সেই ১৬-১৭ বছর আগের কথা, ঈদের সালাত শেষ করে এসেই, আব্বু একশ টাকা ঈদি দিতেন। এরপর থেকেই আমার ঈদ হিসাবের খাতা খোলা হত, কোথায় কখন যাওয়া হবে, কে ঈদি দেবে, ওখানে উনাদের গেস্ট থাকলে তাকেও সালাম করে ঈদি নেয়া হত।
আমার ঈদি কালেকশনের প্রধান সোর্স ছিল আমার বড় মামার বাসা। কারন সেখানে দুপুরে আমার নানা বাড়ির সমস্ত আত্মিয় স্বজন একত্র হত। আমার ঈদির ৮০% সেখান থেকেই পেতাম। আমার এক দুলাভাই প্রায় সময় ৫০০ টাকা করে ঈদি দিতেন, তাই আমরা সব কাজিনরা মিলে অপেক্ষা করতাম কখন উনি আসবেন।
একবার আমার কাজিনের এক আত্মিয়ের কাছ থেকে ২০০ টাকা পাওয়ার পর জিজ্ঞেস করলাম কে দিল? উত্তর এল অমুক (আমার বড় মামীর এক ভাই, ভাল করে চিনিই না)। তখনই আমি সেই মামাকে খোজা শুরু করলাম, আমার কাজিন কে বলতে সে চিনিয়ে দেবার পর কাছে গিয়ে সালাম করে একটা দেঁতো হাসি দিয়ে বললাম ঈদ মোবারক, উনি হাসি মুখেই ২০০ টাকা দিলেন।
সেলামি নিয়ে এক মজার ঘটনা বলি, একবার আমার এক কাজিন ঈদে নতুন ড্রেস পড়ছিল, সবে পাজামা পড়ে স্যন্ডো গেঞ্জিতে মাথা গলাচ্ছিল, এমন সময় সদর দরজায় শব্দ পেলেন কেও এসেছে। তো, যিনি এসেছেন তার গলার আওয়াজ পেয়েই সেই অর্ধেক স্যন্ডো গেঞ্জি পড়া অবস্থাতেই উনাকে সালাম করতে দৌড় দিল!! ফিরে আসার পর আসল ঘটনা জানা গেল। কাজিনের সেই আত্মীয় নাকি সবাইকে ১০০০ টাকা করে ঈদি দেন। উনি যদি তাড়াতাড়ি চলে যান, তাই তাকে তাড়াতাড়ি সালাম করে ঈদি নিয়ে নেয়া হল।
ইদানিং গত কয়েক ঈদ ধরে আমি প্রায় কোন ঈদি পাচ্ছি না। পিচ্চি ভাগনে ভাতিজা গুলোকে এখন ঈদি দিতে হয়!! তবে দিতেও অন্যরকম আনন্দ। তারা যখন হাসি মুখে ঈদি নেয় তখন তাদের মধ্যে আমি সেই ১৭-১৮ বছর আগের আমাকে খুঁজে পাই।
সামুর সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা। “ঈদ মোবারক”