সুখের জন্যে ,
একটি শান্ত নদী চেয়েছিলাম ।
এবেলা -ওবেলা জোয়ার- ভাঁটায়
চলবে ফিরবে পোষ মেনে নেওয়া স্রোত ।
আমি সে নদীতে কখনও কোন
প্লাবন প্রত্যাশা করিনি ।
সুখের জন্যে-
পাহাড় চূডায় একটি ঘর চেয়েছিলাম
কেটে কেটে সাতশ সাতটি সিঁড়ির শেষ ধাপে।
বিশুদ্ধ বাতাস ছাড়া আর কারো প্রবেশ নিষেধ
সেখানে, অকষ্মাৎ মেঘ এসে বিঘ্ন ঘটালে
পেড়ে ফেলবার ব্যবস্থা রাখা হবে ।
সুখের জন্যে-
উজ্জ্বলতম শহরের প্রান্তে
নিরুপদ্রব প্রাচীর ঘেরা একটি অট্টালিকা
বানিয়ে নিতে চেয়েছিলাম, সমুদয় নাগরিক
সুবিধাসমূহ গমগম করবে সেখানে ।
কেবল ধুলো, ভিক্ষুক , জঞ্জাল ,
মানুষ কিংবা কোলাহল,
প্রতিরোধের মুখে ফিরে যাবে।
আমি সুখ চাই বলে,
চতুর্দিক খুঁজে খুঁজে কিনে এনেছিলাম
সাতশ সাতটি বিমূর্ত সাদা পায়রা।
সাজিয়েছিলাম কোনে কোনে-
যেন চোখ মেললেই দেখা যায়
উপদ্রবহীন সুখের ছড়াছড়ি।
আমি সুখ চাই বলে,
পথ খুঁজে খুঁজে পৌঁছাতে চেয়েছিলাম তীর্থে ।
ফুল-পাতা আর পবিত্র চন্দন গন্ধ মেখে
ধ্যানস্থ হতে চেয়েছিলাম-
যেখানে মুখে বরাভয় হাসি নিয়ে
অষ্টপ্রহর অস্ত্র হাতে রক্ষাকর্তা হয়ে-
দাঁড়িয়ে আছেন দেবতা ।
একদিন মধ্যরাতে অন্তর্গত ঝড় নেমে এলে
বুকের বাঁ-পাশের দরজাটা
দমকা হাওয়ায় খুলে যেতে দেখি, ভিতরে
দুকূল প্লাবিত নদীর স্রোতে ভেসে যাচ্ছে-পাহাড়,
পাহাড়ের উজ্জ্বলতম সবগুলো পথ
মানুষের তীর্থে গিয়ে মিশেছে ।
কোথাও কোন প্রাচীর নেই -
রাশি রাশি সুখের মত
সাদা পায়রা মূর্ত হয়ে উড়ে বেড়াচ্ছে।
এরপর থেকে আর কোথাও যাইনা আমি -
সুখের জন্যে -
পাহাড় , নদী কিংবা দেবালয়
দুহাতে জড়ো করিনা কিছুই ,
কেবল, হঠাৎ খুলে যাওয়া
দরজাটা আমি হাট করে খোলাই রেখেছি ।
========================
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:৩২