দেয়। অথবা তারা বিভিন্ন যৌন হয়রানির শিকার কিংবা তাদের অপমৃত্যুর খবর পত্রিকার পাতায় পাওয়া যায়।
০৩।
মশার সাথে তাদের অলিখিত চুক্তি হয়েছে- পরস্পর মিলে মিশে থাকবো। তা না হলে তাদের পক্ষে বছরের পর বছর এভাবে জীবন ধারণ করা অসম্ভব।
০৪।
বসত ভিটা পাশাপাশি অবস্থান করলেও তারা দুই মেরুর বাসিন্দা। তাদের জাত আলাদা, সমাজ আলাদা, পরিবেশ ও মান মর্যাদা এলাদা।
০৫।
জেল খানায় যেমন থালা বাটি সম্ভল তেমনি গরীবের সম্ভল হলো বাঁশ। কোথায় বাঁশের ভূমিকা নেই, একাত্তরে পাক হানাদের বিরুদ্ধে তারা বাঁশ হাতে নিয়েছিল। মরণের পর বাঁশ দিয়ে কবর দেয়া হবে। এমন কিং আজীবন সমাজে তারা বাঁশ খেতেই থাকবে।
০৬।
বস্তিবাসীর আগত শিশুরা খিদের চোটে যখন চোঁ-চোঁ করে তখন তাদের মায়েরা পাশের সু-উচ্চ দালান দেখিয়ে তাদের খিদে নিবারণ করার চেষ্টা করেন।
০৭।
সাকিব-মাশরাফি কিংবা ফুটবলে মামুনুল হওয়ার স্বপ্ন তারা নাও দেখতে পারে। কিন্তু মারবেল কিংবা ডাংগুলি খেলতে তাদের কোন মানা নেই।
০৮।
জীবনের তাগিদে এভাবেই ছুটে বেড়ায় এক যায়গা থেকে আরেক জায়গায়।
০৯।
বামন হয়ে চাঁদে হাত বাড়ানোর জন্য তাদের ঘরে টিনের চাল ফুটা রাখতে হয়।
১০।
তারা মেসি হওয়ার জন্য আফগানিস্তানের যুদ্ধ পীড়িত শিশু আ: রহমানের মত প্লাস্টিক দিয়ে জার্সি বানিয়ে গায়ে দেয়নি কিংবা মেসুত ওজিল বা বাস্তিয়ান সোয়ানস্টাইনগারের সার্পেোটার হওয়ার স্বপ্নে বিভোড় হয়ে জার্মানীর জার্সি গায়ে জড়ায়নি। আর গায়ে দিলেও তাদের প্রতি নজর জার্মানীদের পড়বে না। কারণ তাদের নিয়ে মাতা-মাতি করার রুচিবোধ এই দেশের মানুষের তেমন একটা নেই। জার্সিটা হয়ত কোথায় কুড়িয়ে পেয়েছে। হয়ত সোনার চামুচ মুখে দিয়ে জন্মানো কোন শিশু ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে। ভাগ্যের ফেরে সেখান থেকে হাত বদল হয়ে তার গায়ে উঠেছে।
লোকেশন: ছবিগুলি তুলা হয়েছে রাজধানীর অভিজাত এলাকা বলে খ্যাত উত্তরার ১০ নং সেক্টরের ২২নং রোডের পূর্ব পাশে এবং আব্দুল্লাহ্পুর-সাভার মহাসড়কের পশ্চিম পাশে অবস্থিত বাঙালি বস্তি থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:২৭