২০১২ সালে বাংলা একাডেমী পদক পেতে যাচ্ছেন কথাসাহিত্যিক হরিশঙ্কর জলদাস, অভিনন্দন তাকে !!
বর্তমান আধুনিক সময়ে এসে সাহিত্যে নিম্ন এবং গ্রামের মানুষদের জীবনযাত্রা এবং মনমানসিকতা চিন্তাভাভবা নিয়ে যারা লিখা লিখি করেন তাদের মধ্যে হরিশঙ্কর জলদাস অন্যতম। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এর লিখার ছায়া মিল আমি হরিশঙ্করের লিখার মাঝে দেখতে পাই। যদিও মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এর সময়কাল এবং হরিশঙ্করের সাহিত্ত্যের সময়কাল সম্পুর্ন আলাদা। কিন্তু একটা আধুনিক সময়ে এসেও হরিশঙ্করের লিখা এখনো জেলে জীবন কিংবা নিম্ন গ্রামের মানুষদের আবহমান সংগ্রাম এবং বেচে থাকার আকুলতা স্পষ্ট করে আমাদের সামনে ফুটিয়ে তোলে। আমি তার "জলপুত্র" উপন্যাসটি পড়েছি। 'জলপুত্র' উপন্যাসের স্থানিক পটভূমি চট্টগ্রামের উত্তর পতেঙ্গা গ্রামের জেলেপল্লীর উপর ছায়াপাত করে তিনি রচনা করেছিলেন এই "জলপুত্র"।
সমুদ্রপাড়ের জেলেদের নিয়ে সমুদ্রভিত্তিক উপন্যাস হলো জলপুত্র। জেলে জীবননির্ভর সমুদ্রভিত্তিক উপন্যাস বাংলা সাহিত্যে আর নেই এ তথ্য জানার পর হরিশঙ্কর সাহসী হয়ে এই উপন্যাস লিখেছিলো। উপন্যাসটি লিখার শুরুর সময় উৎসাহদাতারা তাকে বলেছিলো, ৫১ বছর আগে অদ্বৈত মল্লবর্মণ 'তিতাস একটি নদীর নাম' লিখেছিলেন। তিনিও জলপুত্র ছিলেন, আজ আরেকজন জলদাস 'জলপুত্র' লিখলে ক্ষতি কী? আমরা আরেকজন জেলের কাছে কৈবর্ত জীবনকথা শুনতে চাই। আমরা আজ হরিশঙ্কর জলদাস এর কাছ থেকে পেয়েছি "জলপুত্র"। এছাড়াও ওনার আরো বেশ কিছু লিখার মধ্যে অন্যতম বইগুলো হলো - দহনকাল, জলদাসীর গল্প, মহীথর, রামগোলাম।
যারা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এর পদ্মা নদীর মাঝি পড়েছেন তারা হরিশঙ্কর জলদাস এর উপরের উল্লেখিত বইগুলো পড়ে দেখতে পারেন। তার লেখালেখি ও গবেষণার বিষয় জেলেসম্প্রদায়ের জীবন। তাঁর লেখায় উঠে আসে ধীবরশ্রেণীর আনন্দ-কান্না, জন্ম ও মৃত্যুর কথা।
আবারো ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন হরিশংকর জলদাসকে !!