আমাদের গ্রামের এক প্রতিবেশীর কথা মনে পড়লো। সে একজন ভালো ও দক্ষ ঝালাইকারী( Welder) । সিঙ্গাপুরের কোন এক জাহাজ নির্মাতা কোম্পানীতে কাজ করতো। তার খুব সুনাম ছিল সেখানে। বেতন যা বেতন তা বেশ আকর্ষণীয় বলা যেতে পারে। প্রবাসী বাংলাদেশীরা তাকে নিয়ে রীতিমতো হিংসা করতো। সেই ছেলে আমার প্রতিবেশী। এটা তো বেশ গর্বের ব্যাপার। তবে সম্প্রতি সে দেশে চলে এসেছে চিরতরে। তার চাকরি নট। কোম্পানীর নাকি আর লোক দরকার নেই।
অনেক দিন বিদেশে থাকার পর আমি অবশেষে দেশে ফিরে এলাম । দেশে আসার পর একবারও ওর সাথে দেখা হয়নি। কথা যে বলবো তারও কোন উপায় নেই। তার ফোন নম্বর নাই। যাই হোক কোন উপায়ে তার ফোন নম্বর যোগাড় করতে পারলাম এবং অনেক আগ্রহ নিয়ে তাকে ফোন করলাম।
নানা বিষয়ে খবর নেবার পর আমার স্বভাব সুলভ প্রশ্নটি করলাম।
- বাড়িতে গরু আছে কয়টা?
- কোন গরু নেই।
- গরু নেই কেন?
- এতো ঝামেলা করতে ভালো লাগে না।
- মুরগী নেই? মুরগী আছে কয়টা?
- মুরগীও নেই।
বলিস কি! গরু নেই। আবার মুরগীও নেই । এইটা কোন কথা। গ্রামের বাড়িঘর। সেখানে গরু থাকবে। হাঁস থাকবে। মুরগী থাকবে। ছাগল থাকবে। থাকবে পুকুর। পুকুর ভর্তি নানা জাতের মাছ। পানিতে ভেসে বেড়াবে হংসমিথুন।
সে বলল- এই সব ঝামেলা করতে ভালো লাগে না।
মানুষের হাতে কয়টা টাকা হবার পরই তারা শিকড়কে ভুলে যেতে বসেছে। তারা জানে না, কৃষিই হচ্ছে পৃথিবীর সব চেয়ে পুরাতন শিল্প। এই শিল্পরে আমরা সবাই শিল্পী। আমরা কেন কৃষিকে দূরে রাখবো।
সামান্য কৃষিকাজ করলে প্রতিদিনের বাজারের লিস্টটা দিনে দিনে ছোট হয়ে আসতে পারে। এই সামান্য বিষয়টা আমাদের বুঝে আসেনা।
আফসোস!