গুগলের সিইও হয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ৪৩ বছর বয়সী সুন্দর পিচাই। [ঠিক আমার বয়সী বলা যায়। এ কারণেই আমার একটি ব্যক্তিগত সাফল্য তত্ত্ব হলো: যার হয় তার ২৮য়েই প্রমাণ পাওয়া যায়

“একদিন এক রেঁস্তোরায় বসে কাপে চুমুক দিচ্ছি। হঠাৎ, এক তেলাপোকা উড়ে এসে এক রমনীর গায়ে এসে বসল।
রমনী ভয়ে চিৎকার শুরু করল।
ভয়ে সাদা মুখ আর চিৎকারের ক্যানক্যানানির সাথে চলল রমনীর লাফালাফি, দু’হাত দিয়ে বেচারা তেলাপোকাটাকে শরীর থেকে ফেলে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চলতে থাকল।
রমনীর প্রতিক্রিয়া পুরো রেঁস্তোরায় ফ্লুর মতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল। আর সে রমনীর টেবিলের অন্যান্য মহিলারা যেন আরো বেশি খেপে উঠল।
রমনী শেষমেষ তেলাপোকাটাকে ঝেড়ে ফেলতে পারলেন… … …. কিন্তু সেটি গিয়ে পড়ল তার টেবিলেরই আরেক রমনীর গায়ে।
তাহলে … … …. এবার সেই রমনীর যাত্রা পালা শুরু হ’ল।
ওয়েটার সব দেখে তাদের উদ্ধারে দৌড়ে এলো।
তেলাপোকাটা এর ওর কাছ থেকে ঝাড়া খেয়ে একসময় ওয়েটারের গায়ে এস বসল।
ওয়েটার নির্লিপ্ত হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল, চুপচাপ দাঁড়িয়ে তার শার্টে নড়াচড়া করা তেলাপোকার আচরণ লক্ষ্য করতে থাকল।
যখন সে তেলাপোকার আচরণের বিষয়ে নিশ্চিত হলো, সে তার আঙুল দিয়ে তেলাপোকাটাকে চ্যাংদোলা করে রেঁস্তোরার বাইরে ছুড়ে ফেলল।
কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে মজাটা দেখছিলাম, আমার মাথার অ্যান্টেনায় কিছু চিন্তা এসে ভর করল, আমি ভাবলাম, আচ্ছা, তেলাপোকাটা কি … … …
রমনীগণের ঐতিহাসিক আচরণের জন্য দায়ী ছিল?
যদি তাই হয়, তাহলে ওয়েটারের আচরণে কোনো পরিবর্তন হলো না কেন?
ওয়েটার পুরো বিষয়টি যেন অতি নিখুঁতভাবে মোকাবিলা করল, কোনো বিশৃঙ্খলা ছাড়াই।
আসলে তেলাপোকাটা তো দায়ী নয়, দায়ী হলো রমনীগণের অক্ষমতা, তেলাপোকার ঘটানো বিশৃঙ্খলা মোকাবেলার অক্ষমতাই রমনীদেরকে বিশৃঙ্খল করেছিল।
আমি বুঝলাম, আমার বাবার চিল্লাচিল্লি কিংবা আমার বস বা বউয়ের চিল্লাচিল্লি আসলে আমাকে বিরক্ত করে না, কিন্তু তাদের চিল্লাচিল্লির কারণে তৈরি সেসব বিরক্তি মোকাবেলার অক্ষমতাই আসল কারণ।
রাস্তার ট্র্যফিক জ্যাম আমাকে বিরক্ত করে না, কিন্তু ট্র্যফিক জ্যামের কারণে সৃষ্ট বিরক্তি মোকাবেলার অক্ষমতাই মুল কারণ।
সমস্যার চেয়ে, তার প্রতি আমার প্রতিক্রিয়াই জীবনে সমস্যা সৃষ্টি করে।
এই গল্প থেকে যা শিখলাম:
আমি বুঝলাম, জীবনে প্রতিক্রিয়া দেখানো ঠিক কাজ না।
সেই মহিলারা প্রতিক্রিয়া দেখচ্ছিলেন, অথচ ওয়েটার সাড়া দিয়েছিলেন।
প্রতিক্রিয়া আসলে সাহজিক, অথচ সাড়া দেওয়া আসলে চিন্তনের ফসল যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সঠিক উপায়। আর তাই, প্রতিক্রিয়া দেখানোর পরিবর্তে সাড়া দেওয়ার মাধ্যমেই রাগ, দুঃশ্চিন্তা, মানসিক চাপ বা তাড়াহুড়োর মাঝেও পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যায়।
জীবনকে বোঝার এক সুন্দর উপায়।”
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:৫৫